দুই যুগ আগেই মার্কিন নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যৎবানী করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেই দুই যুগ আগেই তিনি ভবিষ্যৎবানী করে গেছেন জনপ্রিয় লেখক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ। দুই যুগেরও বেশি সময় আগে প্রকাশিত তার বই ‘মে ফ্লাওয়ার’ নিয়েই মূল আলোচনাটা হচ্ছে। এ বছর নির্বাচনে জিতে গেলে হিলারি ক্লিনটনই হতেন প্রথম নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জনপ্রিয়তা ও নানা কারণে বিশ্ববাসীও নিশ্চিত ছিল হিলারির প্রেসিডেন্ট হওয়া নিয়ে। নির্বাচনে হিলারি দুই লাখ ভোট বেশি পেয়েও না জেতায় হতবাক বিশ্ববাসী। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ জীবিত থাকলে তিনি নিশ্চয়ই অবাক হতেন না। কারণ সেই দুই যুগ আগেই তিনি ভবিষ্যৎবানী করে গেছেন, আগামী ১০০ বছরেও আমেরিকা নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে না।
‘মে ফ্লাওয়ার’ বইতে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন, আমরা আমাদের দেশে একজন মহিলা রাষ্ট্রপ্রধানের কথা চিন্তা করতে পারি। ভাবতে পারি। ওরা (আমেরিকান) তা পারে না। আসছে একশ’ বছরেও এই আমেরিকায় কোনো মহিলা প্রেসিডেন্ট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট হবে না। অতি সুসভ্য এই দেশ তা হতে দিবে না।
আমেরিকার নাগরিকদের চিন্তাভাবনার সমালোচনা করে বইটিতে হুমায়ূন আহমেদ আরও লিখেছেন, একটি আমেরিকান পরিবারের জীবনচর্চা চিন্তা করলেই কষ্ট হয়। ওরা কি হারাচ্ছে তা বুঝতে পারে না। আমরা যারা বাইরে থেকে আসি বোঝাতে পারি কিংবা বোঝার চেষ্টা করি। আমি আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় যা বুঝেছি তা হলো, এদের সবার চিন্তাভাবনা সীমাবদ্ধ। বস্তুকেন্দ্রিক। একটি মেয়ের জীবনের সর্বোচ্চ আকাঙ্ক্ষা হলো চিয়ার লিডার হবে। ফুটবল খেলার মাঠে স্কাট উঁচিয়ে নাচবে। স্কাটের নিচে তার সুগঠিত পদযুগল দেখে দর্শকরা বিমোহিত হবে। এই তার সবচেয়ে বড় চাওয়া। একটি ছেলে চাইবে মিলিওনিয়ার হতে। এই অতি সভ্য (?) দেশে আমি দেখি মেয়েদের কোনো সম্মান নেই। একজন মহিলাকে তারা দেখবে একজন ‘উইম্যান’ হিসেবেই। একটি মেয়ের যে মাতৃরূপ আছে, যা আমরা সব সময় দেখি, ওরা তা দেখে না। একটি মেয়ে যতদিন পর্যন্ত শারীরিকভাবে আকর্ষণীয়, ততদিন পর্যন্তই তার কদর।
হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন, যা কিছু হাস্যকর, তার সবই এদের ভাষায় মেয়েলি, এফিমিনেট। শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য, এই দেশে মেয়েরা একই যোগ্যতায় একই চাকরিতে পুরুষের চেয়ে কম বেতন পান। বিমানের ক্যাপ্টেন যদি মহিলা হন তাহলে বিমানের যাত্রীদের তা জানানো হয় না। ক্যাপ্টেন পুরুষ হলে তবেই শুধু বলা হয়- আমি অমুক, তোমাদের বিমানের ক্যাপ্টেন। মহিলা ক্যাপ্টেনের কথা বলা হয় না। কারণ, মহিলা বিমানের দায়িত্বে আছেন জানলেই যাত্রীরা বেঁকে বসতে পারেন। আমাদের দেশে মেয়েদের অবস্থা খারাপ, তবু একজন মহিলা ডাক্তার একজন পুরুষ ডাক্তারের মতোই বেতন পান। কম পান না। জাতির শরীর যেমন আছে আত্মাও আছে। এই দেশের শরীরের গঠন চমৎকার কিন্তু আত্মা। এর আত্মা কোথায়?
মার্কিন গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী হিলারিই নির্বাচনী দৌঁড়ে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু সেই জরিপ ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। এসব জরিপের কঠোর সমালোচনা করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তিনি ওই বইয়ে আরও লিখেছেন, আমেরিকানরা খুব জরিপের ভক্ত। সব কিছুরই জরিপ হয়ে যাচ্ছে। জরিপ চালাচ্ছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। টাকার বিনিময়ে তারা জরিপ করে দেবে। হেন বিষয় নেই যার ওপর তারা জরিপ করেনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন