ব্ল্যাক তাজমহল বা কালো তাজ; এক অমীমাংসীত রহস্য!
তাজমহল। মোঘল সম্রাট শাহজাহান আর বেগম মমতাজের অমর ভালবাসার নিদর্শন হিসেবে আজও পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে থাকা এক স্থাপত্যশিল্প।
তাজমহলের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়নি এরকম মানুষ বোধ হয় পৃথিবীতে নেই। কিন্ত তাজমহলের পেছনে লুকিয়ে থাকা অসম্পূর্ণ ইতিহাস অনেকরই অজানা।
তাজমহলের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে যমুনা নদী। যমুনা নদী তাজমহলের সৌন্দর্যকে যেন আরো বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে।
তাজমহলের পিছনে দাঁড়িয়ে যমুনা নদীর দিকে দেখলে মনে হবে যেন তাজমহল নির্মাণ অসম্পূর্ণ। আরো কিছু যেন বাকি রয়েছে।
এই বাকি থাক অংশটিকেই বলা হয়, “ব্ল্যাক তাজমহল” বা “কালা তাজ”। ইউরোপিয়ান পর্যটক জিয়ান ব্যাপ্টিস্ট টেভার্নার সর্বপ্রথম ১৬৬৫ সালে তার এক লেখায় “ব্ল্যাক তাজ” এর কথা উল্লেখ করেন।
তার মতে, তাজমহলের পিছনে যে ফাকা প্রান্তরটা আছে ওখানেই “ব্ল্যাক তাজ” তৈরী হওয়ার কথা ছিল।
পরবর্তীতে অনেক ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যবিদ জিয়ানের দাবিকে সমর্থন করেন। “ব্ল্যাক তাজ” বা “দ্বিতীয় তাজ” এর বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই।
কিন্ত, অনেক ঐতিহাসিক এবং স্থাপত্যবিদের মতে শাহজাহান “ব্ল্যাক তাজ” তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
তাজমহলের পেছন দিকে দাড়ালেই চোখে পড়ে একটা লম্বা টাওয়ার। বলা হয়ে থাকে, এটাই ব্ল্যাক তাজের মূল অংশ। এটাকে ঘিরেই ব্ল্যাক তাজ তৈরির কথা ছিল।
শাজাহানের ইচ্ছে ছিল, সাদা তাজমহলের মত যমুনার অপর পাড়ে আর একটা কাল তাজমহল বানানোর, যেটা তৈরী হবে কালো মার্বেল পাথরে। এই কালো তাজমহলেই চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার ইচ্ছা ছিল শাহজাহানের।
যমুনা নদীর ওপর দিয়ে একটা সেতু দুটো তাজকে যুক্ত করবে। হয়ত মৃত্যুর পরও মমতাজের পাশেই থাকতে চেয়েছিলেন।
যে জায়গায় সম্রাট কালো তাজমহল তৈরী করতে চেয়েছিলেন সেই জায়গায় এখনো স্তুপীকৃত কালো পাথর পড়ে আছে।
কিন্ত সম্রাটের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তার কালো তাজ নির্মাণের পথে বাধা হয়ে দাড়ান রাজপুত্র আওরঙ্গজেব।
শেষ বয়সে সম্রাট শাহজাহান আওরঙ্গজেবের হাতে বন্দী হন। আওরঙ্গজেব ব্ল্যাক তাজের পরিকল্পনাকে বাড়াবাড়ি রকমের রাজকোষের অর্থ পচয় হিসেবে দেখেছিলেন।
তাই আওরঙ্গজেব সিংহাসনে বসার পর সরাসরি ব্ল্যাক তাজের পরিকল্পনাকে বাতিল করে দেন।
মৃত্যুর পর সম্রাট শাহজানকে তাজমহলের একপাশেই কবর দেয়া হয়। তাজমহলে কেন্দ্রে রয়েছে বেগম মমতাজের কবর। মমতাজের আসল নাম ছিল আর্জুমান্দ বানু বেগম।
অনেকেই জানেন না এই তাজমহলের পূর্ব পাশে সম্রাট শাজাহানের শিরহিনডি বেগম নামের আরো এক স্ত্রীর কবর আছে।
অনেক ইতিহাসবিদ ব্ল্যাক তাজের এই পরিকল্পনার কথা নাকচ করে দিয়েছেন। অনেকেই এই ব্যাপারটাকে একটা মিথ হিসেবেই দেখেন।
তবে রহস্য থেকেই যায়। যদি ব্ল্যাক তাজ নির্মাণের কোন পরিকল্পনাই না নেয়া হয় তাহলে কেন সাদা তাজের পেছনর অংশকে অসম্পূর্ণ মনে হয়? কেনইবা সাদা তাজের পেছনে যমুনার অপর পাড়ে কালো পাথরের স্তূপ থাকবে?
তাজমহলের স্থাপত্যশৈলী, গঠন আর ইতিহাস চিন্তা করলে ব্ল্যাক তাজের পরিকল্পনাকে অস্বীকার করা যায় না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন