বোরকা পড়ে প্রেমিকাকে মোবাইল দিতে, অতঃপর……

চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড়ে বোরকা পরা এক যুবকসহ দু’জনকে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকার জনগণ। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে ভোকেশনালের সামনে থেকে দুই যুবককে ধরে গণপিটুনি দেয়া হয়।
খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই যুবককে প্রাণে রক্ষা করতে গিয়ে নাজেহাল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। পরে দুই যুবকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নেয়া হয় সদর থানা কাস্টডিতে।
দুই যুবকের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সিনেমাহলপাড়ার আজমুল হক (২২) ছিলো বোরকা পরা অবস্থায়। তার সাথে ছিলো বেলগাছি তেতুলতলাপাড়ার সাগর। আজমুল হক সিনেমাহল পাড়ার মৃত আবু তাহেরের ছেলে। আর সাগরের পিতার নাম কামরুজ্জামান পান্নু।
ভোকেশনালপাড়ার একটি বাড়ির বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা শিশু সুমাইয়ার পা ধরে টেনে দ্রুত পালানোর পর ওদের ধাওয়া করে ধরে পিটুনি দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয়দের কেউ কেউ বললেও, হাসপাতাল সড়কে বহু ঘটনা ঘটানোর হোতা আজমুল হক বলেছে ভিন্ন কথা। সে বলেছে, প্রেমিকার সাথে ভোকেশনালপাড়ার মামুনের বিয়ে হয়েছে। কিছুদিন আগে কেড়ে নেয়া মোবাইলফোনটি ফেরত দিতে গেলে বোরকা পরার কারণে কয়েকজনের সাথে তর্ক হয়। এরপরই জনগণ ছুটে এসে মারধর করতে তাকে। সাগর পালিয়ে পিটুনি থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করে।
চুয়াডাঙ্গা যখন নানা গুজবে কাতর, নারী অপহরণের ভুয়া খবর বাতাসে ভাসছে তখনই বোরকা পরে দৌলাতদিয়াড় ভোকেশনালপাড়ায় গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়েছে আজমুল হক নামের চিহ্নিত যুবক। তার সাথে থাকা সাগর হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে। কাঠপাট্টিতে ছুতোর মিস্ত্রির কাজ করে।
সে বলেছে, ‘আজমুল বললো, চল মামা ঘুরে আসি। ওর সাথে ইজিবাইকযোগে দৌলাতদিয়াড়ে পৌঁছুনোর পর অন্ধকারে দাঁড়িয়ে বোরকা পরে। এরপরই কয়েকজন এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। শুরু হয় মারপিট। ’
ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন।
পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শিশুর পা ধরে টান দেয়ার সত্যতা মিলছে না। মূলত মোবাইলফোন ফেরত দেয়ার অজুহাতে প্রাক্তন প্রেমিকের সাথে দেখা করতে এসে ধরা পড়ে পিটুনির শিকার হওয়ার ঘটনাটিরই সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে। এরপরও আমরা সুষ্ঠতদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করবো।
পুলিশ বলছে, বখাটে আজমুল হকের সাথে দৌলাতদিয়াড় মাঝেরপাড়ার এক যুবতীর সাথে প্রেম সম্পর্ক ছিলো। কিছুদিন আগে দৌলাতদিয়াড় ভোকেশনালপাড়ায় প্রেমিকার বিয়ে হয়। যে ছেলের সাথে বিয়ে হয়, সেই ছেলেরও এক মেয়ের সাথে প্রেম সম্পর্ক ছিলো। বিয়ের খবর পেয়ে সেই প্রেমিকা হারদী কলেজ ছাত্রী, প্রেমিক মামুনের বাড়িতে গিয়ে ওঠে।
উত্তেজনা দানা বাধলেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। যখন গুজবে তটস্থ পরিবেশ তখন রাতে বোরকা পরা যুবক ধরার খবরে কৌতূহল জনতার বাধভাঙ্গা ভিড় জমে। এর মাঝে পুলিশ পৌঁছে দুজনকে আটক করতে গেলে পুলিশের নাকানি চুবানিই শুধু নয়, ধাক্কাধাক্কিও খেতে হয়।
শেষখবর পাওয়া পর্যন্ত মামলা হয়নি। পুলিশ বলেছে, তেমন কেউ বাদি হয়ে মামলা করেনি। ঘটনার গুরুত্ববুঝে প্রয়োজনে পুলিশই বাদি হয়ে মামলা রুজু করবে। তবে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

টানা ৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, হিট অ্যালার্ট জারি
টানা ৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বইছে চুয়াডাঙ্গায়। তাপদাহের কারণেবিস্তারিত পড়ুন

চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ল কৃষকের ছাগল ও ভুট্টা
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় অগ্নিকাণ্ডে আব্দুল আজিজ (৫০) নামে একবিস্তারিত পড়ুন

চুয়াডাঙ্গার সীমান্তে কোটি টাকার স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার সুলতানপুর বিজিবি টহলদল সীমান্তের পাকারাস্তাবিস্তারিত পড়ুন