বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রপতি এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন?
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থায় উপ-রাষ্ট্রপতি পদ ছিল দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল দায়িত্ব নেওয়া বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারে উপ-রাষ্ট্রপতি পদটি যুক্ত করা হয়েছিল। তবে স্বাধীনতার পর দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে উপ-রাষ্ট্রপতি পদটি বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে আবারও উপ-রাষ্ট্রপতির পদ যুক্ত করা হয়। তবে ১৯৯১ সালে সংসদীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে উপ-রাষ্ট্রপতি পদটি বাতিল করা হয়।
এদিকে বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সরকারের এবং সংসদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে উপ-প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার কার্যক্রম এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধান করতে পারতেন।
এই পদটি ১৫ এপ্রিল, ১৯৭৯ সালে চালু হয়েছিল এবং ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯০ সালে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ বাতিল করেছিলেন।
বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রপতি
বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রপতি পদে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা হলেন-
সৈয়দ নজরুল ইসলাম (১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ – ১২ জানুয়ারি, ১৯৭২): তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ মোহাম্মদুল্লাহ (১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ – ৬ নভেম্বর, ১৯৭৫ এবং ২৩ মার্চ, ১৯৮২ – ২৪ মার্চ, ১৯৮২): তিনি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর উপ-রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। ১৯৮২ সালে রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার তাকে আবারও উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ করেন। তবে লে. জেনারেল হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা দখল করায় দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।
আবদুস সাত্তার (৩ জুন, ১৯৭৭ – ৩০ মে, ১৯৮১): তিনি উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মীর্জা নুরুল হুদা (২৪ নভেম্বর, ১৯৮১ – ২৩ মার্চ, ১৯৮২): তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের অধীনে কাজ করেন।
এ কে এম নুরুল ইসলাম (৩০ নভেম্বর, ১৯৮৬ – সেপ্টেম্বর ১৯৮৯): তিনি রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন।
মওদুদ আহমদ (সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ – ডিসেম্বর ১৯৯০): তিনি সর্বশেষ উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন, এরপর এই পদটি বাতিল করা হয়।
উপ-রাষ্ট্রপতি পদটি ১৯৯০ সালে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ সাংবিধানিক গণভোটের মাধ্যমে বাতিল করেন।
বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে উপ-প্রধানমন্ত্রী পদটি ১৫ এপ্রিল, ১৯৭৯ সালে চালু হয় এবং এরপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মওদুদ আহমদ (১৫ এপ্রিল, ১৯৭৯ – ২ জানুয়ারি, ১৯৮০): তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অধীনে প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী হন।
এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (১৫ এপ্রিল, ১৯৭৯ – ২৩ আগস্ট, ১৯৭৯): তিনি সিনিয়র উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জামাল উদ্দিন আহমেদ (২৩ আগস্ট, ১৯৭৯ – ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮২): তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন।
এস এ বারি (২৩ আগস্ট, ১৯৭৯ – ২৭ নভেম্বর, ১৯৮১): তিনি জামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
মওদুদ আহমদ (৯ জুলাই, ১৯৮৬ – ২৭ মার্চ, ১৯৮৮): তিনি রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের অধীনে এ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
কাজী জাফর আহমেদ (৯ জুলাই, ১৯৮৬ – ১০ আগস্ট, ১৯৮৭): তিনি রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন।
এম এ মতিন (৯ জুলাই, ১৯৮৬ – ১৩ আগস্ট, ১৯৮৯): তিনি রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন।
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (২০ নভেম্বর, ১৯৮৭ – ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯০): তিনি সর্বশেষ উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এরপর এই পদটি বাতিল করা হয়।
এই পদটি ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯০ সালে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ কর্তৃক সাংবিধানিক গণভোটের পর বাতিল করা হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
উপদেষ্টা মাহফুজ: সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন,“গণ-অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থেবিস্তারিত পড়ুন
বড় ব্যবধানে অ্যান্টিগা টেস্টে হারলো বাংলাদেশ
চতুর্থ দিনেই অ্যান্টিগা টেস্টের ফল কোন দিকে গড়াচ্ছে, তা নির্ধারণবিস্তারিত পড়ুন
কিশোরগঞ্জে মা-বাবা ও ২ সন্তানের মরদেহ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় একই পরিবারের চার জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেবিস্তারিত পড়ুন