প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়ে খোলা আকাশের নিচে দিনমজুর পরিবার
কুমিল্লার তিতাসে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রভাবশালীদের নির্দেশে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে যায় অসহায় দিনমজুর শেখ ফরিদের। প্রভাবশালীদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ঘরবাড়ি ও সহায় সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে অসহায় পরিবারটি।
আজ সোমবার উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের জগতপুর সরকার বাড়িতে সরজমিনে গিয়ে গিয়ে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে।
বাড়িতে ঢুকতেই সাংবাদিকদের দেখে হাতেপায়ে ধরে কান্না জুড়ে দেন শেখ ফরিদ ও তার স্ত্রী নুরুন্নাহর। পাশে হাউমাউ করে কাঁদছে অবুঝ দুটি সন্তান ফাতেমা (৮) ও বিল্লাল (৬)। ‘বাবাগো আমগো আর কিছুই নাই। ঘরটাসহ সবকিছুই লুটপাট কইরা নিয়া গেছে। নুরুল হকের নির্দেশে সব করেছে ভারাইট্টা সন্ত্রাসীরা। আমরা এহন কোন রকমে এই কাপড়-চোপড়ের বেড়া দিয়া ছাপড়া তুইল্লা থাহি। আমগোরে কি এ্ই ঘর থেইক্কাও উচ্ছেদ কইরা দিব? উপস্থিত লোকজনসহ সাংবাদিকরাও তখন বিচলিত এ করুণ দৃশ্য দেখে। উপিস্থিত গ্রামবাসী সবকিছু দাঁড়িয়ে দেখলেও কারো নাম উল্লেখ করতে চায়নি ভয়ে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার জগৎপুর সরকার বাড়ির মৃত নোয়াব আলীর ছেলে শেখ ফরিদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী কালাইকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার মুন্সি ছেলে আ. রহমানের জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। অর্থ ও ক্ষমতার হার মেনে দীর্ঘ ২৫ বছর গ্রামের ভিটেমাটি ছাড়া ছিল দিনমজুর শেখ ফরিদের পরিবার। ২৫ বছরের যাযাবর জীবন শেষে স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও গ্রাম্য সরদারদের সহযোগিতায় পৈত্রিক ভিটায় একটি ঘর নির্মাণ করে বসবাসের চেষ্টা করছিলেন তারা। স্থানীয় প্রভাবশালী নুরুল হক সরকারের কু-পরামর্শে জসিমের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে শেখ ফরিদের ঘরটি ভেঙে মালামালসহ লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় প্রতিবেশীরা দাঁড়িয়ে দেখলেও ভয়ে কিছুই বলার সাহস পায়নি তারা। এতে নুরুল হকসহ স্থানীয় প্রভাবশালী মহলটি ও প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা জড়িত থাকার ইঙ্গিত রয়েছে বলে অভিযোগ দিনমজুরের পরিবারসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
ক্ষতিগ্রস্ত শেখ ফরিদ বলেন, “আমার ঘরটি ভাইঙ্গা ট্রলারে ভইরা লইয়া গেছে। এখন আমারে প্রাণে মাইরা ফেলার হুমকি দিতাছে। আর এই সব কিছুই নুরুল হক সরকারের নির্দেশে হইছে। হের এক ভাতিজা পুলিশের বড় ওসি। হেই গরমে হেয় এমন করে। ” এ বিষয়ে নুরুল হক সরকার বলেন, “২৩ বছর পূর্বে কালাইকান্দি গ্রামের আ. রহমান মুন্সি জায়গাটি কিনেছে। ওরা আমার আত্মীয় বিধায় আমার কাছে আসে। আর এই জায়গায় শেখ ফরিদরা ঘর তুলে থাকছে। আজ ঘর কাল বিল্ডিং করবে! তাদের উচ্ছেদ প্রশাসনও করতে পারবে না। তাই আমি বলেছি ঘরটি নিয়ে যেতে। তবে কে নিয়েছে আমি জানি না। ”
আ. রহমানের ছেলে জসিম বলেন, “আমি আমার বাবার ক্রয়কৃত বাড়িতে একটি ছাপড়া ঘর তুলেছিলাম। সেখানে শেখ ফরিদ ও তার পরিবার একটা কুচক্রি মহলের ইন্ধনে বসবাসের চেষ্টা করায় আমি সেটি ভেঙ্গে নিয়ে আসি। ” তিতাস থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম পিপিএম বলেন, “এমন বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তবু বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে টানা ৬ দিন বন্যায় ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মানুষজনবিস্তারিত পড়ুন
চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রিলাক্স পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশেরবিস্তারিত পড়ুন
টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দেন স্বামী, অতঃপর…
কুমিল্লায় ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে তিন ধর্ষকের হাতে তুলেবিস্তারিত পড়ুন