মঙ্গলবার, আগস্ট ১৯, ২০২৫

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

জীবনের গল্প: বাবা-মায়ের ডিভোর্সের সাথে সাথে জীবনটাও ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছিল সেদিন !!

বাবা-মায়ের ডিভোর্সের সাথে সাথে জীবনটাও ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছিল ছেলেটার। কিছুদিন বাবার কাছে আর বেশিরভাগ সময়টা মায়ের কাছে কাটতো তার। বেশ ভালো লাগতো যখন ছুটিতে বাবা নিতে আসতো ওকে । আসলে বাবা ওকে অনেক বেশি ভালোবাসে কিনা। বুঝতো ছেলেটা বাবার ভালোবাসা। কিন্তু সেটা যে এতটা ভয়াবহ রূপ নেবে একবারের জন্যেও মাথায় আসেনি হয়তো কখনোই!

সেদিন বাবার হাত ধরে মাকে বিদায় জানিয়ে গুটি গুটি পায়ে বাবার বাসায় গিয়ে উঠেছিল ডেভিড রোথারবার্গ। ১৯৮৩ সালের মার্চের ৩ তারিখ সেটা। গভীর রাত। বাবা চাল্স রোথারবার্গের পাশে ঘুমোচ্ছিল ছয় বছরের ডেভিড। হঠাৎ কী হল, নিজেকে আবিষ্কার করল সে গনগনে আগুনের ভেতরে। আগুন লেগেছে ঘরে! বাবা কোথায়? পাশে তাকিয়ে আঁতিপাতি করে বাবাকে খুঁজল ছোট্ট ছেলেটা। কিন্তু পেল না বাবাকে কোথাও। পাবে কী করে? বাবা চার্লস রোথারবার্গ যে তখন পালাতে ব্যস্ত।

ছেলের ঘরে কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগিয়েই ছুটে বেরিয়ে এসেছিল সে। এবার ছেলে আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছে সেটা নিশ্চিত করেই গাড়িতে স্টার্ট দিল চার্লস। একটা এসএমএস পাঠালো প্রাক্তন স্ত্রী ডেভিডের মা মেরি রোথেনবার্গের কাছে। “ তুমি যতক্ষণে এই টেলিগ্রাম পাবে ততক্ষণে আমি উধাও হয়ে গিয়েছি। ডেভিড খুব খারাপ একটা দূর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে। “ ব্যস! এতটুকুই। কিন্তু সেটুকুই যথেষ্ট ছিল মায়ের জন্যে। সবকিছু ছেড়েছুড়ে সেদিনের ফ্লাইটেই চলে এল মেরি ডেভিডের কাছে।

নিজের কষ্ট আর উদ্বেগকে প্রকাশ করতে গিয়ে জানায় মেরি, ডেভিডকে এমনিতে চার্লসের কাছে ছাড়তে তার ইচ্ছে করত না। কারণ হিসেবে চার্লসের অসম্ভব রকমের মানসিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে সে।

“ আমাদের বিয়ে হয়েছিল ভালোবাসার মাধ্যমে। আমি এবং চার্লস দুজনেই কষ্টের একটা জীবন পার করে এসেছিলাম ছোটবেলায়। তাই ভেবেছিলাম আমরা সুখী হব। তেমনটাই হয়েছিল বিয়ের পর। কিন্তু এরপর থেকে, বিশেষ করে ডেভিড পেটে আসবার পর থেকে চার্লস অন্য নারীতে আসক্ত হতে শুরু করে। আর ডেভিড জন্মাবার পর সেসব আসক্তি চলে গেলেও যোগ হয় এক নতুন সমস্যা। আর সেটা হল ডেভিডকে অতিরিক্ত খেয়ালে রাখা।”

ডেভিডের ছোট্টবেলায় চার্লসের ব্যবহার সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানায় মেরি, সে সময় হুটহাট কারণে তার গায়ে হাত তুলতে শুরু করে চার্লস। এক রাতে ডেভিড কান্না করে উঠলে মেরির গলা চেপে ধরে সে এবং বাইরে বের করে দেয় সারারাতের জন্যে। নিজের জীবন বিপন্ন দেখে একটা সময় পুলিশকে সব জানায় মেরি। গ্রেপ্তার হয় চার্লস। তবুও চার্লসের কাছে ডেভিডকে যেতে দেওয়ার একটাই কারণ ছিল মেরির।

আর সেটা হল ভয়। মেরির ভয় ছিল ডেভিডকে না পেলে চার্লস ওকে কিডন্যাপ করে নেবে। কিন্তু এতকিছু করেও কিছু হলোনা। ছেলেকে মেরে ফেলতে রাজী ছিল চার্লস। কিন্তু স্ত্রীর কাছে দিতে নয়। সেবার ডেভিড চার্লসের হাত ধরে বেড়াতে যাওয়ার সময়ই কেমন যেন লেগেছিল মেরির। বেশ কিছুদিন ছেলের কোন খোঁজ না পেয়ে চার্লসের বাড়িতে খোঁজ নেয় সে। কিন্তু সেখানে ডেভিড বা চার্লস কেউই ছিলনা।

