বিমান দেখতে গিয়ে শাহজালালে আনসার সদস্যকে হত্যা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনসার সদস্য সোহাগ আলী (২৪) হত্যা মামলায় আটক আসামি শিহাবকে মাদকাসক্ত বলে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে বিমান দেখতে গিয়ে শাহজালালে আনসার সদস্যকে হত্যা করেন তিনি।
আলোচিত এই মামলার তথ্যগুলোর বিষয়ে এ কথা জানিয়েছেন বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) লিয়াকত হোসেন।
জিআরও জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তিনি এ বিষয়ে অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক মাহবুবুল আলম এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনসার সদস্য সোহাগ আলী হত্যার ঘটনায় পুলিশ জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা পায়নি অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে। এছাড়া আসামি শিহাব মাদকাসক্ত বলেও উল্লেখ করা আছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শিহাব উদ্দিন আগে থেকেই মাদকসক্ত ছিলেন। গাঁজা সেবন করার জন্য তিনি সব সময় একটি ধারালো ছুরি সঙ্গে রাখতেন। কিছুদিন পরপর তিনি কর্মস্থল পরিবর্তন করতেন। ঘটনার দুই দিন আগে তিনি গাজীপুরের সখীপুর আনসার একাডেমির পাশে একটি লেদ মেশিনের কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন। ঘটনার দিন, ৬ নভেম্বর দুপুরে কারখানার ব্যবস্থাপক ১২০ টাকা দিয়ে সিহাবউদ্দিনকে রং কিনতে পাঠান। তিনি রং না কিনে একটি বাসে উঠে গাজীপুর চৌরাস্তায় নামেন। সেখান থেকে আরেকটি বাসে উঠে শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকায় নামেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সন্ধ্যায় সিহাবউদ্দিন হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মতো হলুদ গেঞ্জি পরে বের হওয়ার পথ দিয়ে বিমান দেখতে দ্রুত ১ নম্বর নিরাপত্তাচৌকি পার হন। ২ নম্বর নিরাপত্তাচৌকি পার হতে থাকলে কর্তব্যরত আনসার সদস্য তাঁর পরিচয় জানতে চেয়ে তাঁকে বাধা দেন। এ সময় সিহাবউদ্দিন বলেন, ‘আমি ডিজিটাল আকাশ, আমার কাছে চাকু আছে, ধরলে কিন্তু আমি ঘাই দিমু।’
এরপর আনসার সদস্যরা তাঁকে জাপটে ধরলে তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় তিনি তিনজন আনসার ও এপিবিএন সদস্যকে ছুরিকাঘাত করেন। এ অবস্থায় ৪ নম্বর ফটক দিয়ে বিমানবন্দরে ঢুকতে গেলে কর্তব্যরত আনসার সদস্য সোহাগ আলী সিহাবউদ্দিনকে জাপটে ধরলে তিনি তাঁকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন। আহত সোহাগ আলী হাসপাতালে মারা যান। পরে কর্তব্যরত আনসার ও পুলিশ সদস্যরা রক্তমাখা ছুরিসহ সিহাবউদ্দিনকে আটক করেন।
এদিকে ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার(ডিসি) আনিসুর রহমান মামলার নথির বরাতে এ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গত বছরের ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের ২ নম্বর বহির্গমন টার্মিনালের ড্রাইভওয়ের উত্তর প্রান্তের ৬ নম্বর গেটের সামনে শিহাবকে ছুরি হাতে দেখতে পান এপিবিএনের সদস্যরা। শিহাবকে ধরতে গেলে তিনি দৌড়ে ৪ নম্বর গেটের দিকে যান। ৪ নম্বর গেটের সামনে এক আনসার সদস্য তাঁকে ধরার চেষ্টা করেন। তখন তিনি ছুরি নিয়ে ৩ নম্বর গেটের দিকে এগিয়ে যান। সেখানে শিহাবকে আবার এক আনসার সদস্য আটকাতে গেলে তাঁকেও ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করেন।
আহতদের মধ্যে আনসার সদস্য সোহাগ আলী (২৪) হাসপাতালে মারা যান। পরে শিহাবকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় গত বছরের ৭ নভেম্বর বিমানবন্দর আনসারের প্লাটুন কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রাজধানীতে আনসার ব্যাটালিয়ন মোতায়েন
ঢাকা মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৬ প্লাটুন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েনবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ২৩
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থী, মহিলা আওয়ামী লীগবিস্তারিত পড়ুন