‘ছদ্মবেশী’ শিবিরকর্মীকে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ‘ছদ্মবেশী’ এক শিবিরকর্মীকে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার দুপুরে আবু হোরায়রা নামে এক শিবিরকর্মীকে পিটিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
‘জবির ডিবেটিং সোসাইটিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানাতে তালবাহানা, নেপথ্যে শিবির’ শিরোনামে একটি খবর মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম তাৎক্ষণিক বিচারে বসেন এবং আবু হোরায়রাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এক পর্যায়ে তাকে পিটিয়ে কোতোয়ালী থানা পুলিশের কাছে ওই শিবিরকর্মীকে হস্তান্তর করা হয়।
আটক শিবিরকর্মী আবু হোরায়রা অর্থনীতি বিভাগের মার্স্টাসের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির প্রচার সম্পাদক ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ইকো ভার্সেটাইল স্টুডেন্ট সোসাইটি (ইভিএসএস) এর সভাপতি।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ছদ্মাবেশে শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ছবি টানাতে তালবাহানা করেন। ফেসবুক টাইমলাইনে শিবির সভাপতি আব্দুল জব্বারের বিভিন্ন পোস্ট তিনি শেয়ার করেছেন।
জানা গেছে, একই অভিযোগে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি এম ওমর ফারুক। তবে তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছেন অন্তত দুজন শিবিরকর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে বঙ্গবন্ধু ছবি থাকলেও তারা মৌলবাদী চেতনার ছত্রছায়ায় ফতোয়ার অজুহাতে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর নামে দীর্ঘদিন ধরে তালবাহানা করছেন। এছাড়া এ সংগঠনটির অফিস কক্ষ এবং নোটিশ বোর্ড বিভিন্ন সময় মৌলবাদী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পাসে শিবিরের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় আট বছরের বেশি সময় ধরে তারা ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। ফলে এ ধরনের সংগঠনগুলোকেই তাদের কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ব্যবহার করছে বলে বিভিন্ন মহলের ধারণা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবেটিং সোসাইটির এক সদস্য বলেন, “দেশের সব অফিসে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো রয়েছে। সেখানে ডিবেটিং সোসাইটির অফিসে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানাতে এতো তালবাহানা করা হচ্ছে। কিন্তু কেন? এ যেন বাংলাদেশের মধ্যে অন্য বাংলাদেশ।”
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় সোসাইটির অফিসে কৌশলে মৌলবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াস চালানো হয়। এমনকি ক্যাম্পাস বন্ধ থাকা অবস্থায়ও সেখানে তাদের সাংগঠনিক প্রোগ্রাম করে থাকে। মৌলবাদী চক্রের ভয়ে সোসাইটিতে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে জবি ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আলম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী হওয়ার কারণে আমাকে সোসাইটি থেকে বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। প্রগতিশীল বিতার্কিকদের বিতর্কের সুযোগ না দিয়ে শিবিরের মূল এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ওই দুই নেতা মৌলবাদী গোষ্ঠীকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা আবুল হাসান বলেন, অভিযুক্ত শিবিরকর্মীকে তাৎক্ষণিকভাবে থানায় রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। শিবিরকে নির্মূল করা হবে। একজনকে পুলিশে দেয়া হয়েছে। অন্যজনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
এইচএসসির ফল প্রকাশ মঙ্গলবার, জানা যাবে যেভাবে
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাবিস্তারিত পড়ুন
বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নতবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন