শুক্রবার, নভেম্বর ২৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

তবুও থেমে নেই জীবন

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর সারাদেশে বিশেষ করে কোলাহলপূর্ণ নগরজীবনে ছন্দপতন ঘটেছে। আতঙ্ক আর অস্বস্তি পিছু নিয়েছে সাধারণ মানুষের। রাজধানীর জনজীবনে এই ছন্দপতন আরও স্পষ্ট। মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরায় বেড়েছে সতর্কতা। যেসব জায়গায় সাধারণত জনসমাগম হয় সেই সব পাবলিক প্লেস বর্তমানে প্রায় জনশূণ্যই থাকছে। জঙ্গি হামলার ঘটনার পর বেশিরভাগ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ক্লাস শুরু হয়নি। বড় বড় শপিং মল, হোটেল রেস্টুরেন্টেও কমে গেছে সাধারণের আনাগোনা। আবার কখন কোথায় হামলা হয়—এই ভয় তাড়া করছে নাগরিকদের। তবুও জীবন থেমে নেই। মানুষ অফিস-আদালতে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় কাজ সারতে বের হচ্ছে রাস্তায়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াবলেন, রাজধানীর প্রতিটি মানুষ নিরাপদ। কোথাও নিরাপত্তার কোনো সমস্যা নেই। আমাদের পক্ষে যত ধরনের ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব, আমরা সেটাই করছি। পুলিশ সবাইকে সব ধরনের নিরাপত্তা দেবে। প্রয়োজনে অভিযান চলবে। কারো আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি জানান, গুলশানের কূটনৈতিক পাড়াসহ বনানী-বারিধারা-নিকেতন এলাকা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসি টিভি) আওতায় আনা হয়েছে। পুলিশ ২৪ ঘণ্টা সিসি টিভি পর্যবেক্ষণ করছে। গুলশান, বনানী ও বারিধারায় নানা রকম অলিগলি দিয়ে ঢোকার পথ বন্ধ করে দিয়ে সেখানে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে।

হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলার ২২ দিন পার হয়েছে। গুলশান এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবে খুলেছে। তবে হামলা পরবর্তী সময়ে বিক্রি কমে গেছে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। এদিকে নিরাপত্তা বাড়ানোয় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন গুলশান এলাকার বাসিন্দারা। হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টের খুব কাছেই বাসা আবুল বাসারের। গুলশানের এই বাসিন্দা জানান, অনেক দিন থেকে এই এলাকায় আছি। এমন ঘটনা আমাদের বাড়ির কাছে হবে কোনো দিন ভাবিনি। তবে আমরা আশাবাদী। ভিনদেশি অতিথিদের কথা ভেবে সরকার যদি বিশেষ একটা নিরাপত্তাবলয় এখানে তৈরি করে, খুব ভালো হয়। হামলার পরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এই এলাকার গণপরিবহণ। এলাকাজুড়ে আগের চেয়ে বেশি তত্পর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। এতে সীমিত হয়ে গেছে সাধারণ মানুষের চলাফেরা।

আতঙ্ক ভর করেছে বিদেশি নাগরিকদের মধ্যেও। নিরাপত্তা বাড়ানোয় সন্তুষ্ট তারা। তবে ভবিষ্যতে হামলা রোধে নিরাপত্তার পাশাপাশি গোয়েন্দা তত্পরতা বাড়ানোর তাগিদ তাদের। একাধিক বিদেশি নাগরিক জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালোই মনে হচ্ছে। তবে আমাদের মধ্যে এখনো ভয় কাজ করে। প্রত্যাশা করছি সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এদিকে বাড়তি নিরাপত্তায় ক্রেতা সাধারণ চলাফেরা করতে না পারায় ব্যবসায়িক লেনদেনে প্রভাব পড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। গুলশান এলাকার ব্যবসায়ী আনোয়ার জানান, ক্রেতাদের চলা-ফেরা সহজ করতে গণপরিবহণ চলাচলে সহজ করার অনুরোধ করছি। তাহলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আগের মতো চলবে। হয়তো একটু সময় লাগবে। তবে আমরা আশাবাদী সবকিছু আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশান-বনানীর কয়েকটি নামিদামি স্কুল সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের পর স্কুল খোলার কথা থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও খোলেনি। এর মধ্যে স্কলাসটিকা, মাস্টারমাইন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল রয়েছে। আর যেগুলো খুলেছে সেখানে শিক্ষার্থী উপস্থিতি একেবারে কম। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের পর ১৩ জুলাই থেকে অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল খোলার তারিখ থাকলেও স্কলাসটিকা, মাস্টারমাইন্ডসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দুই দফা তারিখ পিছিয়ে এখন পর্যন্ত খোলেনি। কয়েকটি স্কুল আরও ১০ দিন সময় নিয়েছে। তবে সিডনি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ইউরোপিয়ান ইন্টারন্যাশনালসহ বেশ কয়েকটি স্কুল আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হলেও উপস্থিতির হার নগন্য।

