প্রিয়জনকে হারানোর কান্নায় এখন ভারী পুখরায়ার বাতাস
প্রিয়জনকে হারানোর কান্নায় এখন ভারী পুখরায়ার বাতাস। হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল, প্রিয়জনের খোঁজে ঘুরছেন মানুষ। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করা পাখুরিয়ার বাতাসে এখন শুধুই আতঙ্ক। ট্রেনের কামরায় নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাত্ই সব লণ্ডভণ্ড। বয়স বড়জোর দুই কি তিন। হাসপাতালের বিছানায় থাকা ছোট্ট সৃষ্টির দুটো অবুঝ চোখ খুঁজে চলেছে বাবা-মাকে।
রবিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই তার জীবনে যে বড় বেশি অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে তা বোঝার ক্ষমতাও এখনও তার হয়নি। দুর্ঘটনার পর থেকে খোঁজ নেই সৃষ্টির বাবা-মায়ের। বৃদ্ধ দয়ারাম শর্মার খোঁজে বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটে বেড়াচ্ছেন তাঁর পরিজনেরা। যদি কেউ খোঁজ দিতে পারেন।
বিয়ের অনুষ্ঠানে পাটনা যাচ্ছিলেন ভোপালের জীবেশ। তবে পথেই সব শেষ। রঘুবীর সিংয়ের ভাইয়ের পরিবারও বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে সকালেই রঘুবীর চলেছেন দুর্ঘটনাস্থলে। বৃদ্ধ রাম কৃষ্ণ পাঠকের গল্পটা আবার অন্যরকম। হাসপাতালের বিছানায় পেয়েছেন বিচিত্র সাহায্য। রাতে পুখরায়া যান রেল মন্ত্রী সুরেশ প্রভু। কেউ হারিয়েছেন প্রিয়জনকে। কেউ আবার আশ্চর্য ভাবে বেঁচে ফিরেছেন মৃত্যুর দুয়ার থেকে। মৃত্যুর ভয়াবহতাকে বড় কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছে পুখরায়া। পুখরায়া এখনও আতঙ্কে থমথমে। বাতাস কান্নায় ভেজা।
ভারতের কানপুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১ জনে। আহত হয়েছেন আরও প্রায় শতাধিক যাত্রী। রবিবার ভোরে পুখরাইয়ার কাছে পটনা-ইনদোর এক্সপ্রেসের ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ট্রেনের ধ্বংসস্তূপ থেকে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার কাজ এখনও চলছে। উত্তর প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও রেল কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনটি ইনদোর থেকে পটনা যাচ্ছিল। রবিবার ভোর সোয়া ৩টার দিকে মালাসার ও পুখরাইয়া স্টেশনের মাঝে ট্রেনটির ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার সময় বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমাচ্ছিলেন। একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
ভারতের উত্তর-মধ্য রেলের মুখপাত্র বিজয় কুমার বলেন, ‘একটি মেডিক্যাল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। অন্য যাত্রীদের যাতে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় তার জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
বিজয় কুমার আরও জানান, ট্রেনের এস-২ কামরাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কার জানিয়েছেন তিনি।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা দলজিৎ সিং চৌধুরি জানান, গ্যাস কাটারসহ ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে ট্রেনের ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার পর ভারতের রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব টুইটে নিকটবর্তী রাজ্যকে উদ্ধার কাজে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নিহতদের পরিবারকে ৫ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি গুরুতর আহতদের ৫০ হাজার ও অল্প আহতদের ২৫ হাজার রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের জন্য ২ লাখ, গুরুতর আহতদের ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীও ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন। রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে সাড়ে তিন লাখ ও গুরুতর আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হবে।
আহতদের দ্রুত কাছের হাসপাতালগুলোতে নিয়ে যাওয়ার জন্য সড়কে গ্রিন করিডোর গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া চালু করা হয়েছে জরুরি হেল্প লাইন নম্বর। উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছেন প্রায় আড়াইশো জওয়ান। এই রুটের সবগুলো ট্রেনকে বিকল্প পথে চলার নির্দেশ দিয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের
টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন
প্রথম ‘সন্তানের’ জন্মলগ্নে কেঁদেছিলেন দেব ! দায়িত্ব অনেকটাই একা সামলাচ্ছেন তিনি
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন, নায়ক দেব তো বিয়েই করেননি, তাহলে সন্তানবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?
ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন