ঝিনাইদহ আদালতে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি!
ঝিনাইদহ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের হাজতখানার সামনে এক আসামির স্বজনদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওই আসামির হাতে আদালত পুলিশের পরিদর্শক আবদুল বারী লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে দুপুরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সাজেদুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজবাহার আলী শেখ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের আরাপপুর গ্রামের আশরাফুজ্জামান কবির ওরফে রাসেলকে গত শনিবার গভীর রাতে ঝিনাইদহ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। দ্রুত বিচার আইনে করা মামলায় শুনানির জন্য আজ কারাগার থেকে আশরাফুজ্জামানকে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের হাজতে আনা হয়। বেলা ১১টার দিকে আশরাফুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে আসা বন্ধু ও স্বজনদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে হাজতখানায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি দেখার জন্য আদালত পুলিশের পরিদর্শক আবদুল বারী সেখানে যান। তখন ওই হাজতি তাঁর জামার কলার ধরে টানাটানি করে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় দর্শনার্থীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এদিকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে হাজতি আশরাফুজ্জামান কবিরের সঙ্গে হাজতখানায় কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তখন তিনি অভিযোগ করে বলেন, সকালে স্বজনরা তাঁর জন্য হাজতখানায় খাবার দিতে আসেন। এ সময় স্বজনদের কাছে ৪০০ টাকা দাবি করে কর্তব্যরত কোর্ট পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁর বন্ধু জাকিরসহ অন্যদের কথা কাটাকাটি হয়। হাজতখানার ভেতর থেকে তিনি বিষয়টি লক্ষ করেন। এ সময় আগের নিয়মে ২০০ টাকা দিতে রাজি হন তাঁরা। তখন টাকা দেওয়া নিয়ে হাজতখানায় হৈচৈ শুরু হয়ে যায়। খবর পেয়ে পাশের কক্ষ থেকে আদালত পুলিশের পরিদর্শক আবদুল বারী হাজতখানার সামনে ছুটে আসেন এবং তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এতে আবদুল বারীর জামার শার্টের বোতাম ছিড়ে যায়। মুহূর্তে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। আদালত এলাকায় ছুটে আসেন র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আদালতের একজন জিআরও (উপপরিদর্শক) বলেছেন, ঘটনার একপর্যায়ে হাজতখানায় থাকা আসামি আদালত পুলিশের পরিদর্শকের শার্টের কলার ধরে লাঞ্ছিত করেন এবং গালমন্দ করতে থাকেন।
পরিদর্শক আবদুল বারী খবরের সত্যতা সরাসরি স্বীকার না করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা ন্যক্কারজনক। এ ঘটনা গণমাধ্যমের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক সেটা চান না তিনি। কোর্ট হাজতের অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ বলেছেন, খাবার দেওয়া নিয়ে কোর্ট হাজতখানায় তুচ্ছ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান বলে স্বীকার করলেও আদালত পরিদর্শককে লাঞ্ছিত করার খবর তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
আদালতের হাজতখানায় আসামিদের খাবার দেওয়া ও দেখা করতে হলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ঘুষ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে আজ সন্ধ্যার একটু আগে আদালত পরিদর্শক আবদুল বারী ও মালখানার দায়িত্বরত জিআরও উপপরিদর্শক আজিজুলকে তলব করেন ঝিনাইদহ মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আদালত পরিদর্শককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট দবির হোসেন বলেছেন, ঘটনাটি তাঁরা শুনেছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড শাহীনকে ধরতে ডিবির পরিকল্পনা
গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ধারণা, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমবিস্তারিত পড়ুন
তৃতীয়বার আনারকে মনোনয়ন দিয়েছি জনপ্রিয়তা দেখে: কাদের
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) স্বর্ণ চোরাচালানকারীবিস্তারিত পড়ুন
মাস্টারমাইন্ড শাহীনের অগাধ রহস্য
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ভারতের কলকাতায় হত্যাকাণ্ডেবিস্তারিত পড়ুন