সিডনি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, মেইন গেটের সামনে পুলিশ বসে আছে। নতুন করে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। স্কুলে মূল গেটে কড়া তল্লাশি করছে সিকিউরিটি গার্ডরা। কোনো অভিভাবক ভিতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। শিক্ষার্থীদের ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্র চেক করা হচ্ছে। স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল এন সিদ্দিকা জানান, আমাদের স্কুল নির্ধারিত সময়েই খুলেছি। কিন্তু উপস্থিতির হার একেবারে কম। তিনি বলেন, অনেক অভিভাবকের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ছাড়া অনেক অভিভাবক এখনো দেশের বাইরে আছেন। উপস্থিতির হার কমের কারণে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠদান এখনো শুরু করেননি। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে এই পরিস্থিতি একটু পাল্টাবে বলে আমার ধারণা।

এই শিক্ষিকা জানান, মাঝেমধ্যে অভিভাবকরা আমাদের ফোন করে আতঙ্কের কথা জানাচ্ছেন। তাদের সন্তানদের স্কুলের ভিতরে সব ধরনের নিরাপত্তা দেয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। কী ধরনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সিকিউরিটির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সিসি টিভি বাড়ানো হয়েছে। মেইন গেটে প্রয়োজন মোতাবেক পুলিশ চাচ্ছি। থানা থেকে সেভাবে পুলিশ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বিদেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আলাদা নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করছি।

কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। স্কুল খোলা থাকলেও উপস্থিতির হার একেবারে কম। এর কারণ হিসেবে স্কুলের ডেস্ক অফিসার তৌফিকুর রহমান জানান, আমাদের স্কুল যথারীতি সিডিউল মোতাবেক খোলা হয়েছে। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে উপস্থিতির হার একটু কম। তার আশা, আগামী সপ্তাহ থেকে স্কুলে উপস্থিতির হার বাড়বে। ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের অভিভাবক ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অভিভাবকদের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আমিনা রত্না জানান, দুই দফা স্কুল খোলার তারিখ দিয়ে স্কুল খোলছে না। তিনি বলেন, জঙ্গিরা বিদেশিদের টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে। আমার সন্তান যে স্কুলে পড়ে সেখানে বিদেশি ছাত্র-শিক্ষক আছে। যেকোনো ধরনের হামলা হলে বিদেশিদের সঙ্গে আমাদের সন্তানরা আক্রান্ত হবে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।

এদিকে স্কলাসটিকা স্কুল গত ১৩ জুলাই খোলার তারিখ থাকলেও দুই দফা পিছিয়েও এখনো খোলা হয়নি। স্কলাসটিকা স্কুলের উত্তরা শাখার ভাইস প্রিন্সিপাল সাফকাত ইয়াসমীন জানান, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আমরা স্কুল খুলিনি। সকল অভিভাককে নির্ধারিত সময়ে স্কুল না খোলার বিষয়টি মুঠোফোনের খুদে বার্তায় জানিয়েছি। ছুটি আরও ১০ দিন বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে পরে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। মাস্টারমাইন্ডেও একই অবস্থা।

নিরাপত্তা জোরদার করতে মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল এন্ড কলেজে ডিজিটাল সিকিউরিটি গেইট বসানো হয়েছে। গতকাল এই গেইটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কামরুল লায়লা জলি, এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড.এস এম ওয়াহিদুজ্জামান ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা এর চেয়ারম্যান প্রফেসর মাহবুবুর রহমান।

গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, গুলশানে শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব না। তবে যেসব স্কুলে বিদেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আছেন তাদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিচ্ছি। এরপরও যারা নিরাপত্তা চায় আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করছি। তিনি জানান, গুলশানের হলি আর্টিজানের ঘটনার পর এখন গুলশানের পরিবেশ অনেকটা স্বাভাবিক। বিভিন্ন মহল আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে গুলশানের পরিবেশ অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

জাবি ছাত্রদলের পুনর্মিলনীতে দুই গ্রুপের বাগ্‌বিতণ্ডা, ককটেল উদ্ধার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রদলের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে দুই গ্রুপেরবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ফ্যাসিবাদের ফেরার সম্ভাবনা বাড়ছে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিবাদ পরাজিত হলেওবিস্তারিত পড়ুন

বিচারপতিকে ডিম ছোড়ার ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে আদালত কক্ষে ডিম ছোঁড়ারবিস্তারিত পড়ুন

  • ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দেওয়া হলো ২২,৫০০ কোটি
  • সিলেটে আদালত প্রাঙ্গণে ৩ আসামিকে গণপিটুনি
  • বিএনপির যে দাবির সঙ্গে একমত জামায়াত
  • সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
  • দুই দফা কমার পর ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম
  • চট্টগ্রামে দুর্ঘটনার কবলে হাসনাত-সারজিসের বহরের গাড়ি
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে যা বললেন বিএনপি নেতারা
  • ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৪ জনের মৃত্যু
  • চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি নিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ
  • উপদেষ্টা মাহফুজ: সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
  • বড় ব্যবধানে অ্যান্টিগা টেস্টে হারলো বাংলাদেশ