ফিল্মি কায়দায় গুলি ছুড়ে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ : মেয়রের বাড়িতে বিয়ে
রাজশাহীর বাগমারায় ফিল্মি কায়দায় গুলি ছুড়ে বাড়ি থেকে এক স্কুলছাত্রীকে (১৫) অপহরণের পর বিয়ে করেছেন এক যুবলীগ নেতা। শুক্রবার রাতে উপজেলার তাহেরপুর পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে তাদের বিয়ে হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ওই ছাত্রীকে রাতে উদ্ধার করলেও পরিবারের আপত্তি না থাকায় রাতেই ছেড়ে দেয়া হয় ওই যুবলীগ নেতার জিম্মায়। অপহৃত স্কুলছাত্রী পৌর এলাকার জামগ্রাম উচ্চবিদ্যালয় থেকে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা ও তার সহযোগী মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নুরপুর মহল্লা থেকে ওই স্কুলছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে। ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ তাহেরপুর পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদের বাড়ি থেকে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। এর আগেই জোর করে ওই ছাত্রীর বিয়ে পড়ানো হয়।
বাগমারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। তবে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তার পরিবার বিষয়টি মেনেও নেয়। এনিয়ে তাদের অভিযোগ না থাকায় মেয়রের উপস্থিতিতে মেয়েকে তার স্বামী সোহেল ও তার পরিবারের সদস্যদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
স্কুলছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, যুবলীগ নেতা সোহেল রানা (২৪) কিছুদিন ধরে স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। শুক্রবার বিকেলে তিনি ও তার সহযোগী যুবলীগ কর্মী মিজানসহ ১০/১২ জন সরাসরি নুরপুর মহল্লার স্কুলছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বাবার কাছে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
এ সময় স্কুলছাত্রীর বাবা-মা মেয়ের বয়স না হওয়ায় বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে সোহেল রানা সশস্ত্র দলবল নিয়ে স্কুলছাত্রীর বাড়িতে যায়। বাড়িতে ঢুকে তারা প্রথমে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, ভুক্তভোগী পরিবার যাতে পুলিশে অভিযোগ দিতে না পারে, সেজন্য যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাড়ির চারপাশে ও রাস্তার মুখে সশস্ত্র পাহারা বসায়। খবর পেয়ে অপহরণের এক ঘণ্টা পর বাগমারা থানার একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে যুবলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়।
স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে যাওয়া পুলিশের দলটি পরে সরাসরি তাহেরপুর পৌর মেয়রের বাসভবনে যায় এবং কিছু সময় অবস্থানের পর স্কুলছাত্রীকে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। তার আগেই মেয়র নিজে দাঁড়িয়ে থেকে জোর করে বিয়ে দেন ওই ছাত্রীর। আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছিলেন কাজি আব্দুল মালেক।
অপহৃত স্কুলছাত্রীর পরিবারের ভাষ্য, নিরাপত্তাহীনতায় তারা বিষয়টি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। এনিয়ে মামলা দায়েরেরও সাহস পাচ্ছেন না তারা। তাদের অভিযোগ, অপহরণকারী যুবলীগ নেতা রানা-মিজানসহ অন্যরা মেয়র কালামের লোক। পুলিশ যখন মেয়রের বাড়িতে যায়, তখনও তারা সেখানেই ছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের কাউকে আটক করেনি।
তার বাড়ি থেকে অপহৃত স্কুলছাত্রী উদ্ধারের বিষয়ে তাহেরপুর পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ জানান, অপহরণের খবর পেয়ে যুবলীগ নেতা সোহেল ও মিজানের সঙ্গে যোগাযোগ করে মেয়েটিকে তিনি নিজের হেফাজতে নেন। পরে ওই মেয়ের সম্মতিতেই বিয়ে দেয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন
সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার ১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেবিস্তারিত পড়ুন
স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন