নারায়ণগঞ্জ শহরে সাংবাদিকের স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত
নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলায় বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির জেলা কমিটির সভাপতি ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আবু সাউদ মাসুদের স্ত্রী ক্যামেলিয়া আক্তার নাসরিনকে (৩৮) ছুরিকাঘাত করে মারাত্মক জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।
পারিবারিক বিরোধে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলা এলাকার নিজ বাসায় ওই ঘটনা ঘটে। পরে নাসরিনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদ দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা ছাড়াও স্থানীয় দৈনিক সোজা সাপটার সম্পাদক যিনি এর আগে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি ছিলেন। তবে সম্প্রতি প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ তার সদস্য পদ বাতিল করলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালেও এখনো কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি। এ কারণে প্রেসক্লাবের নির্বাচনও স্থগিত রয়েছে।
আহত সাংবাদিকের স্ত্রী ক্যামেলিয়া আক্তার নাসরিন বলেন, বুধবার বিকেলে ‘নামাজ পড়ার সময় বাসার বাইরে থেকে তার ছেলের মতো করে দরজায় নক করতে থাকে। পরে দরজা খুলতে বাইরে থেকে একজন নারী ও তিনজন পুরুষ তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে।
এসময় একজন ধারালো ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করার পর সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে বাসা ছেড়ে চলে না গেলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা।
নাসরিন আরো বলেন, ৪ থেকে ৫ দিন আগে এরাই একবার বাসায় এসে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছিল। তবে ওই সময় তাদের কোনো প্রতিবাদ না করে বাসায় দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ওই সময়ও তারা হুমকি দেয় বাসা ছেড়ে না গেলে মেরে ফেলবো। তাদের কারো মুখোশ ছিল না। তবে তারা আমাকে আঘাত করার পর আমার বাসা থেকে কোনো কিছু নেয়নি।
এদিকে সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদ বলেন, কে বা কারা এমন কাজ করেছে এটা আমার জানা নেই। তবে সন্দেহ হচ্ছে তিনটি বিষয়ে। প্রথমটি হলো নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের বিরোধ নিয়ে। তারা আমাকে দমানোর জন্য কিংবা আমাকে শায়েস্তা করার জন্য এমন কাজ করতে পারে। কারণ প্রেসক্লাবের নির্বাচন আমি মামলা করে আটকে দিয়েছি।
দ্বিতীয়টি হলো আমি যে এলাকায় থাকি সেটা হলো মাদকের ট্রানজিট পয়েন্ট। আমার স্ত্রী এ মাদকের প্রতিবাদ করে অনেকটা বন্ধ করেছে। এমনকি মনির নামে এক মাদক ব্যাবসায়ীকে ধরে আটকে রাখে। পরে আমি ফতুল্লা থানা পুলিশকে খবর দিয়ে তাকে পুলিশে দেই। যার কারণে মাদক ব্যবসায়ীদের সন্দেহ হয়। এগুলো ছাড়াও আরেকটা সন্দেহ হলো আমার সাত বছর আগে তালাক দেওয়া প্রথম স্ত্রীর বিরুদ্ধে। তালাকের বিষয়ে হয়তো এমন ক্ষতি করে থাকতে পারে।
সাংবাদিকের স্ত্রীর উপর হামলা ঘটনায় তাৎক্ষনিক হাসপাতালে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হকসহ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শরফুদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন জানান, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সাংবাদিকের মাসুদের স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তারপরও ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনার জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন
নারায়ণগঞ্জে জেএমবির দুই সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অপতৎপরতা ও সহিংস ঘটনা সৃষ্টির সময়ে গ্রেফতার নিষিদ্ধবিস্তারিত পড়ুন
আড়াইহাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজালালের ভোট বর্জন
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনিয়ম, জাল ভোট, কেন্দ্রে এজেন্টবিস্তারিত পড়ুন