টানা পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালের জানলার পাশে বসেঃ সন্তানের বাবা কে তা জানেন না তরুণী!

গত পাঁচ দিন ধরে একটানা আকাশ দেখে গিয়েছেন রেনামি হাসপাতালের ছয়তলায় জানলার পাশে বসে। অচেনা শহরের অচেনা আকাশ। এ কয়টা দিন যত বার তার মোবাইল বেজে উঠেছে, ফোন কানে চেপে ধরে ওই জানলার পাশে বসেই অঝোরে কেঁদেছেন রেনামি কালো নামে ৩২ বছরের ফিলিপিনো এই যুবতী। কলকাতা শহর ছেড়ে তিনি ফিরে যেতে চান ফিলিপিন্সের দক্ষিণে, সমুদ্র ঘেরা জেনারেল স্যান্তোস শহরে। তার বাবা-মায়ের কাছে।
গত শুক্রবারের ঘটনা। ৩৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা রেনামি মাঝ আকাশেই যন্ত্রণায় কঁকিয়ে উঠেছিলেন। সামলানো যায়নি তাকে। কুয়েত থেকে ম্যানিলা যাওয়ার পথে ফিলিপিন্সের বিমান কলকাতায় নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিল রেনামিকে একা। কলকাতায় নামার পরে তড়িঘড়ি তাকে ভর্তি করা হয়েছিল বিমানবন্দরের কাছে চার্নক হাসপাতালে। রেনামির প্রাণ বাঁচাতে সেই রাতেই অস্ত্রোপচার করে মৃত সন্তানকে বার করে আনা হয়।
আজ শুক্রবার বিমানবন্দরের অফিসারেরাই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, কেমন স্বামী! আসন্ন প্রসবা স্ত্রীকে এ ভাবে একা বিমানে তুলে দিয়েছেন! প্রথম দুইতিন দিন কাটার পরেও সন্তানের বাবা যোগাযোগ না করায় বা নিজে সশরীরে কলকাতায় এসে হাজির না হওয়ায় অবাক হয়েছিলেন হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরাও।
গতকাল বৃহস্পতিবার হাসপাতালে বসে এখন একটু সুস্থ রেনামি উদ্ঘাটন করলেন সেই রহস্যের। কোথায় তার সন্তানের বাবা, আজ তা জানেন না রেনামি। স্যান্তোস শহরের দরিদ্র খ্রিস্টান পরিবারের ছোট মেয়ে রেনামি। চাকরির আশায় সাত বছর আগে সাগর পেরিয়ে উড়ে গিয়েছিলেন কুয়েত। একটি বাড়িতে দু’বছর পরিচারিকার কাজ করার পরে একটি হোটেলে রান্নার কাজ শুরু করেন। এখন তিনি ‘শেফ’। চকোলেট এবং চকোলেট থেকে বিভিন্ন খাবার তৈরিতে তার হাতযশ রয়েছে।
কুয়েত শহরের এক রেস্তোরাঁয় এক দিন তার আলাপ হয়েছিল শন পার্কারের সঙ্গে। মার্কিন সেনা শন লম্বা, সুঠাম। গায়ের রঙ মাজা। রেনামির কথায়, বেশি দিন নয়। গত বছরের অগস্ট মাসে প্রথম দেখা। প্রেম। মাস সাতেক আগে আচমকাই কুয়েত ছেড়ে চলে যান শন। তাকে মার্কিন দেশে বার কয়েক ফোন করার পরে, এক দিন শনের বোন বলে পরিচয় দিয়ে এক মহিলা ফোন করেন রেনামিকে।
ভয়ে কুয়েতের চিকিৎসকদের কাছে যেতে পারেননি রেনামি। জানতে পারলে শাস্তির মুখে পড়তে হতো। তিনি সত্যিটা লুকিয়ে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। বাবা-মা জানতে পারলে তারা বলেন দেশে ফিরতে। সহকর্মীরাই টিকিট কেটে তুলে দেন বিমানে। ভুলে যেতে চান শনকে। বাড়ি ফিরে ছোটখাটো কাজ পেলে করবেন। বিয়ে? মাথা নীচু করে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন রেনামি।
সুত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন

চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন