নওগাঁয় পানিফল চাষে স্বাবলম্বী সাইদুর রহমান
নাজমুল হক নাহিদ, নওগাঁ প্রতিনিধি: নিজের জমিজমা বলতে কিছুই নেই। সারা বছর মওসুমি ফলের ব্যবসা ও অন্যের জমি বর্গা করেন। আর এ থেকে সারা বছর টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে তিন সদস্যের ভরন পোষণ চলতো। পরে পানিফল চাষ করে ভাগ্য বদলে যায়। স্বল্প সময়ে ও কম পরিশ্রমে পানিফল চাষে লাভবান হয়েছেন। সংসার থেকে অভাব দূর হয়েছে। ফলের ব্যবসা করে এখন স্বাবলম্বী সাইদুর রহমান (৪০)। তাঁর বাড়ী নওগাঁর মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের পারইল গ্রামে।
সাইদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন খাল বিল, নদী, নালা ডোবা ও পুকুরে পানিতে বাণিজ্যিকভাবে পানিফল চাষ করা হয়। পানিফল বাজারের সবচেয়ে সস্তা ফল। স্বল্প সময়ে কম পরিশ্রমে অধিক ফলন হওয়ায় অনেকেই আগ্রহ করে চাষ করেন পানিফল। আষাঢ় মাসের বৃষ্টিতে যখন জলাশয়গুলোতে পানি জমে তখন সে পানিতে পানিফলের চারা ছেড়ে দেয়া হয়। পানিতে ছড়ানোর তিনমাস পর থেকেই পানিফল পাওয়া যায়। ভাদ্র মাস থেকে গাছে ফল আসা শুরু করে এবং কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত ফল বিক্রি শুরু হয়। শুরুতে ফল কম আসায় মাসে দু’তিনবার ফল সংগ্রহ করা হয়। তবে গাছে বেশি ফল আসা শুরু হলে প্রতি সপ্তাহে ফল সংগ্রহ করা হয়। জলাশয়ে হাটু সমান পানি থাকলে নেমে পানিফল সংগ্রহ করে। আবার পানি বেশি থাকলে নৌকায় চড়ে পানিফল সংগ্রহ করা হয়।
সাইদুর রহমান বলেন, গত ২০ বছর আগে বিয়ে করার পর সংসারে অভাব নেমে আসে। এরপর স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে বাড়ীর পাশে ডোবায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে পানিফল চাষ করি। সে বছর ভাল লাভ পেয়েছিলাম। এরপর পরের বছর ধারদেনা করে বেশি পরিমান জমিতে পানিফল চাষ করা হয়। গত ২০ বছর যাবৎ পানিফল চাষ করে আসছেন। এবার ১৭ হাজার টাকায় ১৬ বিঘা জমি ১ বছরের জন্য লীজ নিয়ে দেশিয় জাতের পানিফলে চাষ করেছি।
তিনি বলেন, কীটনাশক, শ্রমিক, সার দিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বীজ নিজের থাকায় খরচ কিছুটা কম হয়েছে। বীজ কিনতে হলে প্রায় ১০/১৫ হাজার টাকা বেশি লাগত। পানিফল গাছে একধরনের লতি হয়, সেই লতি তুলে রেখে পানিতে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এছাড়া কাটিং থেকেও এর বংশবিস্তার হয়। এ মওসুমে প্রায় ২ লাখ টাকার মতো বিক্রি হবে। পাশাপাশি মওসুমে আম, জলপই ব্যবসা করা হয়। তবে স্বল্প পরিশ্রমে ও কম সময়ে পানিফলে একটি লাভজনক ব্যবসা।
সাইদুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত তিন বার পানিফল সংগ্রহ করেছেন। এবং প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়েছে। বাজারের এখন ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা মণ। ৬জন শ্রমিক দিয়ে মাসে ২ বার ফল উঠান। প্রতিজনকে ২শ’ টাকা মজুরি দিতে হয়। রাজশাহীতে পাইকারি বিক্রি হয়। এছাড়া স্থানীয়রা খুচরা নিয়ে বিক্রি করেন।
স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, আগে সংসারে অনেক অভাব ছিল। ধারদেনা করে চলতে হতো। ২০ বছরে থেকে ফলের ব্যবসা করেই ১৮ কাঠা ফসলি জমি বন্ধক ও আড়াই বিঘা জমি বর্গা চাষ করেন। দিয়েছেন ইটের দুই ঘরে টিনের ছাউনি। মেয়ে সুমাইয়াকে এবার এসএসসি পাশ করিয়েছেন। আল্লাহ আমাদের দিকে মুখ তুলে দেখেছেন।#
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নওগাঁয় পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত
নওগাঁর মান্দায় পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন।বিস্তারিত পড়ুন
এ দুর্ভোগের শেষ কোথায় ?
নাজমুল হক নাহিদ,আত্রাই (নওগাঁ) থেকে: এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়, আরবিস্তারিত পড়ুন
আত্রাইয়ে ৩ গ্রামের মানুষের নদী পারাপারে নৌকায় একমাত্র ভরসা
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) থেকেঃ নওগাঁর আত্রাইয়ে একটি ব্রিজেরবিস্তারিত পড়ুন