নানিয়াচর উপজেলার পানছড়ি মূখ সঃ প্রাঃ বিঃ আদিবাসী শিশুদের স্বেচ্ছায় মাতৃভাষার পাঠদান দিচ্ছেন সুজন চাকমা
সুপ্রিয় চাকমা শুভ, রাঙামাটি প্রতিনিধিঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালের শুরুতেই ১ই জানুয়ারীতে রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন প্রাথমকি বিদ্যালয়ে চাকমা,মারমা,ত্রিপুরা ভাষা প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও পৌছায় নি চাকমা,মারমা,ত্রিপুরা ভাষার নিজস্ব মাতৃ ভাষার বই। নিজস্ব মাতৃভাষার বই বাংলাদেশ সরকার বিতরণ করলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে নিজস্ব মাতৃভাষার বই পাইনি পানছড়ি মূখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাই চাকমা ভাষার অগ্রগতি ও বিকাশ ঘটাতে বিনা পয়সায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে পাহাড়ি শিশুদের চাকমা ভাষা শিক্ষা পাঠ দানের জন্য চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী সুজন চাকমা। তিনি পাহাড়ি শিশুদের রাঙামাটি জেলার নানিয়াচর উপজেলায় ৩ নং বুড়িঘাট ইউনিয়নের শৈলেশ্বরী গ্রামের পানছড়ি পাড়ার পানছড়ি মূখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকমা ভাষা পাঠ দান দিয়ে যাচ্ছেন। পানছড়ি মূখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেল চাকমার সহযোগিতায় সুজন চাকমা তার এই মহতী উদ্যোগ এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
এব্যাপারে নানিয়াচর উপজেলার শিক্ষা ভবনের সহকারী কর্মকর্তা দীপিকা খীসা বলেন, সুজন চাকমা এই স্বেচ্ছায় পাঠদান খবরটি জেনে আমি অত্যান্ত খুশি হয়েছি। আমি তার এই মহতী কার্যক্রমকে অভিনন্দন জানাই। কেননা স্বেচ্ছায় কাজ করা ব্যক্তি ও স্বেচ্ছায় শিশুদের মাঝে পাঠদান প্রশংসনীয়।
পানছড়ি মূখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেল চাকমার কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালের শুরুতেই ১ই জানুয়ারীতে রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন প্রাথমকি বিদ্যালয়ে চাকমা,মারমা,ত্রিপুরা ভাষা প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলেও আমাদের বিদ্যালয়ে এখনও পৌছায় নি চাকমা,মারমা,ত্রিপুরা ভাষার নিজস্ব মাতৃ ভাষার বই । আমাদের বিদ্যালয়ে যদিবা এই চাকমা ভাষার বিষয়ে কোন শিক্ষক নিয়োগ না তাকলেও সুজন চাকমা নিজ মাতৃভাষার শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে যে পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন তা আমি স্বাগত জানাই। সুজন চাকমার স্বেচ্ছায় পাঠ দানের ফলে বিদ্যালয়ের ৩৮-৪০ জন শিশু নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা অর্জন করার সুযোগ পাচ্ছে। তাই আমি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের অনুমতি দিয়ে দিই। এমনকি এই মহতী কাজকে পানছড়ি মূখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেসেজিং কমিটির সভাপতি অনিল করণ চাকমা স্বাগত জানান।
স্বেচ্ছায় পাঠদান দেওয়া শিক্ষক সুজন চাকমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, আমি বাবা মার প্রথম সন্তান । ২০১২ সালে নানিয়াচর কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করি। এবং অত্র কলেজে ডিগ্রীতে শেষ বর্ষে অধ্যায়নরত আছি। আমি পাহাড়িদের মধ্যে লক্ষ্য করেছি চাকমা হয়ে নিজ মাতৃভাষা চাকমা অক্ষরে লেখা-লেখি করতে পারেনা। আমি আমাদের মাতৃভাষা চাকমা অক্ষর গুলো শিখে এখন ভবিষৎ পাহাড়ি শিশুদের মাঝে নিজ মাতৃভাষা শিক্ষার বিকাশ ঘটানোর চেষ্ঠা করতেছি। আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২০১৭ সালের শুরুতেই ১ই জানুয়ারীতে রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন প্রাথমকি বিদ্যালয়ে চাকমা,মারমা,ত্রিপুরা ভাষা প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পদক্ষেপ গ্রহনকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমি ২০১৬ সালের ৫ই জুলাই থেকে আমার নিজস্ব উদ্যোগে নিজ মাতৃভাষার পাঠ দান শুরু করি। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে বই না থাকায় এবং সরকার বা কোন এনজিও সহযোগিতা না পাওয়ায় এই কার্যক্রম চালাতে বিগ্ন ঘটে। এই পাঠদানের জন্য আমাকে চাকমা ভাষার গভেষক প্রসন্ন কুমার চাকমা , আইএসডি কর্তৃপক্ষ ও পানছড়ি মূখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেল চাকমা স্যার সাহায্য করার ফলে ২০১৭ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে কার্যক্রম শুরু করতে পারি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাজেকে ডাম্প ট্রাক উল্টে ৬ শ্রমিক নিহত
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে শিজকছড়া-উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রিবিস্তারিত পড়ুন
ভূমিধসে তিন সন্তানকেই হারালো যে দম্পতি
বান্দরবান শহর থেকে দুতিন কিলোমিটার দূরবর্তী এক পাহাড়ী গ্রাম লিমুভিরি।বিস্তারিত পড়ুন
৫ জুন রাঙামাটিতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ
শুক্রবার রাঙামাটির লংগদুতে এক যুবলীগ নেতাকে হত্যার ঘটনার জের ধরেবিস্তারিত পড়ুন