শুক্রবার, জুন ২০, ২০২৫

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

‘তারছেড়া শিক্ষক’ স্বেচ্ছায় কান ধরেছেন: সেলিম ওসমান

নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ‘তারছেড়া’ উল্লেখ করে স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমান বলেছেন, শিক্ষক ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন। জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি স্বেচ্ছায় কান ধরে ওঠবস করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন সাংসদ সেলিম ওসমান। সংবাদ সম্মেলন হলেও সেখানে দলের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সাংসদের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, এ ঘটনায় সারা দেশের লোক ‘সরি স্যার’ বলছে। সাধারণ জনগণ ও রাজনৈতিক মহল থেকে সাংসদের ক্ষমা চাওয়ার দাবি উঠেছে। আপনি ক্ষমা চাইবেন কি না ?এতে সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে সাংসদ বলেন, ‘আমি কার কাছে ক্ষমা চাইব? আল্লাহর কটাক্ষকারীর সাজা হয়েছে। আমি যদি মরেও যাই তাও ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’

একজন শিক্ষককে কান ধরানো অপরাধ ও এতে আইনভঙ্গ হয় এ কথা স্বীকার করে সেলিম ওসমান বলেন, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে বাঁচানোর জন্য তিনি সেটি করেছেন। ইমানদার মুসলমানেরা শিক্ষকের শাস্তি চেয়েছিলেন দাবি করে তিনি সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান, ‘আমরা কি ইবলিসের রাজত্বে বাস করছি? আপনারা জবাব দেন।’

সংবাদ সম্মেলনে সেলিম ওসমান সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, সেদিন ঘটনা শুরু হয়েছিল সকাল ১০টার দিকে। আমি সেখানে গিয়েছি বিকেল চারটায়। গিয়ে দেখি চার থেকে পাঁচ হাজার লোক সেখানে জড়ো হয়েছে। গিয়ে আমি শুনেছি, ওই শিক্ষক একজন ছাত্রকে মেরেছিল। ছাত্র পরে অসুস্থ হয়ে যায়। শিক্ষক বাজার থেকে ওষুধ এনে ছাত্রকে খাওয়ান। ওই ছাত্র আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যেই ওই শিক্ষক ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছে বলে এলাকার লোকজন তাঁকে গণপিটুনি দিয়েছিল। পুলিশ শিক্ষককে একটি ঘরে নিরাপত্তা দিয়ে রাখে। আমি সেখানে যাওয়া মাত্র এলাকার লোক আমাকে বলেছে, ‘ওই শিক্ষককে আমাদের হাতে ছেড়ে দেন।’ কিন্তু আমি কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চাইনি।

সেলিম ওসমান আরও বলেন, আমি তখন শিক্ষকের কাছে যাই। তিনি ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির কথা স্বীকার করেন। শিক্ষকের কাছে জানতে চাই, তোমার কী শাস্তি হবে? তিনি যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবেন বলে জানান। সাংসদকে বলেন, আমার তিন মেয়ে আছে। তাদের বিয়ে হয়নি। সেলিম ওসমান বলেন এ সময় তঁার মনে হয়, তাঁর নিজেরও তিন মেয়ে আছে।

সেলিম ওসমান দাবি করেন, ওই শিক্ষক নিজেই কান ধরে ওঠবস করার প্রস্তাব দেন। এতে আমি রাজি হই। শিক্ষক স্বেচ্ছায় কান ধরে ওঠবস করেন। আমি যা করেছি একজন মানুষের জীবন রক্ষার জন্য।

সেলিম ওসমানের দাবি, ওই দিন তিনিই পুলিশকে বলে ঘটনাস্থল থেকে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। হাসপাতালে সব চিকিৎসার খরচ তিনিই বহন করছেন। শ্যামল কান্তি ভক্তের সঙ্গে তাঁর ফোনে যোগাযোগ হচ্ছে। আজ সকালেও শিক্ষকের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ওই শিক্ষক ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত। বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি ভারতের ভেলোরে যেতে চান। তিনি তাঁকে সহায়তা করবেন।

সরকারি তদন্ত কমিটি শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অবমাননার’ অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পায়নি । এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেলিম ওসমান বলেন, তদন্ত কমিটির কেউ তো আমার সঙ্গে কথা বলেনি। শিক্ষামন্ত্রী তো আমার সঙ্গে কথা বলেননি। শিক্ষামন্ত্রী তাঁর মতো করে কথা বলেছেন। আমার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে ওই শিক্ষক কটূক্তি করেছেন। তিনি নিজে আমার কাছে অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাঁর পরিবার আমার কাছে লিিখত দিয়েছে।

সেলিম ওসমান আরও বলেন, কেউ কেউ বলেছে আমাকে নাকি গণধোলাই দেবে। উপস্থিত নেতা কর্মীদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আমাকে যখন গণধোলাই দিতে আসবে তখন কি আপনারা চুড়ি পরে বসে থাকবেন?’ এ সময় হলভর্তি নেতা কর্মীরা সমস্বরে বলে ওঠেন, ‘না’।

সংবাদ সম্মেলনে সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জে তাঁর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সাংসদ হওয়ার পর তিনি শিক্ষা, চিকিৎসা ও শিল্পায়ন এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন। শিক্ষার উন্নয়নে বিভিন্ন ইউনিয়নে সাড়ে ২২ কোটি টাকা দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীকে মারধর ও ‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির’ অভিযোগে গত শুক্রবার শ্যামল কান্তিকে স্থানীয় সাংসদের উপস্থিতিতে মারধর ও কানে ধরে ওঠবস করানো হয়। পরে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। আজ বেলা ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, ‘ধর্মীয় অবমাননার’ অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পায়নি সরকারি তদন্ত কমিটি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি অন্যায়ভাবে শ্যামল কান্তিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল। তাই ওই কমিটি বাতিল করা হয়েছে। আর শ্যামল কান্তিকে তাঁর স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।

শিক্ষক লাঞ্ছনার বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন ধরেই দেশজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় জাতীয় পার্টির স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানসহ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই রুল দেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন

নারায়ণগঞ্জে জেএমবির দুই সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অপতৎপরতা ও সহিংস ঘটনা সৃষ্টির সময়ে গ্রেফতার নিষিদ্ধবিস্তারিত পড়ুন

আড়াইহাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজালালের ভোট বর্জন

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনিয়ম, জাল ভোট, কেন্দ্রে এজেন্টবিস্তারিত পড়ুন

  • কাউন্সিলর ও তার ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ 
  • দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেন পাপ্পা গাজী
  • সন্ত্রাসী হামলায় আইনজীবী আহত
  • সোনারগাঁয়ে ভোটকেন্দ্রে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবক নিহত
  • নারায়নগঞ্জে কলেজ ছাত্রী যৌন হয়রানি ও লাঞ্চনার শিকার
  • নারায়ণগঞ্জে শ্যালিকাকে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে, দুলাভাই গ্রেপ্তার
  • নারায়ণগঞ্জ ডিবির কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
  • নারায়ণগঞ্জে ছেলের ছুরিকাঘাতে বাবা খুন
  • নর্দমার ভেতর পাঁচ বছর বয়সী শিশুর গলাকাটা লাশ!
  • সাত খুন: ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে বেঞ্চ নির্ধারণ
  • নারায়ণগঞ্জে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা