চুয়াডাঙ্গায় ওষুধ ব্যবহারে গরু মোটাতাজাকরণের অভিযোগ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : ঈদুল আজহা উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রায় ২ লাখ পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে অতিরিক্ত লোভের বশবর্তী হয়ে খামারিরা ভারত থেকে আনা বিষাক্ত ওষুধ খাইয়ে এসব গরু মোটাতাজা করছেন। তবে ওষুধ খাওয়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন খামারিরা।
চালের খুদ আর ভুসি খাইয়ে গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে বলে জানান চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের খামারী ওবাইদুর।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র গ্রামের গ্রামের জুব্বার মালিতার ছেলে খামারী কাইজার মালিতা বলেন, কৃষি ব্যাংক থেকে তিনি ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ২টি গরু কিনে মোটাতাজা করছেন। তিনি গরু দুটিকে গমের চোকল, ভুট্টার আটা, কাঁচা ঘাস খাওয়াচ্ছেন। কোন রকম ভ্যাক্সিন তিনি ব্যবহার করছেন না বলে জানান।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.শ্যামল কুমার পাল বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে খামারিরা পশু মোটাতাজা করছেন। এজন্য খামারিরা কোন প্রকার ভ্যাকসিন বা কোন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করছে বলে তিনি দাবি করেন।
তবে বিজিবি-৬ ব্যাটিলিয়নের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করার শর্তে বলেন, প্রত্যেকদিনই আমরা ভারত থেকে আসা বিষাক্ত মোটাতাজাকরণ ওষুধ জব্দ করছি। কিন্তু সব ওষুধই জব্দ করা সম্ভব হয় না। আর সেগুলো খামরিরা গরু মোটাতাজাকরণে ব্যবহার করে থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন খামারি স্বীকার করে বলেন, যখন ঘাস বা বিছালি খেতে না চায় তখন গরুকে ওষুধ খাওয়ানো হয়।
এদিকে ঈদের আগে ভারতীয় গরু প্রবেশ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারিরা। ভারতীয় গরু আসলে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়তে পারেন বলে আশংকা করছেন তারা।
জানা গেছে, সীমান্ত ঘেঁষা চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রায় প্রত্যেকদিন রাতে ভারত থেকে তাঁরকাটা গলিয়ে গরু আসে। সীমান্ত গলিয়ে অবৈধ গরু ব্যবসায়ীরা কোনভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গবাদি পশু ঢুকিয়ে দিতে পারলে এবং কাস্টম ট্যাক্স ৫০০ টাকা দিয়ে তা এদেশে বৈধ হয়ে যায়। ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা ট্যাক্স দেওয়া গরুগুলো জড়ো করা হয় নিকটস্থ বিজিবি বিওপি ক্যাম্পগুলোতে। সেখান থেকে গরুপ্রতি নির্ধারিত হারে টাকা ভারতের বিএসএফ সদস্যদের পরিশোধ করার পর ওগুলো দেশের বিভিন্ন হাটে চলে যায়। সেখানে ইচ্ছেমত দরে সেগুলো বিক্রি করা হয়। এরফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশিয় খামারিরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র গ্রামের খামারি আব্দুল মালেক বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রতিটি ৯১ হাজার টাকা দরে ৮টি ভারতীয় গরু কিনেছেন। গরু কিনতে তার ব্যয় হয়েছে ৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। ১১ থেকে ১২ লাখ টাকায় গরু বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
একই গ্রামের মরহুম বাশি মণ্ডলের ছেলে খামারি সমজের আলী বলেন, কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিনি ৪টি গরু ২ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছেন। খাবারসহ অন্যান্য খরচ বাদে গরুগুলো ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করলে তিনি লাভবান হবেন। তবে ভারত থেকে গরু আসলে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান। এ জন্য তিনি ঈদের আগে ভারত থেকে গরু না আসতে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
ভারত সীমান্ত গলিয়ে গরু আসতে না দেওয়ার বিষয়ে খামারিদের আশ্বাস দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের মোহাম্মদ আমির মজিদ। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক সীমান্ত দিয়ে গরু অথবা গবাদি পশু যেনো ঢুকতে না পারে সেই দায়িত্ব পালন করা হবে। খামারিরা যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে কোন ব্যত্যয় ঘটবে না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
টানা ৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, হিট অ্যালার্ট জারি
টানা ৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বইছে চুয়াডাঙ্গায়। তাপদাহের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ল কৃষকের ছাগল ও ভুট্টা
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় অগ্নিকাণ্ডে আব্দুল আজিজ (৫০) নামে একবিস্তারিত পড়ুন
চুয়াডাঙ্গার সীমান্তে কোটি টাকার স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার সুলতানপুর বিজিবি টহলদল সীমান্তের পাকারাস্তাবিস্তারিত পড়ুন