বর্তমান সরকার ২০১৮ সালের মধ্যে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে: খালেদা জিয়া
বর্তমান সরকার ২০১৮ সালের মধ্যে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, ‘২০১৮ সাল হবে জনগণের বছর। এই বছর দেশ থেকে সকল জুলুম, অত্যাচার ও অত্যাচারী বিদায় নেবে।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপি নেত্রী একথা বলেন।
খালেদা জিয়া ইফতারের মিনিট ১৫ আগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। তাকে স্বাগত জানান এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদ।পরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমদ।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে খালেদা জিয়া সম্প্রতি ঘোষিত বাজেট, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘দেশে প্রতিদিন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হচ্ছে।’
‘আওয়ামী লীগ মানুষকে ভাওতাবাজি দিতে অনেক কথা বলে। কিন্তু কাজ করে না। ৪০ থেকে ৫০ টাকার নীচে সবজি পাওয়া যায় না। মাছ-মাংসের দাম তো নাই বললাম’- বাজার পরিস্থিতি নিয়ে এমন বর্ণনা দেন খালেদা জিয়া।
সরকার বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের দাবি করলেও তা আসলে অসাড় বলে দাবি করেন বিএনপি নেত্রী। তিনি বলেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের দাম বাড়োনো হচ্ছে। বিদ্যুতে নাকি সারাদেশ ঝলমল করবে। এখন ঢাকায় লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ঝলমলের বদলে সারাদেশ অন্ধকারে। এই হলো আওয়ামী লীগের সত্যিকারের উন্নয়ন। একেকটা প্রকল্প শুরু করে আবার কয়েকগুণ বেড়ে যায়।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘নির্বাচন আসলে ওরা (আওয়ামী লীগ) সুন্দর সুন্দর কথা বলবে, মিথ্যা বলবে। উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরবে। কিন্তু আপনারা যখন হিসেব চাইবেন তখন হিসেব মেলাতে পারবে না।’
দেশে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। মানুষ ন্যায় বিচার পায় না-এমন অভিযোগ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘বিচারক নয়,বিচারবিভাগকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। এদের হাত এত লম্বা।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘পত্রিকা খুললে সারাদেশে দেখবেন প্রতিনিয়ত গুম,খুন চলছে। নারী নির্যাতন বেড়ে গেছে কেউ নিরাপদ নয়, কি ঘরে কি বাইরে, শিশুরা পর্যন্ত নিরাপদ নয়।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তারা মনে করে যে সর্বেসর্বা। দেশের মালিক তারা, দেশের রাজা তারা। কাজেই কাউকে তারা সম্মান দেয় না। বাজে কথা তো খবরের কাগজে প্রতিদিন দেখেন। কর্মকর্তা, শিক্ষক কেউ নিরাপদ নয়। তাদের উপর হাত তুলছে, পেটাচ্ছে। পুলিশকে মারধর করছে। এই হলো আওয়ামী লীগের আমল। এদের কাছ থেকে ভালো কিছু কি আশা করবেন?’।
সম্প্রতি ঘোষিত বাজেট প্রসঙ্গে বিএনপি প্রধান বলেন,বাজেটে মানুষের পকেটে হাত দিয়েছে। ব্যাংকে টাকা রাখতে কেউ রাখতে সাহস করবে না। ব্যাংকে একলাখ টাকা থাকে প্রতিবছর ৮০০ টাকা কাটা হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলছেন, অনেক টাকা আছে। ট্যাক্স তো দিতেই হবে। কিন্তু তাদের যে হাজার হাজার কোটি টাকা আছে সেটা কোথায় আছে সেটার কিন্তু খবর নেই। এই হলো দেশের অবস্থা। তাই এদের মিথ্যাচার, অত্যাচার, নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে রমজানে দোয়া করবো তাদের নির্যাতন থেকে পরিত্রাণ পেতে। আল্লাহ যাতে অন্ততপক্ষে দেশের মানুষকে রক্ষা করে, গরিব মানুষ দু বেলা খেতে পারে,দেশের মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারে,মহিলারা নিরাপদে থাকতে পারে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সরকার জড়িত বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেত্রী। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের টাকা প্রতিনিয়ত চুরির করতে করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকাও চুরি করে পাচার করেছে। শুধু তাই নয়,মানুষ যখন দাবি করেছে। তদন্তের কি হয়েছে তা কেউ জানে না। সবাই বলে তদন্ত প্রতিবেদন ব্যাংকেই ছিল। আবার সেখানে আগুন লাগলো। কীভাবে আগুন লাগলো তা জানা যায়নি।’
ইফতারে জোট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের অধ্যাপক মজিবুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা এম এ রকীব, খেলাফত মজলিসের মাওলানা সৈয়দ মজিবুর রহমান, জাগপা‘র রেহানা প্রধান, খোন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপি‘র ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এনডিপি‘র খন্দকার গোলাম মূর্তজা, মঞ্জুর হোসেন ঈসা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, বিজেপি‘র আবদুল মতিন সউদ, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দীন ইকরাম, ডিএল‘র সাইফুদ্দিন মনি, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম প্রমূখ।
এলডিপির কেন্দ্রীয় নেতা সাহাদাত হোসেন সেলিম, আবু ইউসুফ খলিলুর রহমান, আবদুল গনিসহ নেতারা ইফতারে ছিলেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, ইসমাইল জবিউল্লাহ, সঞ্জীব চৌধুরী, তৈমুর আলম খন্দকার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার প্রমূখ ইফতারে অংশ নেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন