শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

শেষ ঠিকানা কোথায়, জানে না রোহিঙ্গারা

সবেমাত্র ১৭ মাস বয়স হয়েছে শিশু ফারজানার। মায়ের কোলে বসে নির্বাক চোখে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। ফারজানা জানে না সে এখন কোথায় আছে। তার তা জানার কথাও না। শুধু বোঝে মায়ের কোলই সবচেয়ে নিরাপদ। কিন্তু যেই মায়ের কোল পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ সেই মাই তো এখন সবচেয়ে অনিরাপদ। সবচেয়ে বিপদসঙ্কুল। পৃথিবী নামের এই বিশাল মায়ের কোলে ফারাজানা বা তার মা আয়েশার জন্য এতটুকু নিরাপদ ঠাঁই নেই।

আয়েশা আকতার (২৫)জানেন না তার শেষ ঠিকানা কোথায়? আয়েশার চোখের সামনে স্বামীকে ধরে নিয়ে খুন করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সর্বস্ব হারিয়ে দুই শিশু সন্তান ও বৃদ্ধ শ্বশুরকে নিয়ে জন্মভূমি ছেড়ে আয়েশা আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। তার মতো অনেক রোহিঙ্গা মুসলিমই জানে না তাদের ভবিষ্যত ঠিকানা কোথায় হবে?

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আয়েশা আকতার শোনালেন দেশ ত্যাগের পূর্ব মুহূর্তের লোমহর্ষক কাহিনী। গা শিউরে ওঠা সেসব ঘটনা আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়।

টেকনাফের ‘লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে’ এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় মিয়ানমার থেকে আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে। তাদের মধ্যে আয়েশাও ছিলেন। অঝোরে কাঁদছিলেন তিনি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আয়েশা বেগম বলেন, ‘প্রায় দেড় মাস ধরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর মিলিটারি নির্যাতন চালাচ্ছে। সেখানে খুন ও ধর্ষণ চলছে। মিলিটারি আসার খবর পেলে কোনো এক নির্জন জায়গায় লুকিয়ে থাকতাম। এভাবে কয়েকদিন পার করেছি। কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মিলিটারি ও তাদের দোসররা প্রথমে আমাদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। পরে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি সব ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’

আয়েশা বলেন, ‘আমার চোখের সামনে স্বামীকে ধরে নিয়ে খুন করেছে মিলিটারি। জ্বালিয়ে দিয়েছে ঘরবাড়ি। কোনমতে প্রাণে বেঁচে দুই শিশু সন্তান ও বৃদ্ধ শ্বশুরকে নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছি। এখন ঘরবাড়ি নেই, স্বামীও নেই। সন্তানদের নিয়ে কোথায় আশ্রয় নিব? আল্লাহর কাছে এই নির্যাতন ও হত্যার বিচার চাই’, এ কথা বলতে বলতে হুহু করে কেঁদে ওঠেন আয়েশা।

একই ক্যাম্পে অবস্থান করছেন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ছমুদা বেগম (৩৩)। সন্তান মোস্তাক (৯), আবদুর রহিম (৭) ও লায়লা বেগম (৪) সঙ্গে নিয়ে আরাকান থেকে পালিয়ে এসেছেন তিনি। আরাকানে তাদের জমি ভরা ফসল, গোয়াল ভরা গরু আর পুকুর ভরা মাছ ছিল। কিন্তু পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই আনতে পারেননি তারা। গত দুইদিন ধরে তিনিসহ ছেলে-মেয়েরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন।

ছমুদা বেগম বলেন, ‘খাইনি বা খেতে পাবো না, তা ভেবে কষ্ট পাচ্ছি না। কষ্ট পাচ্ছি সন্তানদের কথা ভেবে। নাফ নদী পার হওয়ার পর ঘাটের টাকা দিতে পারিনি। তাই ওরা আমার দুই সন্তানকে রেখে দিয়েছে। জনপ্রতি সাত হাজার টাকা (বার্মার মুদ্রানুসারে) দিতে হবে। তারপর ঘাটওলারা আমার সন্তানদের ফেরত দিবেন। টাকা কোথা থেকে দিবো?’

আতঙ্কিত কণ্ঠে সে জানায়, টাকা দিতে না পারলে ওরা আমার বাচ্চাদের পুনরায় মিয়ানমারে দিয়ে আসবে। সেখানে মিলিটারি তাদেরকে পেলে মেরেই ফেলবে।

এদিকে দীর্ঘ ১৫ দিন হেঁটে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং উংচিফ্রাং দিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেন নুর বেগম (২৪)। কোলে ছিল ৫ মাসের শিশুপুত্র জানে আলম। ১৫ দিন পানি আর লতাপাতা খেয়ে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মা নুর বেগম। দুধের শিশু জানে আলম অনাহার ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। শুক্রবার রাতে টেকনাফের লেদা ক্যাম্পে পৌঁছলেও শিশু জানে আলমকে বাঁচানো যায়নি। রাতেই শিশুটি চলে যায় না ফেরার দেশে। পরদিন শনিবার তাকে দাফন করা হয়।

সন্তানহারা মা নুর বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘চোখের সামনেই ২ শিশুপুত্র মো. হাশিম (৫) ও জাফর আলমকে (৩) পুড়িয়ে মেরেছে বার্মার সেনাবাহিনী। স্বামী জামাল হোসেনকে ২০ দিন আগে ধরে নিয়ে গেছে মিলিটারি ও সন্ত্রাসীরা। সে আর ফিরেনি। চোখের সামনেই অন্তত ৩০ জনেরও বেশি আপনজনকে হত্যা করতে দেখেছি।’

স্বামী, সন্তান আর স্বজন হারিয়ে নির্বাক-নিস্তব্ধ হয়ে পড়া নুর বেগম এর বেশি কিছু বলতে পারেনি।

কেবল নুর বেগম, আয়েশা বেগম অথবা ছমুদা বেগম নয়, এরকম হাজারো মায়ের অসংখ্য শিশু আজ পিতৃহারা, গৃহহারা, দেশছাড়া। সব হারিয়ে অনেকে সাগরে ভাসছেন। অনেক পালানোর অপেক্ষায় আছেন সীমান্তে। আবার অনেকে বাংলাদেশে এসে বন্দি হয়েছেন জেলখানায়। তবে যেসব শিশু বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে, কি হবে তাদের ভবিষ্যত? তারা যাবে কোথায়, কী খাবে? আদৌ কি তারা মানুষের মতো করে বেঁচে থাকার সুযোগ পাবে?- এমন বহু প্রশ্ন আজ সন্তানহারা রোহিঙ্গা মায়েদের।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

অবশেষে রাতে ঢাকায় ঝরছে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি

 টানা একমাস তীব্র তাবপ্রবাহের পর অবশেষে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ঝরছেবিস্তারিত পড়ুন

থাইল্যান্ড সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে মাইলফলক হয়ে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

থাইল্যান্ডে সরকারি সফর দুই দেশে ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের নতুন যুগ সূচনাবিস্তারিত পড়ুন

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন সাড়ে ১১টায় 

থাইল্যান্ড সফরের ফলাফল সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীরবিস্তারিত পড়ুন

  • গ্যাস নিঃসরণ কমাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে
  • দেশের দুই জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস
  • হবিগঞ্জে ট্রাক-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে ৫ জন নিহত
  • দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেন পাপ্পা গাজী
  • মে দিবস হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে শপথের দিন : জিএম কাদের
  • উত্তরায় ৮০ কোটি টাকা মূল্যের খাসজমি উদ্ধার
  • এমভি আবদুল্লাহ চট্টগ্রামের পথে 
  • প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরলেন 
  • কল-কারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী
  • ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনসহ সকল তেলের মূল্যবৃদ্ধি
  • মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রার পারদ উঠল ৪৩ ডিগ্রিতে
  • রাত ৮টার পর শপিং মল বন্ধের নির্দেশনা