পাঠ্যবইয়ের কিউআর কোড, স্ক্যান করলেই আসছে নারীদের ‘অন্তর্বাস’ বিক্রির ওয়েবসাইট
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত পাঠ্যবই নিয়ে যেন বিতর্ক পিছু ছাড়ছেই না। একের পর এক নতুন নতুন অসঙ্গতি সমালোচনার তীর হয়ে উঠে আসছে অভিভাবক ও সচেতন মহলের সামনে।
শরীফার গল্পের তুমুল বিতর্কের পর এবার সামনে এলো বিব্রতকর উপাদানের নতুন প্রসঙ্গ। যা নিয়ে কথা বলতেও বিব্রত হচ্ছেন অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিক সমাজ। এবার পাঠ্য বইয়ে পাওয়া গেছে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ‘অন্তবাস’ বিক্রির ওয়েবসাইটের ঠিকানা।
সম্প্রতি সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের আলোচিত ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্প বাদ দিতে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশেষজ্ঞ কমিটির দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার জানানো হয়েছে এর পরিবর্তে নতুন গল্প যুক্ত হবে।
শরীফার গল্প নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় হয়েছিল সম্প্রতি। তুমুল সমালোচনা ও বিতর্ক উঠেছিলো এই গল্পের উপস্থাপনা নিয়ে। সেটা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত অবশেষে হলো। কিন্তু এরইমধ্যে উঠে এলো পাঠ্যবইয়ের এই ‘অন্তর্বাস’ প্রসঙ্গ।
জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যসূচির নবম শ্রেণির ‘জীবন ও জীবিকা’ বইয়ে একটি কিউআর কোড সংযুক্ত করা হয়েছে। যেটা স্ক্যান করলে ‘ট্রাক্স’ নামক একটি ‘অন্তর্বাস’ বিক্রির ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়। যা পর্তুগালের একটি পোশাক প্রতিষ্ঠান। যারা অনলাইনে নারীদের অন্তর্বাস বিক্রি করছে। অর্থাৎ অন্তর্বাস বিক্রির ওয়েবসাইটের কিউআর কোড বসানো হয়েছে বইটিতে।
বইয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা শুরু করা নিয়ে থাকা একটি অধ্যায়ে এই কোড ব্যবহার করা হয়েছে। যেটি স্ক্যান করলেই চলে আসছে অন্তর্বাস বিক্রির ওই ওয়েবসাইট।
শিক্ষক ও অভিভাবকরা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পাঠ্যবইয়ে এমন কিউআর কোড ব্যবহারে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
জীবন ও জীবিকা বইটি রচনা ও সম্পাদনা করেছেন মো. মুরশীদ আকতার, মোসাম্মৎ খাদিজা ইয়াসমিন, হাসান তারেক খাঁন, মোহাম্মদ কবীর হোসেন, মো. সিফাতুল ইসলাম, মো. রুহুল আমিন, মো. তৌহিদুর রহমান, মো. মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ আবুল খায়ের ভূঁঞা। বইটির শিল্পনির্দেশনা মঞ্জুর আহমদ, চিত্রণ সুবীর মন্ডল, প্রচ্ছদ পরিকল্পনা মঞ্জুর আহমদ, প্রচ্ছদ প্রথমেশ দাশ পুলক, গ্রাফিক্স নূর-ই-ইলাহী ও কে. এম. ইউসুফ আলী।
বইটির ৩৮ নম্বর পেজে ‘ধাপ-৬: ব্যবসার ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিং বা বিপণন পরিকল্পনা’ নামক অধ্যায়ে উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রার জন্য কীভাবে ব্যবসায় শুরু করতে সেটি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই পেজে ‘চিত্র ২.১: বিভিন্ন মাধ্যমে পণ্যের বিজ্ঞাপনের নমুনা’র চিত্র তুলে ধরে সেখানে নিত্যদিন স্টোরের একটি ছবি দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি সেখানে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, গুগল প্লাস, ভাইবার, লিংকডইন এবং পিনটারেস্টের লোগো দেওয়া হয়েছে। এই লোগো এবং নিত্যদিন স্টোরের মাঝখানে একটি কিউআর কোড সংযুক্ত করা হয়েছে যেটা স্ক্যান করলে আলোচিত ওই ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়। যেখানে এডাল্ট নারী মডেলরা অন্তর্বাস পরে ছবি তুলেছেন যা বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে।
অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলছেন, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর বইয়ে এ ধরনের এডাল্ট ছবিসহ অন্তর্বাস বিক্রির ওয়েবসাইট কেন দেওয়া হয়েছে? এই অন্তর্বাস দিয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কী করবে?
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, কোমল বাচ্চাদের শিক্ষার নামে ভিন্নপথে চালিত করার জন্যই কিছু মহল ইচ্ছাকৃতভাবে এইসব বাজে বিষয়গুলো পাঠ্যবইয়ে সংযোজন করেছেন। কারণ সপ্তম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্প পড়ে কী শিখবে? আর নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাই বা অন্তর্বাস বিক্রির ওয়েবসাইটের ঠিকানা দিয়ে কী করবে? দেখে মনে হচ্ছে এটা কোনো অনিচ্ছাকৃত ভুল নয়; অনেকটা সুকৌশলে এই বিষয়টি সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
উপদেষ্টা মাহফুজ: সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন,“গণ-অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থেবিস্তারিত পড়ুন
বড় ব্যবধানে অ্যান্টিগা টেস্টে হারলো বাংলাদেশ
চতুর্থ দিনেই অ্যান্টিগা টেস্টের ফল কোন দিকে গড়াচ্ছে, তা নির্ধারণবিস্তারিত পড়ুন
কিশোরগঞ্জে মা-বাবা ও ২ সন্তানের মরদেহ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় একই পরিবারের চার জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেবিস্তারিত পড়ুন