প্রতিবেশীর কাছ থেকে জানতে পারে মেরি যে প্রায় রাতেই মায়ের কাছে যাওয়ার বায়না ধরত ডেভিড। আর তাকে বকে বা মেরে চুপ করিয়ে দিত চার্লস। কোনরকম হদিস না পেয়ে একটা সময় সিদ্ধান্ত নেয় মেরি পরদিন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ডিজনিল্যান্ডে যাবে সে। কারণ বেশ কিছুদিন ধরেই ওখানে যেতে চাইছিল ডেভিড।

কে জানে! চার্লস হয়তো ওখানেই নিয়ে গিয়েছে তাকে। পরদিন সকালে ঠিক সময়েই অফিসে পৌঁছে গিয়েছিল সে। কিন্তু পৌঁছেই একটা ভয়াবহ খবর পেতে হয় তাকে। চার্লসের টেলিগ্রাম এসেছে! সোজা হাসপাতালে চলে আসে মেরি। ডেভিডের শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলে মেরি- “ আমি প্রথমে ওকে চিনতে পারিনি। সে ওর চাইতে তিনগুন ফুলে গিয়েছিল। চোখগুলো কোটর থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছিল। ঠোঁটগুলো নেই হয়ে গিয়েছিল পুড়ে। আর মাথাটা বেলুনের মতন হয়ে গিয়েছিল দেখতে। সে কথা বলতে কিংবা দেখতে পারছিলনা।“

সন্তানের এমন কষ্ট দেখে একটা কথাই মনে হয়েছিল মেরির- ওকে মরে যেতে দাও! কিন্তু না! মায়ের চাইতেও হাজার গুন শক্ত মনের ছিল ডেভিড নামের ছয় বছরের ছেলেটি। নতুন চামড়া লাগানো হল ডেভিডের দেহে। ঘটনার নয়মাস পর একটি হুইলচেয়ারসহ হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয় ডেভিডকে। তবে হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে মোটেই ইচ্ছুক ছিলনা ডেভিড। নিজের পায়েই হাঁটতে পছন্দ করে সে। কিছুদিন বাদেই নতুন স্কুলে ভর্তি করা হয় ডেভিডকে। সেখানে সবার সাথে বন্ধুত্ব করতে শুরু করে ডেভিড।

পরবর্তীতে ছেলেকে মারার অভিযোগে ছয় বছরের সাজা হয় চার্লসের। ১৯৯০ সাথে প্যারোলে বেরিয়ে আসে সে জেল থেকে। তবে এখন অব্দি আর তাকে ডেভিডের কাছে ঘেঁসতে দেয়নি মেরি।

“ডেভিড আন্দাজ করতে পারে যে তার বাবাই এই কাজ করেছে। তবে সেটা নিয়ে সে কিছু বলেনা। বাইরের পৃথিবীতে অনেকেই ওকে বলে- কি বিচ্ছিরি দেখতে! কিন্তু সেসবকে একদমই কানে নেয়না ডেভিড। মন খারাপ করেনা। ডেভিড বলে- মা, ঈশ্বর আমাকে তিনবার বাঁচার সুযোগ দিয়েছে। একবার তোমার গর্ভে, একবার আগুনে পোড়ার পর এবং আরেকবার স্বর্গে। আমার উচিত এই সবগুলোকে যতটা সম্ভব ভালো করে তোলার।“

বলতে গিয়ে কাঁদে মেরি ছেলের জন্যে। কিন্তু ডেভিড কাঁদেনা। কেন কাঁদবে? তার যে এখনো অনেকটা পথ যাওয়ার বাকী!

তথ্যসূত্র- Three Years After His Father Set Him Afire, David Rothenberg Not Only Survives but Smiles- people- www.people.com

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন  

চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন

চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস

 শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন

  • স্বাধীনতার জন্য সিরাজুল আলম খান জীবন যৌবন উৎসর্গ করেছিল
  • ৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে সম্মাননা দিল ‘আমরা একাত্তর’
  • হাতিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
  • ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করলেন পুলিশ সদস্য
  • শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
  • চলে গেলেন হায়দার আকবর খান রনো
  • গফরগাঁওয়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক শামছুন নাহার
  • ‘ও আল্লাহ আমার ইকবালরে কই নিয়ে গেলা’
  • ভিক্ষুকে সয়লাভ নোয়াখালীর শহর
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
  • কান্না জড়িত কন্ঠে কুড়িগ্রামে পুলিশের ট্রেইনি কনস্টেবল
  • অজানা গল্পঃ গহীন অরণ্যে এক সংগ্রামী নারী