চেয়ারম্যান মেম্বারের পকেটে এখন প্রকল্পের টাকা!
সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাট। এ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়েছে শ্যালো মেশিন দিয়ে। শুধু কানাইঘাট নয়, মেশিন দিয়ে কাজ করানো হয়েছে বালাগঞ্জ উপজেলায়ও। ফলে শ্রমিকদের পরিবর্তে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয় কয়েকদিনেই।
প্রকল্পের টাকা গেছে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পকেটে। শুধু মেশিন দিয়ে নয়, প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্থানে অনিয়মেরও অভিযোগ উঠেছে। কোথাও শতভাগ কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন ইউনিয়নে কম শ্রমিক ও কম সময়ে কাজ করানো হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমিকের তালিকা দিতে না পারায় কাজ হয়নি অনেক ইউনিয়নে। আবার
সময়মতো কাজ না করাতে পারায় প্রকল্পের টাকা ফেরত দিতে হয়েছে। কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের লালারচক, মইনার পাহাড়, দাওয়াদার, খালোপারসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের পরিবর্তে শ্যালো মেশিন দিয়ে কাজ করান ইউপি চেয়ারম্যান মানিক মিয়া ও ইউপি সদস্যরা। শ্যালো মেশিন দিয়ে কাজ করাতে গিয়ে ৪০ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়নি তাদের। কয়েকজন শ্রমিক দিয়েই প্রকল্পের কাজ সময়ের আগেই শেষ করেন।
অবশ্য ইউপি চেয়ারম্যান মানিক মিয়া শ্রমিক সংকট থাকায় মেশিনের সাহায্যে প্রকল্পের কাজ করান বলে জানিয়েছেন। একই অভিযোগ বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়াজুর ইউনিয়নের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজে। সেখানে মাটি কাটার মেশিন ব্যবহার করা হয়। ফলে ৮৮ জন শ্রমিক বঞ্চিত হন ৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার কাজ থেকে।
অভিযোগ উঠে, গত মে মাসে ওই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. আছাব আলী রাজাপুর-খারমাপুর রাস্তার কালভার্টের সামনে থেকে আজির উদ্দিনের বাড়ি এবং খারমাপুর মসজিদ থেকে আজির উদ্দিনের বাড়ির সামনে পর্যন্ত ১ হাজার ৫শ’ মিটার কাজ করান। ৬৬ শ্রমিকের নাম থাকার পরও কাটার মিশিন দিয়ে একদিনেই মাটি ভরাট কাজ শেষ করেন। প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করতে নিজের
লোকদের শ্রমিক বানান। এ জন্য তিনি প্রকল্প কমিটির সদস্য ইউপি মেম্বার শিবাণী রানী দেবের কাছ থেকে কৌশলে স্বাক্ষর নিয়েছেন। ৩০-৪০ হাজার টাকার কাজ করিয়ে কৌশলে ভুয়া শ্রমিকদের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এ প্রসঙ্গে বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, ওই প্রকল্পের কাজ শ্রমিক দিয়ে না করিয়ে যদি মেশিনের মাধ্যমে করা হয় তাহলে তদন্তের মাধ্যমে প্রকল্প কমিটির লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেট সদর উপজেলায় ৪০টি প্রকল্পে প্রায় দেড় কোটি টাকার কাজ করেন শ্রমিকরা। উপজেলায় ৮৪ ভাগ কাজ হয়েছে বলে দাবি করে প্রকল্প কর্মকর্তা নিরোদ চন্দ্র দাস জানান, তার উপজেলায় কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে এ উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে তালিকা দিতে পারেননি ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। ফলে সেখানে কোনো কাজ হয়নি। খাদিমপাড়া ও মোগলগাঁও ইউনিয়নে আত্মীয়স্বজন দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগ উঠে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে। এসব ইউনিয়নে কম সময় ও কম শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয় বলে অভিযোগ করেন মোগলগাঁওয়ের আবদুল বাছিত নামের এক শ্রমিক।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় সময়ের ভেতরে কাজ করতে না পারায় ৬৬ হাজার টাকার একটি প্রকল্প ফেরত যায় বলে জানান প্রকল্প কর্মকর্তা বাদল কান্তি সরকার। তিনি জানান, তার উপজেলায় কোনো অনিয়ম হয়নি। ৯৯ ভাগ কাজ হয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানান, প্রতিটি প্রকল্পে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ হয়েছে। এ ছাড়া সিলেটের অন্যান্য উপজেলায় কম শ্রমিক ও কম দিনে প্রকল্পের কাজ করানোর অভিযোগ রয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সিলেটে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
দ্বিতীয় দফার বন্যায় সিলেট অঞ্চলে সাত লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি।বিস্তারিত পড়ুন
সিলেটে ৯ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফেঞ্চুগঞ্জে দুটি বগি লাইনচ্যুতবিস্তারিত পড়ুন
সিলেট বিভাগের বন্যা ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে
গত কয়েকদিনের অবিরত হালকা ও ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি এবং ভারতবিস্তারিত পড়ুন