ঝাড়ুদার দিলেন ‘চিকিৎসা’, ঢাকা মেডিকেলে রোগীর মৃত্যু!
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এক ঝাড়ুদারের ‘চিকিৎসায়’ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যুকে ঘিরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ মূল ফটকে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
হাসপাতাল সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানা যায়, বিকেল ৪টার দিকে হাসপাতালের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে বিপ্লব মণ্ডল (২৬) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
রোগীর মৃত্যুর পর তাঁর স্বজনরা হাসপাতালের এক ঝাড়ুদারকে ধরে মারধর করতে থাকেন। অভিযোগ ওঠে, ওই ঝাড়ুদারই রোগীকে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়েছিলেন এবং ইনজেকশন দিয়েছিলেন।
মারধরের একপর্যায়ে ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পে কর্তব্যরত সদস্যরা ওই ঝাড়ুদারকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ হেফাজত থেকে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটুনি দেয়। একপর্যায়ে শাহবাগ থেকে পুলিশ এসে উদ্ধার করলেও নিবৃত হয়নি জনতা। পুলিশের গাড়িতে উঠেও তাঁকে মারধর করে তারা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে ঝাড়ুদারকে উদ্ধার করে পুলিশ ক্যাম্পে সোপর্দ করে।
সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও ঢামেকের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন রোগীর স্বজনসহ বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় তাঁদের মুখে স্লোগান ছিল, ‘সুইপারে চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, বিচার চাই’, ‘অবহেলায় রোগীর মৃত্যু কেন, বিচার চাই’।
মৃত বিপ্লব মণ্ডলের বাবা বিনোদ মণ্ডল জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তাঁর ছেলে আহত হন। কালই তাঁকে ঢামেকের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। আজ বিকেলে বিপ্লব হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে স্বজনরা চিকিৎসককে ডাকতে গিয়ে চিকিৎসককে পাননি। একপর্যায়ে বুকে স্টেথেস্কোপ ও হাতে অক্সিজেনের মাস্ক নিয়ে একজন চিকিৎসা দিতে আসেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি বিপ্লবের মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরানোর কিছুক্ষণের মধ্যে বিপ্লব মারা যান।
বিনোদ মণ্ডল কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলের আঘাত তত গুরুতর ছিল না। আজ দুপুরেও ছেলে স্পষ্টভাবে আমাকে বলেছে, বাবা আমি সুস্থ হয়ে গেছি। আপনি কাল সারা রাত অনেক কষ্ট করেছেন। আপনি বাড়ি যান। এই অবস্থার মধ্যে আমার ছেলে একজন সুইপারের (ঝাড়ুদার) হাতে মারা যাবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
রোগীর স্বজনরা প্রশ্ন তোলেন, ঝাড়ুদার কেন চিকিৎসা দিতে আসবে?
পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ঝাড়ুদার জানান, তাঁর নাম সুমন। জরুরি বিভাগের সরদার আজিজ তাঁকে ঢামেকে কাজ করতে নিয়ে এসেছেন। তিনি সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত নন।
অভিযুক্ত সুমন জানান, রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়েছে বলে চিকিৎসকের নির্দেশে তাঁকে নেবুলাইজার দিয়েছেন তিনি। তবে কোন চিকিৎসক তাঁকে এই নির্দেশ দিয়েছেন, তা তিনি জানাতে পারেননি।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ঘটনার খবর জানার পরপরই আমরা ওই দালালকে (ঝাড়ুদার) গ্রেপ্তার করি। কিন্তু আমাদের হাত থেকে রোগীর স্বজনরা ওই দালালকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে শাহবাগ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে অভিযুক্ত দালালকে উদ্ধার করলেও জনতা তাকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে আবারও মার দেয়।’
এ ব্যাপারে ঢামেকের উপপরিচালক আবদুল গনি বলেন, ‘দালাল নিয়ে একটা ঝামেলার খবর শুনেছি। এই ব্যাপারে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না। তদন্তের পরই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রাজধানীতে আনসার ব্যাটালিয়ন মোতায়েন
ঢাকা মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৬ প্লাটুন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েনবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ২৩
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থী, মহিলা আওয়ামী লীগবিস্তারিত পড়ুন