ধর্ষণচেষ্টার অভিযুক্ত যুবক উপজেলা চেয়ারম্যানের নাতি বলেই এমন শাস্তি!
ধর্ষণের চেষ্টার দায়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় এক যুবককে পাঁচবার কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসহাক এই রায় দিয়েছেন। এদিকে লঘু দণ্ডপ্রাপ্ত ওই যুবক খোদ উপজেলা চেয়ারম্যানের দুঃসম্পর্কের নাতি বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বিগত ২২ জুন বিকেলে গোদাগাড়ী পৌরসভার শিবসাগর মহল্লায় এই ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় মহিষালবাড়ি বাজার সংলগ্ন নওশাদ আলীর বাড়ির উঠোনে গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। পরে সালিশি বৈঠকের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসহাক এ রায় ঘোষণা করেন। ওই সালিশে পৌরসভার মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবুসহ আরোঅনেকে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২২ জুন বিকেলে শিবসাগর মহল্লার মো. বাবলুর ছেলে রায়হান হোসেন ওরফে নবাব (২০) তার প্রতিবেশি এক স্বামী পরিত্যক্তা যুবতীর বাড়িতে ঢুকে তাকে (১৯) ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ওই সময় ওই যুবতী বাড়ি থেকে পালিয়ে বাইরে গিয়ে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় প্রতিবেশিরা এগিয়ে গেলে অভিযুক্ত যুবক পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা করার উদ্যোগ নেন ওই যুবতীর বাবা। কিন্তু রনি নামে ওই এলাকারই এক ব্যক্তি মামলা করলে যুবতির মায়ের গলা কেটে নেয়ার হুমকি দেয়। এতে পরিবারটি আর থানায় যাওয়ার সাহস পায়নি। বাধ্য হয়ে তারা এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেন।
পরে বিগত ২৫ জুন রাতে এলাকার রফিক মাস্টারের বাড়িতে সালিশ বৈঠক বসে। এ সময় গোদাগাড়ী পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বেলাল হোসেনসহ এলাকাবাসী অভিযুক্ত নবাবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নবাবের সহযোগী চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রনি ও তার লোকজন বৈঠক ভণ্ডুল করে দেয়।
পরে এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় আবার সালিশি বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে ওই যুবতি হাজির হয়ে তাকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনার বিবরণ দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরাও এ ঘটনার সাক্ষী দেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান নবাবকে ২০ বার কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন। এ সময় ওই যুবক কান ধরে উঠবস শুরু করলে পাঁচবার কান ধরে উঠবসের পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ওই যুবতীর পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবক সম্পর্কে উপজেলা চেয়ারম্যানের নাতি। তাই তাকে এমন লঘু দণ্ড দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে তারা হতাশ। বিচারে কোনো শাস্তি না হওয়ায় নবাবের পরিবারের লোকজন এখন তাদের নিয়ে তামাশা করছেন বলেও অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসহাক বলেন, ‘ঘটনাটি ধর্ষণের চেষ্টার মতো কিছু না।’ তাহলে কেন পাঁচবার কান ধরে উঠবস করানো হলো, জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন অফিসে আছি। কথা বলতে পারবো না।’ এরপরই তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
গোদাগাড়ী থানার ওসি হিপজুর আলম মুন্সি বলেন, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি তাকে কেউ জানায়নি। সালিশ ডাকা হয়েছে, তাও জানানো হয়নি। অথচ এসব ঘটনা গ্রাম্য সালিশে বিচার করার ক্ষমতা কারো নেই। ভুক্তভোগী পরিবারটি মামলা করলে সাথেসাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন