তারেকের রেড নোটিশ বাতিল, মুখ খুললো পুলিশ
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয়ে ইন্টারপোল রেড নোটিশ বাতিল নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছে বাংলাদেশ পুলিশ। এক বিবৃতিতে তারা জানান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে প্রধানমন্ত্রীকে (তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা) হত্যার প্রচেষ্টা এবং ১৯ জন নেতাকর্মীকে হত্যার অভিযোগে মতিঝিল থানার মামলা করা হয়। এই মামলাসহ অন্যান্য ১৩টি মামলায় চার্জশিটভুক্ত হওয়ায় গতবছরের ১০ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে অনুরোধ করা হয়।
বিচারাধীন পলাতক আসামিকে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারির মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা সম্পূর্ণ বিধি সম্মত এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে প্রয়োজনীয়। বাংলাদেশ পুলিশের রেড নোটিশ জারির অনুরোধে প্রেরিত দলিলাদি ইন্টারপোল সচিবালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বার্থে সম্পূরক তথ্যাদি ও দলিলাদি চেয়ে তা বিশ্লেষণ করে রেড নোটিশ জারি করে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এনসিবি শাখা ধারণা করছে যে, ওই রেড নোটিশ জারির পর তারেক রহমান বিভিন্ন প্রকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক লবির মাধ্যমে সিসিএফের কাছে তার স্বপক্ষে বিকৃত ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করেন, যার প্রেক্ষিতে ইন্টারপোল প্রথমে রিভিউ ও পরে রেড নোটিশ বাতিল করে। রেড নোটিশটি রিভিউ করার পর্যায়ে এর কারণ সম্পর্কে জানতে ইন্টারপোলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায় যে, তারেক রহমান ‘প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস’-এ আছে বিধায় তার রেড নোটিশ বাতিল করার সুযোগ রয়েছে।
‘প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস’ বিষয়টি বোধগম্য না হওয়ায় কে বা কোন দেশ তাকে ‘প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস’ প্রদান করেছে জানতে চাইলে এ সংক্রান্তে ইন্টারপোল থেকে কোনো সন্তোষজনক সাড়া পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, রাজনৈতিক আশ্রয়ের ন্যায় ‘প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস’ ও বিদেশে আশ্রয় গ্রহণের অন্য একটি উপায়। কোনো তদন্তাধীন ফৌজদারী মামলায় ও আসামিদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার বিধান ও দৃষ্টান্ত রয়েছে। তারেক রহমান একাধিক ফৌজদারী মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি, যা আদালতে বিচারাধীন।
এতসত্ত্বেও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারিকৃত রেড নোটিশ কি কারণে প্রত্যাহার হবে তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। তবে যে মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করা হয়েছিল তা কোনোক্রমেই রাজনৈতিক মামলা নয়।
এখানে উল্লেখ্য যে, রাজনৈতিক বিবেচনায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন লোককে ‘প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস’ বা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান করে। সাধারণত যেসব দেশ মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করে না সেসব দেশেই রাজনৈতিক আশ্রয় বা ‘প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস’ পাওয়ার সুযোগ বেশি। অনুরূপ কোনো স্ট্যাটাস কোনোভাবেই বাংলাদেশে ১৪টি ফৌজদারী মামলায় চার্জশিটভুক্ত, আদালতে চার্জশিট গৃহীত এবং বর্তমানে পলাতক অবস্থায় বিচারাধীন কোনো আসামিকে তার দেশে কৃত ফৌজদারী অপরাধের দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করে না।
অনুরূপভাবে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ প্রত্যাহারও কোনোভাবে কোনো অপরাধীকে ফৌজদারী অপরাধ থেকে দায় মুক্তি প্রদান করে না। বিভিন্ন দেশের পুলিশের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত আসামি গ্রেপ্তার, বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ বা সেমিনারের আয়োজন করে বিভিন্ন দেশের পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা ইন্টারপোলের দায়িত্ব।
ইন্টারপোলের সদস্য দেশের ফৌজদারী বিচার কার্যক্রম সে দেশের নিজস্ব পদ্ধতিতে পরিচালিত হয় ও ইন্টারপোলের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট দেশের বিচার কার্যক্রমে কোরোরূপ প্রভাব বিস্তার করে না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন