ডাইনোসর বিষয়ক ৭ ভুল ধারণা
ডাইনোসর বলতে আমরা জানি বিশালাকার এক প্রাণী। তবে পৃথিবীতে বর্তমানে ডাইনোসরের অস্তিত্ব নেই। অনেক আগেই এই প্রাণী পৃথিবীকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে পৃথিবীতে ডাইনোসরের প্রথম জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। এরপর থেকে এখন ডাইনোসরের বহু জীবাশ্ম ও কংকালের খোঁজ মিলেছে।
মূলত হলিউডের বিখ্যাত জুরাসিক পার্ক সিনেমার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মানুষজন দেখেছে ডাইনোসরের কাল্পনিক চরিত্র। ডাইনোসর চরিত্রের সঙ্গে মানুষের প্রথম দেখা জুরাসিক পার্ক সিনেমার মাধ্যমেই।
কিন্তু জুরাসিক পার্কের ডাইনোসর আর পৃথিবীর বুকে একসময় দাপিয়ে বেড়ানো আসল ডাইনোসর কী একই? সিনেমায় দেখে প্রাণীটা সম্পর্কে আমরা যা ভাবি তা কী সব ঠিক?
গবেষণা বলছে, না। ডাইনোসর সম্পর্কে এতদিন আমরা যা জেনে এসেছি তার সবটা ঠিক নয়। জেনে নিন ডাইনোসর সম্পর্কে এমন ৭ তথ্য যা সত্যি নয়।
* জুরাসিক পার্ক সিনেমাটি দেখে অনেকেই ভাবি, ডাইনোসরের যুগেও মানুষ ছিল। কিন্তু এই ধারণা ঠিক হওয়া সম্ভব নয়। কারণ বিজ্ঞানীদের মতে, ডাইনোসর পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে। কিন্তু মানুষের প্রথম অস্তিত্ব পাওয়া গেছে আজ থেকে ৬০ লাখ বছর আগে।
* আজ থেকে ১৫ কোটি বছর আগে ডাইনোসর আর স্তন্যপায়ী প্রাণীরা একসঙ্গেই বাস করত। এমনটা আমরা অনেকেই মনে করি। কিন্তু এটা ঠিক নয়। ডাইনোসরের সময় পৃথিবীতে থাকতো কিছু ছোট ছোট প্রাণী। এরা ছোট ছোট পোকা-মাকড় আর কিছু সরীসৃপ প্রাণীদের খেয়ে বেঁচে থাকত। বড় বড় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আত্মপ্রকাশ ঘটে ডাইনোসরের অস্তিত্ব চলে যাওয়ার পর।
* পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে হয়েছে ডাইনোসর। এটাকে ডাইনোসর প্রজাতির ব্যর্থতা বলে মনে করা হয়। কিন্তু আদতে কী এটা সত্যি? পৃথিবীর বুকে এই বিশাল প্রাণিগুলোর একাধিপত্ব চলেছে ১৫ কোটি বছর ধরে। যা আধুনিক মানুষের অস্তিত্বের তুলনায় ৭৫০ গুণ বেশি।
* প্রাগৈতিহাসিক যুগের সরীসৃপরা আজকের সরীসৃপদের তুলনায় অনেকটাই আলাদা ছিল। আর সেই কারণেই সেই সময়ের বেশিরভাগ সরীসৃপকেই আমরা ডাইনোসরের প্রকারভেদ বলে মনে করি। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়। ওই সময় পৃথিবীতে বাস করত ৪০ রকমের সরীসৃপ যার মাত্র ১০ শতাংশ ছিল ডাইনোসর। বিভিন্ন সিনেমায় বা বইতে আমরা সূচাল ঠোঁটযুক্ত এক ধরনের উড়ন্ত ডাইনোসরের মতো দেখতে প্রাণী দেখে থাকি। কিন্তু ডাইনোসর কখনো উড়তে পারত না।
* ডাইনোসররা সরীসৃপ হওয়ায় বেশিরভাগ বিজ্ঞানীদের ধারণা এদের রক্ত ঠাণ্ডা হয়। কিন্তু নতুন কিছু গবেষণা বলছে সব রকমের ডাইনোসররা ঠাণ্ডা রক্তের ছিল না। কিছু ডাইনোসর ছিল স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মতো উষ্ণ রক্তের। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী জন গ্র্যাডি ও তার দলের গবেষণায় বলা হয়েছে, ডাইনোসরদের রক্ত টিকটিকির মতো শীতলও ছিল না, আবার স্তন্যপায়ীর মতো উষ্ণও ছিল না। এই বিশালদেহী প্রাণিপ্রজাতির রক্ত ছিল শীতল ও উষ্ণের মাঝামাঝি পর্যায়ের।
* সিনেমায় আমরা স্টেগোসরাস ডাইনোসরকে টি-রেক্স-এর সঙ্গে মারামারি করতে দেখি। কিন্তু বাস্তবে এটা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। কারণ স্টেগোসরাসের অনেক পরে আবির্ভাব হয় টি-রেক্সের।
* বিশাল আকারের গ্রহাণু এসে পরে পৃথিবীতে। আর তার প্রভাবেই গলে যায় বরফ, বাড়তে থাকে পৃথিবীর তাপমাত্রা। সেই উত্তাপ সহ্য করতে না পেরে ডাইনোসরের বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু শুধু এটাই ডাইনোসরদের বিলুপ্তির কারণ নয়। এর পরও পৃথিবীতে সুনামি, অ্যাসিড বৃষ্টির মতো বেশ কিছু বিপর্যয় হতে থাকে। এসবই ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলে ডাইনোসরদের।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন