ভারতীয় তরুণ কানাডার একদিনের প্রধানমন্ত্রী!
দেশে কোনো অনাচার-অনিয়ম দেখলে আমরা প্রায়ই বলে উঠি, ‘আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম, তবে দেখিয়ে দিতাম’। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হওয়া তো আর মুখের কথা নয়। কেউ চাইলেই তো আর প্রধানমন্ত্রী হতে পারে না।
তবে কানাডায় বসবাসরত ভারতীয় বংশোদ্ভুত এক তরুণ অবশ্য এ কথা বলতেই পারেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়া আসলেই মুখের কথা। কারণ তাঁর ক্ষেত্রে আদতেই এমনটি ঘটেছে।
প্রাভজোত লাখানপাল (১৯) নামের ওই তরুণ একদিনের জন্য হয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাঁর চেয়ারে বসে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি গোটা দিন পার করেছেন প্রাভজোত।
পরিবারসহ যখন সে কানাডার রাজধানী অটোয়ায় পৌঁছে তখন প্রাভজোতকে রীতিমতো রাজকীয় অভ্যর্থনা জানায় বিলাসবহুল শ্যাঁতো লরিয়র হোটেল। সেখানে তাঁর পরিবারের জন্য বন্দোবস্ত করা ছিল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুট। অবশ্য এটা ছিল প্রাভজোতের জন্য প্রথম চমক। এরপরে আরো চমক অপেক্ষা করছিল তাঁর জন্য।
হডজকিন’স লিম্ফোমা নামের এক ধরনের জটিল ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রাভজোত লাখানপাল। এই ধরনের ক্যান্সার আক্রান্তদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রাভজোত সুযোগ পেয়েছিলেন কানাডার ইচ্ছেপূরণ বা ‘মেক আ উইশ’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার। সাধারণত, কানাডায় মরণব্যাধিতে আক্রান্ত কিশোর-তরুণরা তাঁদের বিশেষ ইচ্ছে প্রকাশের সুযোগ পান। আর কর্মসূচির আয়োজকদের চেষ্টা থাকে সেই ইচ্ছে পূরণের।
মেক আ উইশ ফাউন্ডেশন কানাডার পক্ষ থেকে যখন তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় তাঁর ইচ্ছে সম্পর্কে তখন প্রাভজোত জানান,তিনি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের লক্ষ্য একজন রাজনীতিবিদ হওয়া। আমার জাতির নেতা হওয়া যেন আমি দেশের সেবা করতে পারি।’
মেক আ উইশ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রাভজোতের এই ইচ্ছের কথা যখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কানে পৌঁছে তখন তিনি এটি সত্যি করতে চেষ্টা করেন। তাঁর চেষ্টায় একদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভূমিকা পালন করেন প্রাভজোত। এমনকি প্রাভজোতের জন্য নিজের চেয়ারটিও ছেড়ে দেন ট্রুডো।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত বেশকিছু ছবিতে দেখা যায়, ট্রুডো জড়িয়ে ধরে সম্ভাষণ জানাচ্ছেন প্রাভজোতকে। এ ছাড়া প্রাভজোতের পরিবারের সঙ্গে ছবি তুলতেও দেখা যায় তাঁকে। এ ছাড়া দুজনে একসঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল ছবিও তোলেন তাঁরা।
শুধু প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই নয় পুরো পাঁচদিন রাজকীয়ভাবে পুরো পরিবারসহ অটোয়া সফর করেন প্রাভজোত। এর মধ্যে ছিল কানাডার পার্লামেন্ট ভবন পরিদর্শন, সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ, একটি শপথ অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মতো পূর্ণ মর্যাদার নিরাপত্তা পাওয়া।
১৯৮৮ সালে ভারতের পাঞ্জারের ছোট শহর মান্দি আহমেদগড় থেকে অভিবাসী হিসেবে কানাডায় চলে আসেন প্রাভজোত লাখানপালের বাবা ও দাদার পরিবার। প্রাভজোতের বাবা সুরিন্দার লাখানপালের রয়েছে একটি অটোমেকানিকের দোকান। আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগে প্রাভজোতের ক্যান্সার ধরা পড়ে। এর পর বিমর্ষ হয়ে পড়ে পুরো পরিবার। প্রাভজোত একদিনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় দীর্ঘদিন পর হাসি ফুটেছে পরিবারটির মুখে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন