ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটে যুক্ত হচ্ছে বাংলার টাইটানিক
দেশে প্রথমবারের মতো লিফটযুক্ত অত্যাধুনিক বিলাস বহুল লঞ্চ যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। লঞ্চটিতে লিফট ছাড়াও প্লে-গ্রাউন্ড, ফুড কোর্ট এরিয়া ও চিকিৎসা সুবিধার পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারকারীদের জন্য ওয়াইফাই সুবিধা থাকছে।
সূত্র মতে, মের্সাস সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানীর সুন্দরবন-১০ নামের এই জাহাজটি আগামী দু’মাসের মধ্যে যাত্রী পরিবহনে ঢাকা-বরিশাল রুটে যুক্ত হবে। নগরীর বেলতলা ফেরীঘাটের নিজস্ব ডকইয়ার্ডে এ জাহাজটির নির্মাণ কাজ শেষে ভাসানো হয়েছে কীর্তনখোলা নদীতে।
শুধু অত্যাধুনিক সুবিধা আর বিলাসবহুল যাত্রী সেবা নয়, এটি হতে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ যাত্রীবাহী নৌ-যান। তাই এ লঞ্চটি দশনার্থীদের কাছে ‘বাংলার টাইটানিক’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
লঞ্চ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, একজন বিশেষজ্ঞ নৌ-স্থপতির নকশায় সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের প্যানেল নেভাল আর্কিটেডদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে গত দু’বছর ধরে লঞ্চটির নির্মান কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ৩৩২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট লঞ্চটি হতে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ যাত্রীবাহী নৌযান।
প্রায় দেড় হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম জাহাজটিতে ১৫টি ভিআইপি কেবিন ও দু’শতাধিক প্রথম শ্রেণির কেবিন ছাড়াও ৪০টি সোফা রয়েছে। পাশাপাশি দু’শ টন পণ্য পরিবহনে সক্ষম করে গড়ে তোলা হয়েছে জাহাজটি।
জার্মানীর তৈরি ২ হাজার ৭৫০ অশ্ব শক্তির দুটি মূল ইঞ্জিন ছাড়াও পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস নিশ্চিতকরণে তিনটি জেনারেটর যুক্ত করা হয়েছে। আরও একটি স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য সংযোজন করা হয়েছে। নৌ-যানটিতে যাত্রীদের নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
লঞ্চটির মালিক সুন্দরবন নেভিগেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, সুন্দরবন-১০ লঞ্চ এর হুইল হাউজে (চালকের কক্ষ) সম্পূর্ণ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর যন্ত্রাংশ সংযোজন করা হয়েছে। এর রাডার সুকান ‘ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক’ ও ম্যানুয়াল দ্বৈত পদ্ধতির। নৌ-যানটিতে আধুনিক রাডার ছাড়াও জিপিএস পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
ফলে লঞ্চটি চলাচলের সময় নৌ-পথের ১ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে গভীরতা ও আশপাশে অন্য যেকোনো নৌযানের উপস্থিতি চিহ্নিত করতে পারবে। এমনকি ঘন কুয়াশার মধ্যেও নৌযানটি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে। কুয়াশা ভেদ করে আলো যেতে সক্ষম ফর্গ লাইট যুক্ত করা হয়েছে লঞ্চটিতে। লঞ্চটিতে দক্ষ মাস্টার, সুকানী ও ইঞ্জিন চালক (ড্রাইভার) ছাড়াও মোট ৪০ জন বিভিন্ন শ্রেণির ক্রু থাকছে।
সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, সমুদ্রগামী বড় জাহাজের আদলে তৈরি হয়েছে সুন্দরবন-১০। তার ভাষায় এটি একটি পরির্পূর্ণ জাহাজ। জাহাজটি তৈরির সময়ই যাত্রী নিরাপত্তা ও আরামদায়ক ভ্রমণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
প্রথম শ্রেণির কেবিনগুলো বিলাসবহুল তিন তারকা আবাসিক হোটেলের আদলে বানানো হয়েছে। ব্যয়বহুল ও দৃষ্টিনন্দন আসবাবপত্রে সাজানো হয়েছে কেবিনের প্রতিটি কক্ষ। কেবিনের সাথে যাতায়াতের জন্য রয়েছে সুবিশাল বারান্দা।
লঞ্চ মালিক জানান, প্রায় চারতলা বিশিষ্ট লঞ্চটিতে মূলত প্রতিবন্ধী ও রোগীদের যাতায়াতের সুবিধার কথা চিন্তা করেই লিফট যুক্ত করা হয়েছে। তাদের পুরনো লঞ্চ ব্যবসার ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমম্বয়ে নির্মাণ করা বিলাস বহুল লঞ্চটি আকার, নকশা ও নান্দনিকতার বিবেচনায় যাত্রীদের ভ্রমণে সবচেয়ে নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে বলেও তিনি জানান।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাময়িক বরখাস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেবিস্তারিত পড়ুন
কমলা হ্যারিসের ভোটের প্রচারণায় বাজবে এ আর রহমানের গান
আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসেরবিস্তারিত পড়ুন
উপদেষ্টা আদিলুর: পূজায় বিশৃঙ্খলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না
দুর্গাপূজায় বিশৃঙ্খলাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেবিস্তারিত পড়ুন