দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নৌমন্ত্রী
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, সমাজের পিছিয়ে পড়া হরিজন ও দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায় ও তাদের বৈষম্য নিরসনে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, দলিত হরিজনসহ পিছিয়ে পড়া মানুষের পুনর্বাসন ও উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান রোববার দুপুরে রাজধানী সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে রিচার্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট কালেক্টিভ (আরডিসি) ও নাগরিক উদ্যোগের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশে দলিত বা হরিজন সম্প্রদায়ের মানবাধিকার নিয়ে জরিপ ও এ বিষয়ে সমস্যাবলী বিশ্লেষণ শীর্ষক জাতীয় আলোচনা’ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও খ্রিস্টান এইডে’র সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি। এতে নাজমুল হক প্রধান এমপি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, বাংলাদেশে ইউ ডেলিগেশনের টিম লিডার- গর্ভণ্যান্স-এর কাউন্সিলর ড. অ্যানা লিক্সি প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আরডিসি-এর চেয়ারপার্সন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইআইডিএইচআর প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শিরিন খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম খান। প্যানেল ও মুক্ত আলোচনা পরিচালনা করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।
প্যানেল আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী অধ্যাপক সরদার আমিনুল ইসলাম, হরিজন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চন্দ্র দাস ও বিডিইআরএস-এর সহ-সভাপতি মনি রাণী দাস।
নৌ পরিবহন মন্ত্রী বলেন, হরিজন বা দলিতরা অসাধারণ মানুষ। তাদেরকে খাটো বা ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর হরিজন, বেদে, হিজড়াসহ পিছিয়ে পড়া মানুষদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষক, শ্রমিক, কামার, হরিজন, বেদে, কুমারসহ সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে ১৯৭১ সারে দেশ স্বাধীন করেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, হরিজন সম্প্রদায়ের মধ্যে দুইজন মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শাহাদাৎ বরণ করেছেন।
সরকার সমাজের সকল পর্যায়ে মানুষের অধিকারি নিশ্চিত ও বৈষম্য নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শাজাহান খান আরও বলেন, দলিত সম্প্রদায়সহ সকল ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করতে হবে। এজন্য দরকার সামাজিক আন্দোলন। কার্যকরভাবে এই আন্দোলন হলে সকলেই সচেতন হবেন।
সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলেই ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ দলিত, বেদে এবং হরিজন জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেট বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ২০.৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে (এনএসপিএস) দলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
জরিপে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে প্রায় ৫৫ থেকে ৬৫ লাখ দলিত জনগোষ্ঠী বাস করছে। দলিত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সাতটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোটা চালু করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে দলিত জনগোষ্ঠীর সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণার জন্য ২০১৬ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের ১০টি জেলার ২৭টি উপজেলার ৩১টি সম্প্রদায়ের ৪৫৮টি পরিবারের মধ্যে একটি জরিপ এবং চাহিদা বিশ্লেষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
‘দলিত জনগোষ্ঠীর অধিক অংশগ্রহণ এবং ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের দৃশ্যমান মানবাধিকার এবং সেবাপ্রাপ্তির অধিকারসহ নিশ্চিতকরণ প্রকল্পে’র অধীনে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দলিত জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগ মানুষই স্বল্প শিক্ষিত। ৩৫% পরিবারের সদস্য লিখতে ও পড়তে পারেন না। শুধুমাত্র ৩৫% প্রাথমিক শিক্ষা এবং ১৯% মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেছেন। ৭৩% পরিবারের দলিত নারীরা গৃহিণী এবং অবশিষ্ট সকলে দিনমজুর অথবা কোন নিচু পেশার সাথে যুক্ত।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন