তামিমের অর্জনে সাকিবের আক্ষেপ!
এখন আপনি বুক ফুলিয়ে বলতে পারেন এরকম বাংলাদেশ দলই চেয়েছিলেন। যে দলে প্রতি ম্যাচেই থাকে নতুন কিছু গড়ার প্রত্যয়। যেমন গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে অনন্য রেকর্ড গড়লেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের হয়ে তিন ফরমেটেই সর্বাধিক উইকেটর মালিক তিনি। তবে একটি জাগায় তামিম এগিয়ে আছেন সাকিব আল হাসানের থেকে। ব্যাটিংয়ের সব মূল রেকর্ডই তামিমের কাছেই।
শুরু থেকেই অনেকটা একসাথে চলছিলো তামিম-সাকিবের ব্যাট। সাকিবের রান ৪১৭৩, তামিমের ৪১২৫। মাঝ পথে সাকিব আল হাসান এগিয়ে যান তামিমকে পিছনে ফেলে। গত বছর বিশ্বকাপের শেষ অবধি সাকিব আল হাসানই এগিয়ে ছিলেন। বিশ্বকাপ পরবর্তি পাকিস্তান সিরিজেই পাল্টে যায় চিত্র। তামিমের অনবধ্য ১৩২, অপরাজিত ১১৬ ও ৬৪ রানের তিনটি ইনিংসে সাকিবকে এই লড়াইয়ে পেছনে ফেললেন, তখন থেকে তামিমই শীর্ষে।
তিন সংস্করণে শীর্ষ উইকেটশিকারি হলেও অতৃপ্তিটা কোথায়, সংবাদ সম্মেলনে কাল সেটিই বলেছেন সাকিব, ‘তিন সংস্করণে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হতে পারলে অনেক বড় অর্জন মনে হতো। গত এক বছরে দল এত ভালো খেলছে, ব্যাটিংয়ে সুযোগ হচ্ছে না খুব একটা। না হলে তিন সংস্করণে বেশি রানও থাকত।’
নিজেকে বরাবরই ব্যাটিং অলরাউন্ডার ভেবে এসেছেন সাকিব। বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিংয়ের বেশি আগ্রহ তাঁর। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল, ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সবগুলো রেকর্ড সাকিবের হয়ে যাবে। কিন্তু রান তোলার গতি হঠাৎ দ্রুত বাড়িয়ে দিয়ে দৃশ্যপটে চলে এলেন তামিম ইকবাল। যে তামিমের কাছেই এখন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সবগুলো মূল রেকর্ড।
অথচ গত বছর ফেব্রুয়ারিতেও সাকিব ছিলেন শীর্ষে। বিশ্বকাপ চলার সময়েই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ৪ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন সাকিব। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মানুকা ওভালের সেই ম্যাচের পর ওয়ানডেতে সাকিবের মোট রান ছিল ৪০৪০, তামিমের তখনো ৩৯৯০। বিশ্বকাপ থেকেই বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের অবিশ্বাস্য উত্থানে সাকিব ধীরে ধীরে আড়ালে সরে যেতে থাকেন। দলে অনেক নতুন পারফরমারের আবির্ভাব, সেই সঙ্গে তামিম-মাহমুদউল্লাহদের মতো অভিজ্ঞদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সাকিবের কাঁধ থেকে অনেকটা চাপ সরিয়ে নেয়।
এমনকি টেস্টেও দুজনের লড়াইটা ছিল সমানে-সমান। ২০১৩ সালের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টটি দারুণ এক অবস্থানে এনে দাঁড় করায় দুজনকে। ওই টেস্ট শেষে তামিমের রান ছিল ২০৫৬, সাকিবের ২০৫৩। ২০১৪-র অক্টোবর-নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন টেস্ট সিরিজের সময়ও দুজন ছিলেন কাছাকাছি। ওই সিরিজে প্রথম টেস্ট শেষে তামিমের রান ২৪৪০, দ্বিতীয় টেস্ট শেষে সাকিবের রান ২৪৪১। গত ছয়-সাতটি টেস্টেই সেই ব্যবধান বাড়িয়ে নিলেন তামিম। সাকিবের (২৮২৩) চেয়ে টেস্টে এখন তামিমের (৩১১৮) রানের ব্যবধান ২৯৫।
ওয়ানডেতেও কিন্তু ব্যবধানটি খুব বেশি নয়। ৩৪৭ রান, এখনো নাগালের মধ্যেই আছেন তামিম। তবে সাকিবও কাল বলেছেন, ‘এখনো সুযোগ আছে। দেখা যাক ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার আগে কোন অবস্থায় যাই…।’
তবে তাঁর জন্য বেশি চ্যালেঞ্জটা হলো, এখন দল একা তাঁর ওপর নির্ভর করে না। তাঁর আগে ও পরে আরও অনেকে এসে গেছে দলে অবদান রাখতে। এই বদলে যাওয়া ছবিটা সাকিবও বোঝেন, ‘এক বছর ধরে ওরা (টপ অর্ডার) ওপরে এত ভালো খেলে, নিচে ৩০-৪০ রানের বেশি করা যায় না! এ কারণে শীর্ষ রানসংগ্রাহক হওয়া আমার জন্য একটু কঠিন। তামিম, মুশফিক ভাই, আমি, আমরা যারা শীর্ষে আছি, আশা করি এভাবেই অবদান রাখব। আর কেউ আগে কেউ পরে তো থাকবেই (রেকর্ডে)। এটা নিয়ে আমরা কেউ চিন্তিত নই। সবারই লক্ষ্য দলে অবদান রাখা, ভালো করার চেষ্টা করা।’
তাঁর শেষ কথাটাই আসল। ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলীয় সাফল্য। তবে ভালো ছাত্রদের মধ্যে একটা স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা থাকে। কে ফার্স্ট হবে, কে বেশি নম্বর তুলবে। সেটা বাংলাদেশ দলে থাকলেও মন্দ কী!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন