বৌদ্ধ-মুসলমান সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টায় মিয়ানমারে কফি আনান

মিয়ানমারে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ এবং সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে কীভাবে সম্পর্কোন্নয়ন করা যায়, সে প্রচেষ্টা চালাতে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান এখন মিয়ানমার সফর করছেন। মিয়ানমারের নতুন সরকার রোহিঙ্গা-সম্পর্কিত যে নতুন কমিশন গঠন করেছে, আনান সেটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি তার এ সফরে কমিশনের সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। খবর বিবিসি এবং আনাদোলু নিউজ এজেন্সির।
কফি আনান এমন এক সময়ে মিয়ানমার সফর করছেন, যখন দেশটিতে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের কারণে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান তাদের ঘরবাড়ি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা অভিযোগ করছেন, রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করছে।
রাখাইন রাজ্যে সংঘাত কীভাবে বন্ধ করা যায় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ও সংখ্যালঘু মুসলমানদের মাঝে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য মিয়ানমার সরকারকে পরামর্শ দেবেন আনান।
সেখানকার নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখবেন তিনি। রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন আর নিপীড়ন দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেনাবাহিনীর এমন বর্বর আচরণের তীব্র প্রতিবাদ হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। এ পর্যন্ত ৮৬ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে সেনাবাহিনী। তবে বিভিন্ন সংস্থার দাবি, সেনাবাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত ৪১৭ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
মূলত মিয়ানমারের গনতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি’র আগ্রহে আনানকে এ কমিশনের প্রধান করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যের উপদেষ্টা কমিশনের প্রধান হিসেবে গত আগস্টে নিযুক্ত হয়েছিলেন নোবেল বিজয়ী কফি আনান। ওই রাজ্যের জটিলতা এবং ভঙ্গুর বিষয়গুলো নিয়ে উপযুক্ত সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করার কথা ওই কমিশনের। রাখাইন রাজ্যে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাস করে।
সোমবার কমিশনের সদস্য এবং মিয়ানমারের ইসলামিক সেন্টারের প্রধান আহ্বায়ক আই লুইন আনাদলু নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারে সফর করছেন কফি আনান।
আই লুইন আরো জানিয়েছেন, কফি আনান নাই পি এবং রাখাইন রাজ্যে সফর করবেন। কমিশনের প্রধান হিসেবে সেপ্টেম্বরে প্রথম রাখাইন রাজ্যে সফর করেছিলেন কফি আনান।
সোমবার রাখাইন রাজ্যের আঞ্চলিক সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কফি আনান বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় মাওংদাও শহরে যাবেন।
গত ছয় সপ্তাহ ধরে মাওংদাও এবং আরো বেশ কিছু গ্রামে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচার, হত্যা, ধর্ষণ, গণগ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
আনান মিয়ানমারের বৌদ্ধ এবং মুসলমানদের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরির চেষ্টা করবেন। তবে বাংলাদেশে অবস্থানরত জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মূল করতে চায়।
কফি আনান তার কাজে কতটা সফল হবেন- সেটি নিয়ে এরই মধ্যে অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা আনানের নেতৃত্ব দেয়া কমিশনকে পছন্দ করছে না। তারা এর আগে এ কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও জানিয়েছিল।
চার মাস আগে কফি আনানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করার কিছুদিন পরেই রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়। রোহিঙ্গা মুসলমানদের অভিযোগ, এবারের দমন-পীড়ন অতীতের যে কোনো মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে।
তবে মিয়ানমারের সরকার বলছে, কয়েকটি পুলিশ ক্যাম্পে হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিহত হওয়ার পরে তারা এ অভিযান চালাচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও অস্বীকার করছে সরকার।
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ব্যাপক অত্যাচার ও নিপীড়নের অভিযোগ সত্ত্বেও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’র নীরবতার কারণে অনেকে তার সমালোচনা করছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সবাইকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেবিস্তারিত পড়ুন

সংঘাতের মাঝেও তেহরানের বায়ুমান ঢাকার চেয়ে ভালো
সোমবার রাত থেকেই দফায় দফায় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।বিস্তারিত পড়ুন

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেবিস্তারিত পড়ুন