মাগুরা শহরের কাউন্সিলপাড়ায় বর্তমান শ্বশুরবাড়ি এলাকার দু:স্থ মানুষের জন্য চট্টগ্রাম থেকে কুরিয়ারে আসন্ন ঈদের কাপড় ও খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়েছিলেন চট্টগ্রামের এসপি বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন মিতু। যা শনিবার হাতে পেয়েছেন তার শাশুড়ি শাহিদা বেগম। কিন্তু কে জানতো দরিদ্র মানুষের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির এই সামগ্রীর সঙ্গে অপেক্ষা করছে ভয়াবহ আরেক বার্তা। আর তা হচ্ছে মিতুর মর্মান্তিক মৃত্যু সংবাদ। আজ রবিবার সকালে মোবাইলে মিতুর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে গোটা পরিবারে চলছে শোকের মাতম। অথচ কথা ছিল মাগুরায় শ্বশুর-শ্বাশুরিসহ অন্যদের সাথে ঈদ করার।

ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী ব্যবহার ও মানবিক আচরণের কারণে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল মিতু। পুত্রবধূর এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবরে বাবুল আক্তারের বাবা আব্দুল ওদুদসহ পরিবারের সদস্যরা মুষড়ে পড়েছেন। মাত্র গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিদের কাছ থেকে ঘুরে এসেছেন সাবেক পুলিশ অফিসার আব্দুল ওদুদ ও তার স্ত্রী শাহিদা বেগম।

আব্দুল ওদুদ জানান, পুত্রবধূ মিতু তাকে নিজের বাবার মতই ভালবাসতেন। চট্টগ্রামে তার বাসায় বেড়াতে গেলে সে তাকে বাড়িতে আসতে দিতে চাইতো না। সব সময় নিজের মেয়ের মতই তাকে যত্ন করতেন। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের খুজে বের করে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।

মিতুর শ্বাশুড়ি শাহিদা বেগম জানান, তার কাছে মিতু ছেলের বউ নয়, আপন মেয়ে। নিজের গুণে জায়গা করে নিয়েছে মিতু। রমজান ও ঈদ উপলক্ষে এলাকার মানুষকে দেবার জন্য চিনি, তেল, সেমাইসহ বেশকিছু কাপড় কুরিয়ারে পাঠিয়েছেন মিতু, যা গতকাল শনিবার হাতে পেয়েছেন তিনি। আত্মীয়-স্বজন এলাকার মানুষকে মিতু নিজের পরিবারের সদস্যদের মতই ভালবাসতেন। এবারের ঈদে সবাই মিলে একত্রে ঈদ করার কথা ছিল তাদের। সন্ত্রাসীদের এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডে তার পরিবারের সব আনন্দ শেষ।

মিতুর বিষয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেন তার দেবর মাগুরা জজ কোর্টের আইনজীবী হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, পারিবারিকভাবে তারা চাইছেন মিতুর লাশ মাগুরার বর্তমান বাড়িতে এনে পরে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপার মদন গোপালপুরে নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে।