নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নিষ্পত্তিতে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের লামাম ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মনিটরিং সেল গঠনে নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
রায় প্রদানকারী বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে ১০ পৃষ্ঠার এ রায় ১১ মে বৃহষ্পতিবার প্রকাশিত হয়।
হাইকোর্টে এ মামলার আইনজীবী কুমার দেবুল দে জানান, ‘এ রায় বাস্তবায়ন হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।’ এ রায়কে সময়োপযোগী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হলে কেন হয়নি তার কারণ উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে এক মাসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে প্রেরণের বিধান রয়েছে।
একইসঙ্গে মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী কর্মকর্তাকেও অনুরূপ প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিলের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বিচারক, পিপি ও তদন্তকারী কর্মকর্তা কেউই এই বিধান যথাযথভাবে পালন করছে না। এই বিধানটি যথাযথভাবে পালনের লক্ষ্যে একটি মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এই সেল গঠন করতে বলা হয়েছে। গঠিত ওই সেলের প্রধান হিসাবে রেজিস্ট্রার জেনারেল নিজেও থাকতে পারেন। যদি তিনি না থাকেন তাহলে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে ওই সেলের প্রধান করতে বলা হয়েছে।
প্রকাশিত রায়ে বলা হয়েছে, এই মনিটরিং সেল ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়া নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলার বিষয়ে বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী কর্মকর্তার পাঠানো প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে অধস্তন আদালত সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের কমিটির কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন। মনিটরিং কমিটির ওই প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে সুপ্রিমকোর্টের ওই কমিটি এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩১(ক)(৩) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ মনিটরিং সেলে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব অথবা তাদের দু’জন প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের ওই দু’জন প্রতিনিধি অতিরিক্ত সচিব পর্যাদার নিচে হবে না বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মিলাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়। ঘটনার দিনই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। ওই বছরের শেষের দিকে মামলাটি চট্রগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ বিচারের জন্য যায়। চলতি বছরের ২১ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। অভিযোগ গঠনের পর সাত মাসেও কোন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আইনানুযায়ী মামলাটি ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ায় আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী কুমার দেবলু দে।
গত ১ নভেম্বর ওই জামিন আবেদনের শুনানিকালে আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। এরপর আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান প্রতিপালন করতে এই মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দিয়ে এ রায় দেয়। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ প্রকাশিত হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন