বিশ্বের ভয়ঙ্করতম হাসপাতাল !
বিশ্বের ভয়ঙ্করতম হাসপাতালমানুষ অসুস্থ হলেই তবে হাসপাতালে যায়। সুষ্ঠু চিকিৎসা আর নিয়ম মাফিক সেবা-যত্নের কল্যাণে সুস্থতা ফিরে পায় অসুস্থরা। কিন্তু এমনও একটি হাসপাতাল আছে যেখানে রোগী ভর্তি হওয়া মানে সুস্থতার বদলে আরো বেশি অসুস্থ হওয়া! এমনই একটি হাসপাতালের নাম দ্য ফেদ্রিকো মোরা। হাসপাতালটি অবস্থিত গুয়াতেমালাতে।
সম্প্রতি একদল ক্যাম্পেইনার হাসপাতালটি পরিদর্শন করে এটিকে বিশ্বের ভয়ঙ্করতম হাসপাতাল হিসেবেই আখ্যায়িত করেছে। হাসপাতালটিতে যৌন নির্যাতন থেকে শুরু করে হত্যার মতো ঘটনাও ঘটে থাকে।
তারা সেখান থেকে ফিরে এসে হাসপাতালের অবস্থা সম্পর্কে বলেন, হাসপাতালের যেখানেই তাকাচ্ছিলাম সেখানেই শুধু অচেতন মানুষ শুয়ে থাকতে দেখেছি। প্রচণ্ড সূর্যের তাপেও অনেক রোগী শুয়ে ছিল। পরে জানতে পেরেছিলাম যে প্রত্যেক রোগীকেই উচ্চমাত্রার ঘুমের ওষুধ দিয়ে অচেতন করে রাখা হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষের শরীরেই কোন পোশাক ছিল না। আর যাদের শরীরে পোশাক ছিল তাও যৎসামান্য। মল আর মূত্রের মাঝে গুটিসুটি মেরে শুয়ে ছিল তারা।
হাসপাতালটির স্থায়ী রোগীর সংখ্যা ৩৪০ জন। এদের মধ্যে ৫০ জনই মানসিকভাবে অসুস্থ এবং ভয়ঙ্কর অপরাধী। হাসপাতালের প্রধান রোমিও মিনেরার মতে, হাসপাতালের খুব কম সংখ্যক মানুষেরই মানসিক সমস্যা রয়েছে। অন্যদিকে মিনেরা বিশ্বাস করেন যে তারা চ্যারিটি কর্মী, যারা একটি প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য করছে। কিন্তু হাসপাতালটিতে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ নিষেধ। তবে আমরা কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার হয়ে সুপারিশ করিয়ে তবে হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারি। হাসপাতালের মূল বিভাগে ঢোকার পর তেমন অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করিনি। কিন্তু যতই সামনে এগোচ্ছিলাম ততই অস্বাভাবিক সব রোগীর দেখা পাচ্ছিলাম। একজন রোগী আমাকে বলছিল যে, আমি যেন তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাই। তবে সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা হলো, ৭০ জন রোগীর জন্য মাত্র দুজন নার্স কাজ করে। তাও আবার তাদের দিনের বেশিরভাগ সময়েই পাওয়া যায় না।
এই বিষয়টি নিয়ে যখন হাসপাতাল প্রধানের সঙ্গে আমাদের অনুবাদক কথা বলছিলেন তখন আমি একটি অন্ধকার ঘরের দিকে এগিয়ে যাই। সেখানে কঠিন লোহার বিছানায় শেকল দিয়ে বাধা অবস্থায় অনেককে দেখতে পাই। পরে জানতে পারলাম তাদের মল-মূত্র ত্যাগ করার জন্যও কোথাও নিয়ে যাওয়া হয় না। ওই লোহার বিছানাতেই তাদের সব প্রাকৃতিক কাজ সারতে হয়। হাসপাতালের সার্বিক মান নিয়ে যখন আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছিলাম তখন তারা জানায় যে, তারা বিশ্বে স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুযায়ী রোগীদের খুব কম মাত্রার ঘুমের ওষুধ দেয়া হয়। এছাড়াও কর্তৃপক্ষ দাবি করে যে তাদের হাসপাতালের সব নার্সই বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং তারা রোগীদের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে।
কিন্তু আমরা কর্তৃপক্ষের কথা বিশ্বাস করার চেয়ে নিজেদের চোখে সবকিছু দেখতে চাচ্ছিলাম। একটা পর্যায়ে জানতে পারলাম, রোগীদের অনেকেই হাসপাতালের গার্ডদের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হন। একজন নারী রোগী আমাকে জানায় যে, তাকে ঘুমের মধ্যে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর। তার ভাষায়, ‘আমাকে ক্রমাগত ঘুমের ওষুধ খেতে দেয়া হতো। এভাবে চলতে থাকায় আমি একটা সময় কিছুই আর মনে করতে পারতাম না। এমনকি শরীরের উপর দিয়ে কোনো অত্যাচার হলেও টের পেতাম না। রাতের আধারে গার্ডরা আমাকে ধর্ষণ করে এবং আমার পা গড়িয়ে রক্ত বের হচ্ছিল।’
এরকম আরও অনেক দুর্বিসহ ঘটনা ঘটে এই হাসপাতালে। রাষ্ট্র এবং সরকারের নাকের ডগায় বসে রোগীদের সঙ্গে এ ধরণের পাশবিক আচরণ চালিয়ে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীদের যত বেশিদিন হাসপাতালে রাখা যাবে ততই বাড়বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মুনাফা। আর যেহেতু এই হাসপাতালে অনেক অপরাধীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় তাই সরকারের তেমন কোনো নজরদারিও থাকে না হাসপাতালটির প্রতি। যার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে থাকে রোমিওর মতো কর্মচারীরা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন