বুক জ্বালা বাড়ে কেন?
বুক জ্বালা-পোড়া করা বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ মানুষেরই একটি কমন সমস্যা। সাধারণত খাবার খাওয়ার পর এ সমস্যাটি হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উপসর্গ হিসেবে বুক জ্বলে, চাপ চাপ লাগে।
সাধারণত কারি, ঝালমসলা ফ্রাই, বিরিয়ানি, রেজালা খেলে কি বুক জ্বলবে? এ প্রশ্নের উত্তর এতো সহজ নয়। বুকজ্বলা যাকে বলে ‘হার্টবার্ন’ ব্যাপারটি হার্ট বা হৃদযন্ত্রের কোনো সমস্যা নয়। বুক থেকে গলা পর্যন্ত জ্বলুনির মতো অস্বস্তি হল হার্টবার্ন।
পাকস্থলী ও খাদ্যনালি এ দুটোর সংযোগস্থলে রয়েছে একটি রন্ধ্রনিয়ন্ত্রক। পাকস্থলীর অম্ল যদি সেই রন্ধ্রনিয়ন্ত্রক দিয়ে গলিয়ে ওপর দিকে উঠে খাদ্যনালি বেয়ে উত্তেজিত করে তাহলে বুকজ্বলা হয়। কেন বুকজ্বালা হয় এবং এ ব্যপারে করণীয় কি? তা আলোচনা করা হলো-
চর্বিযুক্ত খাবার: প্রিয় খাবারগুলো যে একেবারে বাদ দিতে হবে, তা নয়। এদের ভিন্নভাবে রান্না করলে, বুকজ্বলা প্রশমিত থাকবে। কিছু খাবার তেলে না ভেজে, ছেঁকে, আগুনে ঝলসে, গ্রিল করে বা রোস্ট করে খাওয়া যায়। রান্নার রকম ফের ঘটিয়ে বুকজ্বলা কমানো যায়।
অম্লধর্মী খাবার: অম্ল খাবার, যেমন- টমেটো, টমেটো সস, সালসা, সাইট্রাস ফল, কমলালেবু, জাম্বুরা, গ্রেপফ্রুট খালি পেটে খেলে অনেক সময় ঢেঁকুর, বুকজ্বলা হয়।
ভিনেগার অম্লধর্মী, তবে এটি তো এমনি খাওয়া হয় না, সালাদ ড্রেসিং ও অন্যান্য ডিশে যোগ করা হয়। অম্লধর্মী খাবার এড়ালে ভালো। টমেটো, সাইট্রাস ফল ছাড়া তাজা ফল, সবজি আরও আছে। খেলেও খেতে হবে কম, ছোট টুকরা। টমেটো সস কম নেয়া হল, সঙ্গে স্প্যাগেটি, মাংস ও সবজি।
পানীয়: পানীয়র ব্যাপারেও সতর্কতা চাই। এর মধ্যে রয়েছে কফি, ক্যাফিনযুক্ত চা, কোলা, অন্যান্য কার্বনেটেড পানীয় এবং মদ। ক্যাফিনযুক্ত পানীয় পাকস্থলীতে অম্লরস ক্ষরণ উদ্দীপিত করে এবং মদ্যজাতীয় পানীয় খাদ্যনালির রন্ধ্রনিয়ন্ত্রককে শিথিল করে ঘটায় বুকজ্বলা এবং কোমল পানীয়র সোডা পেট ফাঁপায়, তা থেকে বুকজ্বলা।
বুকজ্বলা রোধ করতে হলে এমন সব পানীয় পছন্দ করুন, যেগুলো হিসহিসে, গ্যাসযুক্ত নয়, বিকল্প হল হার্বালটি, দুধ বা শুধু পানি। খাদ্যের সঙ্গে পানি পান করলে পাকস্থলীর অম্লরসও লঘু হবে; বুকজ্বলা কম হবে। টমেটো, কমলা বা লেবুর রস পরিহার করা ভালো।
চকলেট: চকলেটে রয়েছে ক্যাফিনের মতো উদ্দীপক এবং বুকজ্বলার জন্য ক্যাফিন দায়ী হতে পারে। চকলেট খাওয়া বাদ না দিতে পারলেও কম তো খাওয়া যেতেই পারে।
ঝালমসলা খাবার: ঝালমসলা খাবার, হট সস আনে বুকজ্বলা। তবে সব সময় হট ঝাল খাবারই নয়, পেপারমিল্ট শীতল ঝাল মোটেই নয়। খাদ্যনালির রন্ধ্রনিয়ন্ত্রককে শিথিল করে বুকজ্বলা ঘটায়। রসুন ও পেঁয়াজ ঝাল বা তেমন মসলা খাবার না হলেও বুকজ্বলা ঘটায়।
বুকজ্বলায় কমাতে যা করবেন
* আহারের পর চুইংগাম চিবানো ভালো। এতে লালাক্ষরণ বেশি হয়, পাকস্থলীর অম্লরস প্রশমিত হয়, পাকস্থলীর খাবার দ্রুত যেতে থাকে অন্ধ্রনলে।
* খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়বেন না। ডিনারের তিন ঘণ্টা পর শোয়া ভালো।
* ধূমপান করলে, স্থূলদেহ হলে বুকজ্বলা বেশি হয়। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ধূমপান বর্জন শ্রেয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন
কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন
জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন