চালের বাড়তি দাম ভোগাবে রোজাদারদের
পবিত্র রমজান উপলক্ষে বেড়েই চলছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এ মাসে চাহিদা বাড়ায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। ফলে সিয়াম সাধনার এ মাসে ভোগান্তিতে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ।
সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির সত্যতা পাওয়া গেছে। বিশেষ করে অতি প্রয়োজনীয় চালের দাম কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। বাজার বিশ্লেষকদের আশঙ্কা ধারাবাহিক চালের দাম বাড়ায় এবার সাধারণ রোজাদারদের জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দেখা দেবে। চালের ঊর্ধ্বমুখী মূল্য রোজাদারদের বেশি ভোগাবে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে নাজির বা মিনিকেট (সাধারণ মানের) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায়, ভালো মানের মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৬ টাকায় আর মাঝারি মানের মিনিকেট প্রতি কেজি ৪৬-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইজাম বা লতা (সাধারণ মানের) প্রতি কেজি ৪৬-৪৮ টাকা, ভালো মানের প্রতি কেজি ৪৮-৫০ এবং মোটা চাল প্রতি কেজি ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে চিত্র এমনই। এর আগে তিন দফা বেড়েছিল চালের দাম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে সবাই চালের দাম নিয়ে বেকায়দায় আছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, রমজান উপলক্ষে আরেক দফা বাড়তে পারে চালের দাম। ফলে নিম্নবিত্তের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে পারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি।
একদিকে পেটের ক্ষুধা অন্যদিকে রমজানের সিয়াম সাধনা নিয়ে বেকায়দায় পড়বেন সাধারণ রোজদাররা।
মিরপুর-১১ নম্বর কাঁচাবাজারের চাল ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। এর মানে শিগগিরই খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে।
তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে ২৫=৩০ টাকা। মিনিকেট ৫০ কেজি বস্তা দাম দুই হাজার ৫৮০ টাকা, বিআর আঠাশ দুই হাজার ৩৩০ থেকে দুই হাজার ৩৫০ টাকা, পাইজাম দুই হাজার ৩৩০ টাকা এবং গুটি স্বর্ণা দুই হাজার ২০০ টাকায় কেনা হয়েছে।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে রমজানে পণ্যমূল্য বাড়ালে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়েছিল। প্রতি বছরের মতো এবারও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। বৈঠকে ধান-চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকার তথ্য জানিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। এরপরও চালের দাম বাড়ানো ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও ও রংপুর অঞ্চলে চলমান গম ও বোরো সংগ্রহের বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা ও চালকল-মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, দেশে ধান-চালের সংকট নেই। কিন্তু একশ্রেণির ব্যবসায়ী মজুদদার এবং সরকারের বিরুদ্ধবাদী রাজনৈতিক দলের অনুসারী ব্যবসায়ীর যোগসাজশে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ১০ বছরে দেশে চালের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০০৬ সালে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের গড় দাম ছিল ২৭ টাকা ৯৫ পয়সা। ২০১৬ সালে ওই চালের ৪৮ টাকা ৩৪ পয়সা। ২০০৬ সালে নাজিরশাইল চালের দাম ছিল ২৫ টাকা ৫৪ পয়সা। ২০১৬ সালে ওই চালের দাম ৫৫ টাকা ৭৮ পয়সা। ২০০৬ সালে পাইজাম চালের দাম ছিল প্রতি কেজি ২৩ টাকা। গত বছর ওই চালের দাম দাঁড়ায় ৪০ টাকা ৩৭ পয়সায়। ২০০৬ সালে পারিজা/স্বর্ণার দাম ছিল ১৯ টাকা ২৫ পয়সা। গত বছর ওই চালের দাম দাঁড়ায় ৩৭ টাকা ১৯ পয়সায়। ২০০৬ সালে বিআর এগারো/আটের দাম ছিল ১৮ টাকা ২৫ পয়সা। গত বছর ওই চালের দাম দাঁড়ায় ৩৫ টাকা ৪১ পয়সায়।
ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, রমজান উপলক্ষে চালের দাম বাড়ানো কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। চালের দাম বাড়ানোর কোনো কারণ এখন নেই।
তিনি বলেন, দিন দিন নিম্নবিত্তের মানুষ পরিবার চালাতে হাঁপিয়ে উঠছেন। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর নজরদারি দরকার। যারা বাজারে অস্বাভাবিক দাম বাড়ায়, তাদের ব্যাপারে সরকার চাইলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। প্রয়োজনে সরকার বাজার মনিটরিং করতে পারে। তাহলে আসল তথ্য জানা যাবে। জাগো নিউজ
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূস: নির্বিঘ্নে সব জায়গায় পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “এবার দুর্গাপূজারবিস্তারিত পড়ুন
সোমবারের বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার
এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাস করেনবিস্তারিত পড়ুন
১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৪ কোটি ডলার
এ মাসের প্রথম ১৪ দিনে এসেছে ১৬৪ কোটি ৬৭ লাখবিস্তারিত পড়ুন