দেখে মনে হয় বছরখানেক বয়স, কিন্তু এই গাছের পিছনে লুকিয়ে আছে হাজার বছরের রহস্য!
গোটা ইউরোপের সবচেয়ে পুরনো বৃক্ষের তালিকায় আরেকটি নাম যোগ হলো। গাছটি দেখলে অবশ্য মনে হতে পারে বছরখানেক বয়স। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, গাছটি বেড়ে উঠেছে হাজার বছর ধরে।
গ্রিসের পিন্ডাস পার্বত্য অঞ্চলে এর অবস্থান। বিজ্ঞানীরা জানান, এটি বোসনিয়ান পাইন (বৈজ্ঞানিক নাম পিনাস হেলড্রিচিল) যার মূল সেই ৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে মাটিল সংস্পর্শ পায়। ধারণা করা হচ্ছে এই বৃক্ষটিকে ‘অ্যাডোনিস’ বলে ডাকা হতো। গ্রিকপুরাণে অ্যাডোনিস হলেন সৌন্দর্য, তারুণ্য ও আকাঙ্ক্ষার দেবতা।
সুইডেনের স্টকহাম ইউনিভার্সিটির ডেনড্রোক্রোনলজিস্ট এবং বিজ্ঞানী দলের প্রধান পল জে ক্রুসিক জানান, এই উদ্ভিদের জটিল বায়োলজি প্রতিকূল পরিবেশে এই বিস্তর সময় ধরে কীভাবে টিকেছিল তা বিস্ময়কর ব্যাপার। এমন এক স্থানে এই বৃক্ষের অবস্থান যেখানে মানব সভ্যতার বয়স ৩ হাজার বছরেরও পুরনো।
নাভারিনো এনভায়রোনমেন্টাল অবজারভেটরি (নিও) পরিচালিত এক গবেষণা অভিযানে এই গাছটিকে খুঁজে পাওয়া যায়। অভিযাত্রী দলটি ওই অঞ্চলের প্রাচীন আমলের জলবায়ু বুঝতে বৃক্ষদের নিয়ে গবেষণা করছিল। সেখানেই মিলে যায় এ বৃক্ষ। এখানে প্রাচীন বৃক্ষ সম্পর্কে আগেই শুনেছিলেন ক্রুসিক। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো গবেষণায় আসার সুযোগ হয়।
অ্যাডোনিসের বয়স বের করতে দলটি গাছের গভীর ড্রিল করেন। তারা ‘ট্রি রিং’ গণনা করেন যার প্রত্যেকটি এক একটি মৌসুমের হিসাব দেয়। এসব ট্রি রিংয়ের ঘনত্ব এবং রং সেই সময়কার জলবায়ু বুঝতে সূত্র দেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে এর বয়স ঘোষণার আগে তারা বনের অন্যান্য গাছের ট্রি রিংয়ের সঙ্গে অ্যাডোনিসের ট্রি রিং মিলিয়ে দেখেন। কারণ অনেক সময়ই খরা কিংবা অন্যান্য পরিবেশগত কারণে ট্রি রিং নিয়মিত নাও হতে পারে। অন্যান্য গাছের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে বয়সের হিসাবটি নিখুঁত হয় বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
যাবতীয় হিসাব-নিকাশে বেরিয়ে আসে যে অ্যাডোনিসের বয়স ১০৭৫ বছর। সেই সময় ইউরোপ দাপিয়ে বেড়াতো ভাইকিংরা।
তবে ইউরোপের আরও পুরনো গাছের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যেমন ওয়েলসের ল্যানগারন্যু ইয়েউ গাছটির বয়স ৩ হাজার বছর। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এর বয়স ঘোষিত হয়নি। এছাড়া ডেনমার্কের রয়্যাল হান্টিং ফরেস্টের কনগিজেন বা রাজার বৃক্ষটির বয়স ধরা হয় দেড় হাজার থেকে ২ হাজার বছর।
এ পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন গাছের নাম হিসাবে তুলে ধরা হয় ক্যালিফোর্নিয়ার হোয়াইট মাইন্টেনস-এর একটি বৃক্ষকে। এর বয়স ৫০০০ বছর। এছাড়া আরও ডজনখানেক উদ্ভিদ রয়েছে যাদের বয়স ৩০০০-৩৫০০ বছরের মধ্যে।
এদিকে, উতাহ-এর প্যান্ডো নামে পরিচিত কোয়াকিং অ্যাসপেনের ক্লোনাল কলোনিকে ৮০ হাজার বছরের পুরনো বলে মনে করা হয়। এগুলো অনেকগুলো গাছের কলোনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন