চার মাস পরও জোড়া খুনের তদন্তের কুল-কিনারা নেই
চার মাস পার হলেও রহস্যের অন্তরালেই রয়েছে রাজধানীর পল্লবীতে ঘটে যাওয়া জোড়া খুনের ঘটনাটি। ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডেসকো) প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী ও মামার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামিরা রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। প্রকৃত আসামিদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত সন্দেহভাজন এক আসামি আটক হলেও এখন জামিনে আছেন বলেও জানা গেছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, চার মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো কোনো হত্যাকারী গ্রেফতার হননি। হুমকিদাতাদেরও খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ। মামলার এজাহারভুক্ত সন্দেহভাজন আসামি আশরাফুল আলম চিশতি শাহীন আটক হলেও এখন জামিনে রয়েছেন বলেও জানান তিনি। এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি হয়েছে বলে আমাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কিন্তু এখনো কোনো আসামি গ্রেফতার হননি। জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, মামলার অগ্রগতি আছে বলেও গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কি অগ্রগতি সেটা বলেনি।
গত ১৩ মে দুপুর আড়াইটার দিকে বাসায় ঢুকে ডেসকো’র প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সুইটি আক্তার (২৫) ও তার মামা আমিনুল ইসলামকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তার ছেলে সাজিদ বিন জাহিদ সাদ (৫) আহত হয়। মিরপুরের পল্লবীর ২০ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর ‘ক্রিস্টাল ডি আমিন’ নামে একটি বাড়ির ৬ষ্ঠ তলায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ওইদিন সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বাড়ির দারোয়ান আব্দুল খালেক এবং আশরাফুল আলম চিশতি শাহীনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পল্লবী থানা পুলিশ। পরে শাহীনকে রিমান্ডে নিয়েও কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি।
এ ঘটনায় জাহিদুল বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তার স্ত্রী সুইটির ব্যবসায়িক অংশীদার আশরাফুল আলম চিশতি শাহীন, সন্ত্রাসী বিকাশ-প্রকাশ গ্রুপ ও জিসানসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পল্লবী থানা পুলিশ জানায়, এ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত সন্দেহভাজন আসামি আশরাফুল আলম চিশতিকে রিমান্ডে নেওয়া হলেও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। প্রায় দুই মাস মামলাটির তদন্ত করে পল্লবী থানা পুলিশ। তবে কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পরে পল্লবী থানা পুলিশ মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। জানা গেছে, ‘ডেসকো’র চাকরির পাশাপাশি ‘ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার’ নামে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী একটি অংশীদারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের। তিনি এ প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টরের পদে ছিলেন।
এর মধ্যে আরো দু্ইজন অংশীদার ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন তার স্ত্রী সুইটি ইসলাম। ম্যানেজিং ডিরেক্টরের (এমডি) পদে ছিলেন আশরাফুল আলম চিশতি শাহীন। এ বিষয়ে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন এজাহারভুক্ত আসামি আশরাফুল আলম চিশতি শাহীনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। গত ১৩ মে দুপরে প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের ফোন পাই। মুঠোফোনের তিনি আমাকে বলেন, ‘বন্ধু, তুমি তাড়াতাড়ি আমার বাসায় আসো, সব শেষ হয়ে গেছে’। তখন বাসায় গিয়ে দেখি, তার স্ত্রী ও মামা মারা গেছেন।
তারপর আমাকে সন্দেহভাজন হিসেবে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যবসায়ের শেয়ার ভাগাভাগির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু সমস্যার কারণে আমরা ব্যবসায়ের অংশীদারিত্ব ভাগাভাগির কথা বলি। এ বিষয়ে গত ১২ মে রাত ১১টা পর্যন্ত আমাদের মিটিং চলে। তবে মুখের কথায় তো শেয়ার ভাগাভাগি করা যায় না। এর জন্য সময় প্রয়োজন। কিন্তু এর পরদিনই এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
হত্যা মামলাটির তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তদন্তের দায়িত্বে থাকা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) সাইফুল্লাহ নাসির জানান, হত্যাকাণ্ডের দিন এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে দুইজনকে আটক করা হয়েছিলো। এছাড়া আর কোনো আসামি গ্রেফতার হননি। তিনি বলেন, তবে মামলার তদন্তের কাজ চলছে। আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি যার ভিত্তিতে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। আশা করছি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে ধরতে সক্ষম হবো।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রাজধানীতে আনসার ব্যাটালিয়ন মোতায়েন
ঢাকা মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৬ প্লাটুন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েনবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ২৩
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থী, মহিলা আওয়ামী লীগবিস্তারিত পড়ুন