বাড্ডায় চাঞ্চল্যকর চার খুন মামলার আসামিরা রহমতুল্লাহ এমপির ছত্রছায়ায়
রাজধানীর বাড্ডায় চাঞ্চল্যকর চার খুন মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহর ছত্রছায়ায় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী মতিউর রহমান।
আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তাদের গ্রেফতার করছে না। উল্টো আসামীরা বাদীকে হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় বাদী নিজের নিরাপত্তা চেয়ে গত ২১ মে বাড্ডা থানায় একটি জিডি করেছেন। তবে পুলিশ বলছে, আসামীরা পলাতক থাকায় তাদেরকে আটক করা সম্ভব হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বাড্ডায় চার খুন মামলার চিহ্নিত আসামী আরিফ, মান্নান ও রমজান স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহর ছত্রছায়ায় এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বন্ধু ও রাজনৈতিকমহল সহ তাদের সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডা দিচ্ছেন প্রকাশ্যে। ঈদের পরে এমপির সাথে তাদের একান্ত সাক্ষাত হয়েছে বলেও জানা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার বাদীর পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা দিচ্ছেন অবাক করার মতো তথ্য। প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের কাছে সব আসামিরা পলাতকই!
২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট বাড্ডার আদর্শনগর পানির পাম্প এলাকায় রাতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন বাড্ডার ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মোল্লা ও ব্যবসায়ী ফিরোজ আহমেদ মানিক। এছাড়া গুলিবিদ্ধ ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামা চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন মারা যান। সর্বশেষ ২৩ আগস্ট রাতে মৃত্যু হয় গ্যারেজ মালিক ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা আবদুস সালামের।
এ ঘটনায় নিহত মাহবুবুর রহমান গামার বাবা মতিউর রহমান অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুল হক তদন্ত করে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার বাদী অভিযোগ করেন, আফতাবনগর গরুর হাটের ইজারাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ ভাগ্নে ফারুক ও মেহেদীর নির্দেশে তার ছেলেকে ভাড়াটিয়া কিলার দিয়ে খুন করা হয়। খুনের মিশনে অংশ নিয়েছিল আরিফ, পবন, পুলক, রমজান, মানিক, মান্নানসহ ১০/১২ জন সন্ত্রাসী। ডিবি যে চার্জশিট দিয়েছে, তাতে গরুর হাটের ইজারার বিষয়টি উল্লেখ করেনি। অথচ এই গরুর হাটের ইজারাকে কেন্দ্র করে ভাগ্নে ফারুক ৬০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। এ নিয়ে কয়েকবার তারা তার ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিল।
এ ঘটনায় বাদী মামলার চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিলে গত ৮ মে ঢাকা মহানগর হাকিম-৯ নম্বর আদালতে শুনানি শেষে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডিতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
সিআইডি’র মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, বাড্ডা ইউনিয়ন এলাকায় অবস্থিত আফতাবনগর পশুরহাট প্রতি বছর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইজারা দেয়া হয়। ইউনিয়ন এলাকা বলে প্রতিবছর গড়ে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া হয়। ২০১৩ সালে মাহবুবুর রহমান গামা আফতাবনগর কোরবানির পশুর হাট সাড়ে ৫ কোটি টাকায় ইজারা নেন। এই নিয়ে সন্ত্রাসী ভাগ্নে ফারুক ও আমেরিকা প্রবাসী মেহেদী গ্রুপের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়।
পরের বছর ভাগ্নে ফারুক গ্রুপের চাপে গামা আফতাবনগর পশুর হাট ইজারা নিতে পারেননি। ২০১৩ সালের হাট ইজারা বাবদ সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো তার কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই চাঁদার টাকা কমানোর জন্য গত বছরের ৩ মে বাড্ডা জাগরণী সংসদ ক্লাবে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর একটি বৈঠক হয়। বৈঠক চলাকালে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন রাহিনকে।
২০১৫ সালের আগস্টে কোরবানির পশুরহাট ইজারার টেন্ডার দেয়া হলে মাহবুবুর রহমান গামা আবারও ঐ হাট ইজারা নেয়ার উদ্যোগ নেন। আগের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় এবং আবার হাট ইজারার উদ্যোগ নিলে ভাগ্নে ফারুক গ্রুপ গামাকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে। এর জের ধরেই আরিফ, পবন, রমজান, মান্নান, পুলকসহ ১০/১২ জন সন্ত্রাসী গত বছরের ১৩ আগস্ট রাতে আদর্শনগর পানির পাম্প এলাকায় গামাসহ ৫/৬ জনকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও মুল আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অথচ এখনো তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন