“বিভূতী রঞ্জন চাকমা জীবন সংগ্রাম”
সুপ্রিয় চাকমা শুভ, রাঙ্গামাটি জেলা প্রতিনিধিঃ-
রাঙ্গামাটির বিভিন্ন স্থান জুড়ে আনাচে-কানাচে দেখা যায় একজন দরিদ্র মানুষ একটি টিনের তৈরী কাঠামোগত ফেরি বানিয়ে গলায় গামছা বেঁধে হেঁটে হেঁটে পান সুপারী, সিগারেট বিক্রি করতে ।
রাঙ্গামাটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হেঁটে গিয়ে পান সুপারী, সিগারেট বিক্রি করে অনেকে জীবন চালাচ্ছে জীবন সংগ্রামী মানুষ। অসহায় ও দরিদ্রদের পাশে মানবতার হাত বাড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়াতে কেউ প্রস্তুত নয়। তেমনি দরিদ্র জীবন সংগ্রাম করে চলছে বিভূতী রঞ্জন চাকমা।
তিনি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দিঘীনালা উপজেলার বাঘাইছড়ি মুখ গ্রামের বাসিন্দা। জীবন বাঁচাতে পরিস্থিতির তাঁগিদে চলে যান রাঙ্গামাটি জেলার বন্দুক ভাঙ্গার দুরখেইয়া গ্রামে। সেখান থেকে অবশেষে জীবন সংগ্রামে পা বাড়ান রাঙ্গামাটি শহরে। রাঙ্গামাটির বিভিন্ন শহরের কলেজ গেইট, বনরুপা, বাস টার্মিনাল, রির্জাব বাজার, তবলছড়ি স্থানে ঘুরে ঘুরে কাঁদে ফেরি নিয়ে পান- সুপারী, সিগারেট বিক্রি করে দিন চলে যায়।
তিনি দিনে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আয় করে পরিবারকে বোরন-পোষন করেন। পরিবারে সাড়ে ৪ বছরের একটি কন্যা সন্তান প্যারালাইস্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চিকিৎসার জন্য আগ্রাবাদের চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান শিশুটিকে।
সূত্রে জানা যায় হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ ওহি উদ্দিন সুমন বলছেন , অসুস্থ বিপাশী চাকমাকে বাইরে ( বিদেশে ) নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারলে অনেক সুবিধা হয়।
তবে চিকিৎসার জন্য কম পক্ষে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা লাগতে পারে। তাকে যদি উন্নতি চিকিৎসা দেওয়া না হয় তাহলে হয়তো পরবর্তীতে বড় সমস্যায় পড়তে হবে। অথচ তার পরিবারে আয়-উন্নতি বলতে কিছু নেই। সামান্য ফেরি নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় পান, সিগারেট বিক্রি করে দিন চলে যায়।
মানবতার হাত বাড়িয়ে দিতে কেউ আসেনি তার জীবনে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইলে তাকে ফিরে আসতে হত খালি হাতে। অবশেষে মানবতার হাত বাড়িয়ে বিভূতী রঞ্জন চাকমার পাশে দাঁড়ান ৫ নং বন্দুক ভাঙ্গা ইউপির প্রাক্তন মেম্বার হামেশ কুমার চাকমা।
হামেশ কুমার চাকমার সহযোগিতায় এই বিভূতী রঞ্জন চাকমা তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য এদিক-ওদিক সাহায্য জোগাড় করার চেষ্ঠা করেন। বন্দুক ভাঙ্গা দুরখেইয়া এলাকাবাসী থেকে ৩৫০০ টাকা সাহায্য এবং কৃষি বিভাগের উপসহকারী বøগ সুপারভাইজার কিংশুক চাকমা ৫০০০ টাকা সাহায্য প্রদান করেন।
প্রাক্তন মেম্বার হামেশ কুমার চাকমা বলেন, “বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ান হল মানুষের কাজ। বিভূতী রঞ্জন চাকমার জীবন আসলে অনেক কষ্ঠের। কেউ তার অসহায়কে মূল্যায়ন করে নি।
রাঙ্গামাটিতে সুচিকিৎসার জন্য বিজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়েও কোন উন্নতি হয়নি। পরে রাঙ্গামাটি থেকে কয়েকজন চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য আগ্রাবাদের চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে করান। চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসারত ডাক্তার ওহি উদ্দিন সুমন বলেছেন তার কন্যা সন্তানকে চিকিৎসা করাতে কম পক্ষে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা লাগতে পারে। যা এই দরিদ্র বিভূতী রঞ্জন চাকমার পক্ষে কখন সম্ভব নয়”
আদিবাসীদের মধ্যে এই ধরনের পেশা খুবই কম দেখা যায়। আদিবাসী জন-গোষ্ঠীরা না খেয়ে দিন যাপন করবে তবু ও ভিক্ষা করতে পথে নামবে না। এমনকি পথে পথে ঘুরে গলায় গামছা বেধেঁ কেউ আদিবাসীদের মধ্যে জীবনের তাগিদে রাস্তায় নামে নি। শুধু মাত্র জীবন সংগ্রামে দেখা যায় এই অসহায় দরিদ্র বিভূতী রঞ্জন চাকমাকে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাজেকে ডাম্প ট্রাক উল্টে ৬ শ্রমিক নিহত
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে শিজকছড়া-উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রিবিস্তারিত পড়ুন
ভূমিধসে তিন সন্তানকেই হারালো যে দম্পতি
বান্দরবান শহর থেকে দুতিন কিলোমিটার দূরবর্তী এক পাহাড়ী গ্রাম লিমুভিরি।বিস্তারিত পড়ুন
৫ জুন রাঙামাটিতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ
শুক্রবার রাঙামাটির লংগদুতে এক যুবলীগ নেতাকে হত্যার ঘটনার জের ধরেবিস্তারিত পড়ুন