ভাঙাচোরা স্কুলঘর, শিক্ষকরা বেতন পান না ১৮ বছর
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের বাদামতলী আশ্রয়ণ প্রকল্পের হামিদুল হক প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নানা সমস্যায় জর্জরিত। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নেই, সুপেয় পানিরও অভাব। এছাড়া বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষকরা বেতন পান না দীর্ঘ ১৮ বছর।
জাতীয়করণের আশায় পাঠদান চালালেও আদৌ হবে কি না তা নিয়ে হতাশ শিক্ষক ও অভিভাবকরা। জীবনযাত্রার ঊর্ধ্বগতিতে বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বিদ্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের বাদামতলী আশ্রয়ণ প্রকল্পে হামিদুল হক প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ১৯৯৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর ৪ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকে টিনশেডের স্কুল ভবনটি অর্থাভাবে আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পাঠদান কার্যক্রম চালাতে কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও বিদ্যালয়ের আসবাবপত্রের চরম সংকট। চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চগুলো নড়বড়ে। শিক্ষার্থীদের জন্য নেই সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা। এমনকি নেই বিদ্যুৎ সংযোগও। অধিকাংশ শিক্ষার্থী আশ্রয়ণ প্রকল্পের হতদরিদ্র পরিবারের হলেও সরকারি উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিবি কুলসুম জানান, বৃষ্টি হলে পানি পড়ে বইপত্র ভিজে যায়। জোরে বাতাস শুরু হলে স্যারেরা আমাদেরকে ছুটি দিয়ে দেয়।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান, আশেপাশে কোনো বিদ্যালয় না থাকায় ছেলেমেয়েরা এই বিদ্যালয়ে পড়ে। শিক্ষকরা ভালো পড়ায়। কিন্তু বিদ্যালয়ের ভাঙাচোরা ঘর। স্কুলে টিউবওয়েল ও পায়খানা নেই।
এলাকাবাসী জানায়, দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের বাদামতলী আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানীয় উদ্যোক্তা হামিদুল হক ১৯৯৮ সালে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে জাতীয়করণ হয়নি বিদ্যালয়টি। গত তিন বছর পূর্বে ফেনী জেলা প্রশাসন বিদ্যালয়ের অনুকূলে ৩৫ শতক ভূমি লিখে দেন। বর্তমানে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সুপারিশে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ও সচিবালয়ে পাঠালেও কোনো অগ্রগতি নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জান্নাতুল মোকাম জানান, ১৮ বছর ধরে সম্পূর্ণ বিনাবেতনে এই বিদ্যালয়ে মাতৃত্বের টানে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করে আসছি। বিদ্যালয়ের নানাবিধ সমস্যার মাঝেও পাঠদান অব্যাহত রাখছি। জাতীয়করণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. শাহজাহান জানান, বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি। আশা করি সরকার সুদৃষ্টি দেবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারি নিয়মনীতি অনুসরণ করে এই বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের আশপাশে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এটি জাতীয়করণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁঞা জানান, আমি এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব। তাই সকলের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়টির সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন