ধর্ষিতা মেয়েটির গল্প
পারিনি সেদিন নিজেকে শোষকদের হাত থেকে রক্ষা করতে, পারিনি সেদিন নিজেকে রক্ষা করতে তবু আমি বেঁচে আছি । তবে নিজেকে শেষ করতে নয় বরং নিজেকে গড়ে তুলতে বেঁচে আছি।
সে রাত হয়তো কালো রাত ছিলো, তবে তো চেষ্টাও করেছিলাম নিজেকে রক্ষা করতে। তবে কি পেরেছিলাম সেদিন রক্ষা হতে? শুকর যেমন গন্ধ শুকে খাবার খুঁজে ঠিক সেভাবেই সেদিন আমি তাদের খাবার ছিলাম, বয়সটা মাত্র তের ছিলো। রক্ত মাখা শরীর নিয়ে পড়েছিলাম সেই স্থানে তবুও ধর্ষক নামক শোষকদের মায়া হয়নি সেদিন কারণ আমি ধর্ষিতা সে সময়। কিছুই বুঝি না তখন, ব্যথা সহ্য করে সেদিন ধর্ষকদের খাবার হয়ছিলাম । তবে সে তো সমাজ বুঝে না, কারণ সে সময় সমাজে আমি কলঙ্কিনী।
–
একসময় মা বাবারও মন-মালিন্য, যেনো আমি এক ভারী বস্তু তাদের কাছে । একসময় আমাকে নিয়ে ঝগড়া হতে হতে কত রাত, না ঘুমিয়ে কাটিয়েছে সে হয়তো জানা নেই মা বাবার ও। আত্নহত্যা নামক সেই জঘন্য কাজেও চেয়েছিলাম যুক্ত হতে কত রাত সে মনে নেই তবে ইচ্ছের বিরুদ্ধে আত্নহত্যা নামক জঘন্য কাজটি করিনি।
–
তবে কি আমি নারী হয়ে ভুল করেছি নাকি তারা পুরুষ হয়েও সমাজের চোখে হিজরা হয়ে বেঁচে আছে । যাদের কাছে ন্যায় নেই তাদের তো হিজরা ও বলা যায় না, সমাজে একটা নিকৃষ্ট পশু ছাড়া কিছুই না তারা। আমি মেয়ে হয়ে কোন ভুল করিনি, তবে সবার চোখে এখন ধর্ষিতা তবুও বলি আমি দোষী নই। তবে কেউ কি সে শুনবে? তবে কি সেই হিজরা গুলো তার আপন মা বোনকেও এভাবে… ছি বলতে ঘৃণা হয় তবুও বলতে হয় ।
–
আস্তে আস্তে বড় হই,কারণ নিজেকে শেষ করে দিতে জন্ম নেয় নি, অন্যসব মেয়ের মত পতিতা ও হবো না, এই সমাজেই নিন্দুকের কথা সহ্য করবো।
–
বড় হতে থাকি আমি।
বয়সটা যখন ২০ তখন প্রাপ্ত বয়স্ক , সবার মুখ থেকে ৭ বছর আগে কাহিনী ভুলে গেলেও আমাকে দেখলে ঠিকই মনে পরে যায়, বিয়েরদেয়ার জন্য বাসা থেকে চাপ দিচ্ছিলো তবে আমি মানা করেই যাচ্ছিলাম, কারণ যারা বিয়ে করতে চায় তারা আমাকে দয়া দেখিয়ে বিয়ে করতে চাচ্ছিলো। তবে কেনো দয়া নিয়ে বাচঁবো? আমি ধর্ষিতা হয়ে সবার চোখে খারাপ হবো কেনো? মূর্খ কি তবে পুরো সমাজ নাকি আমি নিজে?
–
কেউ বুঝতে চায় না কিভাবে হলো, সবাই শুধু বলবে তুমি ধর্ষিতা ।
–
কেনো অপমান সহ্য করবো আমি ,আমার মত যারা হয়েছে তারা কেনো সহ্য করবে? যে হিংস কুকুরের জাতগুলো আমাকে খামচে ধরেছিলো, তারাতো ঠিকই বেঁচে আছে তাও আবার সমাজে সম্মান নিয়ে, তবে আমি কেনো মাথা উচু করে বাঁচতে পারবো না? আমি কেনো পতিতাদের সম্মান পাবো।।
–
আমার দিক কেনো সবার অন্য নজরে চোখ যাবে ,কারণ কি আমি সেদিন নিজেকে শেষ করে দেয় নি বলে?
—
সমাজ শিক্ষা দেয় কেউ নিন্দা করবে না, কেউ কারো ক্ষতি করবে না, তবে আমি কি ক্ষতিগ্রস্থ হইনি? কেনো আজও বাবা মা সবার চোখে খারাপ কেনো?
–
তবে যারা নিজের দেহ ইচ্ছে করে দিয়ে সমাজে সবার চোখে বড় ব্যক্তি ফেমাস ব্যক্তি তারা কেনো মাথা উচু করে বেঁচে আছে? আমি ভাইরাল হয়েছি বলে আমি পতিতার ন্যায়, তবে মডেলগুলোর ভাইরাল হলেও তারা উচু পর্বের কারণ তারা নিন্দুকদের নিজেকে খাবার বানিয়ে দেয়।
–
আজ সুন্দরী হয়েও জন্ম নেয়া যাবে না,তবে অন্যের চোখের ধর্ষিতা হবো,আর বোরকা পরে বের হলে জঙ্গী নামক শব্দটি শুনবো। কুকুরের বাচ্চা গুলো মাথা উচু করে বেঁচে যাবে,তবে আমি যতদিন বাঁচবো সেই ধর্ষিতা নামক শব্দটি নিয়েই বাঁচবো।
–
ধর্ষক চায় দেহের স্বাদ, তবে সে পথে যে দেহ বিসর্জন দিচ্ছে সে ফেমাস না হয় পতিতা। তবে আমার মত হাজারো মা বোন তাদের শিকার হচ্ছে তবে তাদের কি বলবো । মানুষ হয়েও কুকুরের মত আচরন ধর্ষকদের, তবে সমাজের চোখে কুকুর হয়ে দাঁড়িয়েছি আমার মত হাজারো ধর্ষিতাগুলো।
লেখাঃ নাহিদ আহমেদ (সংগৃহিত)
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন