বলিউডের নিষিদ্ধ ১২ ছবি
চলচ্চিত্র অনেক সময়ই দর্শক অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ করে দেওয়া হয়। একেক ছবি নির্দিষ্ট হয়ে যায় একেক বয়সের দর্শকের জন্য। কারো জন্য যা দেখা আবশ্যক, কারো জন্য আবার তা দেখা বারণ। অনেক সময় বিভিন্ন কারণে অনেক ছবির ওপর নেমে আসে নিষেধাজ্ঞার খড়্গ। এর পেছনে কারণ থাকে সামাজিক, রাজনৈতিক বা সংস্কৃতি-সংশ্লিষ্ট। বলিউডেও বেশ কিছু ছবি সময়ে-অসময়ে হয়েছে, যেগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তার পরও সেগুলো প্রশংসিত হয়েছে বোদ্ধা কিংবা দর্শকের কাছে। বিজনেস অব সিনেমা থেকে পাওয়া গেল এমনই ১২টি ছবির কথা।
১. ব্যান্ডিট কুইন (১৯৯৪) : (পরিচালক-শেখর কাপুর)
‘দস্যুরানী’ হিসেবে আলোচিত ফুলন দেবীর জীবন নিয়ে নির্মিত হয়েছিল এই ছবি। এই ছবি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন স্বয়ং ফুলন দেবীও, তাতে এটি নিয়ে বিতর্ক আরো তুঙ্গে ওঠে। যৌনতা-সংবলিত দৃশ্য, তীব্র ও অশ্লীল ভাষার ব্যবহার এবং সহিংসতার ছড়াছড়ি ছিল ছবিটিতে। সেন্সর বোর্ড শেষ পর্যন্ত ছাড়পত্র না দিলেও বোদ্ধামহলে প্রশংসিত হয় ছবিটি।
২. ফায়ার (১৯৯৬) : (পরিচালক-দীপা মেহতা)
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর হুমকির মুখে মুক্তির প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই নিষিদ্ধ করা হয় ছবিটি। এ ছবির ওপরে চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়েছিল হিন্দুত্ববাদী উগ্র দলগুলো। এ ছবিতে দুই ভারতীয় নারীর মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক গড়ে ওঠার গল্প বলা হয়। দুই অভিনেত্রী শাবানা আজমি ও নন্দিতা দাশকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল।
৩. কামসূত্র—এ টেল অব লাভ (১৯৯৬) : (পরিচালক-মীরা নায়ার)
যৌনতাবিষয়ক ভারতের আদিপুস্তক বাৎস্যায়নের ‘কামসূত্র’র আঙ্গিকে ভর করেই গড়ে ওঠে এই ছবি। এই ছবির কাহিনীর মূলেই যৌনতা, কাজেই ছবিতে যে এমন দৃশ্যের প্রাচুর্য থাকবে, তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। বোদ্ধামহলে প্রশংসিত হলেও ছবিটি ভারতে মুক্তি পায়নি, শুরুতেই একেবারে ‘না’ বলে দেয় সেন্সর বোর্ড।
৪. ব্ল্যাক ফ্রাইডে (২০০৪) : (পরিচালক-অনুরাগ কশ্যপ)
মুম্বাইয়ের বোমা হামলার ঘটনার ওপর নির্মিত এই ছবি তুমুল আলোচনা সৃষ্টি করেছিল। ভারতে মুক্তি দেওয়ার জন্য এই ছবির বিষয়বস্তু একেই খুবই তীব্র, তার ওপর তখন মুম্বাই বোমা হামলা নিয়ে তদন্ত চলছিল। এ জন্য আদালতের তরফ থেকে ছবিটির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত যা বলবৎ ছিল।
৫. আমু (২০০৫) : (পরিচালক-সোনালি বোস)
১৯৮৪ সালের শিখবিরোধী দাঙ্গার ঘটনার ওপরে নির্মিত হয়েছে এই ছবি। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন কঙ্কনা সেন শর্মা। এ ছবির মাধ্যমে ওই সময়কার কিছু বিতর্কিত ও সত্য ঘটনা তুলে ধরা হয়, ফলে ছবিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রোষানলে পড়ে। প্রাথমিকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও পরে কিছু সংলাপ ও দৃশ্য বাদ দিয়ে ছবিটিকে ‘অ্যাডাল্ট’ রেটিং দিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়।
৬. ওয়াটার (২০০৫) : (পরিচালক-দীপা মেহতা)
দীপা মেহতার ছবি আর তা নিয়ে বিতর্ক হবে না, তা তো হয় না! সমাজের বিভিন্ন অসংগতি আর সমস্যাকে তীব্রভাবে ফুটিয়ে তুলতে কখনোই দ্বিধা করেননি এই গুণী পরিচালক। এই ছবির শুটিংয়ের সময়ই আক্রমণ ও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছিল ছবি-সংশ্লিষ্টদের। বিধবাপ্রথার যুগের পটভূমিতে নির্মিত হয় এই ছবি। ভারতে শুটিং করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে এর শুটিং করা হয় শ্রীলঙ্কায়। ২০০৫ সালে নির্মিত হলেও তখন ছবিটি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে এটি মুক্তি পায় ২০০৭ সালে।
৭. আনফ্রিডম (২০১৫) : (পরিচালক-রাজ অমিত কুমার)
ইসলামী সন্ত্রাসবাদ এবং দুই নারীর মধ্যে গড়া ওঠা সমকামিতার সম্পর্ক, এমনই কাহিনী ২০১৫ সালের এই বিতর্কিত ছবিটির। যৌনতার বিষয়টিই কেবল নয়, হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আশঙ্কায় ছবিটি নিষিদ্ধ করে সেন্সর বোর্ড।
৮. পাঁচ (২০০৩) : (পরিচালক-অনুরাগ কশ্যপ)
অনুরাগ কশ্যপের ডিরেক্টরিয়াল ডেব্যু হয় এই ছবির মাধ্যমে। মেইন স্ট্রিম বলিউড ছবির সঙ্গে নির্মাণ বা কাহিনীতে বেশ ভিন্নতা ছিল এই ছবিটির। সে সঙ্গে রগরগে দৃশ্য, ড্রাগসের ব্যবহার, তীব্র ভাষা ও ভায়োলেন্সের কারণে ছবিটি শেষ পর্যন্ত সেন্সর বোর্ডের ছাড় পায়নি। এই ছবির কাহিনীতে ১৯৯৭ সালের আলোচিত জোশি-অভয়ঙ্কর সিরিয়াল মার্ডারের ঘটনার প্রচ্ছন্ন ছায়া ছিল।
৯. পারজানিয়া (২০০৫) : (পরিচালক-রাহুল ঢোলাকিয়া)
গুজরাটের দাঙ্গার সময়ে মা-বাবার কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়া একটি শিশুর কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। এই ছবির প্রধান দুই চরিত্রে রূপদানকারী শিল্পী নাসিরুদ্দিন শাহ ও সারিকা। তাঁরা নিজেরাই গুজরাটের দাঙ্গার সাক্ষী। ছবিটি দারুণভাবে প্রশংসিত হলেও গুজরাটে সরাসরি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
১০. সিনস (২০০৫) : (পরিচালক-বিনোদ পান্ডে)
এই ছবিতে কেরালার একজন পাদ্রির কাহিনী তুলে ধরা হয়, যে উন্মত্তভাবে এক নারীর প্রেমে পড়ে এবং তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। ক্যাথলিক সম্প্রদায় এই ছবির তীব্র প্রতিবাদ জানায়, একই সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যবহুল ছবিটি সে সময় আলোচনার সৃষ্টি করে। পরে ছবিটি নিষিদ্ধ করে সেন্সর বোর্ড।
১১. ফিরক (২০০৮) : (পরিচালক-নন্দিতা দাশ)
এই ছবিও গুজরাটের দাঙ্গার ঘটনার ওপরে নির্মিত। হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আশঙ্কায় ছবিটি প্রাথমিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। পরে বেশ কিছু অংশ পরিবর্তনের মাধ্যমে ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়।
১২. ইউআরএফ প্রফেসর (২০০০) : (পরিচালক-পঙ্কজ আদভানি)
এই ছবি আপত্তিকর দৃশ্য ও অশালীন ভাষার ব্যবহারের কারণ দেখিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এটি একটি ডার্ক কমেডি ঘরানার ছবি। ২০০০ সালের যে সময়ে এটি নির্মাণ করা হয়, বলিউড তখন ডার্ক কমেডি বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত ছিল না বললেই চলে। নিষিদ্ধ হলেও বলিউডে ছবিটিকে ডার্ক কমেডি ঘরানায় পথিকৃৎ ছবি হিসেবে ধরা হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন