ভালবাসার অনন্য নজির গড়েছেন ইনি। স্ত্রীর ধর্ষকের সন্তানকে দিয়েছেন পিতৃপরিচয়
‘‘পৃথিবীতে কিছু মানুষ অতীতকে নিয়ে বেঁচে থাকে, আমি বেছে নিয়েছি জীবনকে। এখন আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য আমার ছেলেটিকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলা।’’
মানুষটির নাম জেফ ক্রিস্টি। নেদারল্যান্ডের বাসন্দা। একটি অটোমেটিভ ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মরত। এই পর্যন্ত তাঁর পরিচয়ে বিশেষত্ব কিছু নেই। কিন্তু এঁর সাহসিকতা আর মানবিকতার পরিচয় পাবেন অন্য একটি তথ্য জানলে। ইনি নিজের স্ত্রী জেনিফার ক্রিস্টির গর্ভজাত এক ধর্ষকের সন্তানকে পিতৃপরিচয় প্রদান করেছেন।
জেফ আর জেনিফারের বিয়ে হয় ২১ বছর আগে। পরস্পরকে ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন দু’জনে। সুখেই কাটছিল জীবন। জেনিফার কর্মসূত্রে থাকতেন মূল শহরের বাইরে অরুবা নামক এক দ্বীপের একটি হোটেলে। সেখানেই একদিন রাত্রে এক অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষের হাতে ধর্ষিত হন জেনিফার। এই ঘটনার কয়েকমাস পরে ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা যায়, জেনিফার গর্ভবতী। সন্দেহ থাকে না, ধর্ষণের ফলেই গর্ভবতী হয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ বিবাহিত পুরষই হয়তো হতাশায় ক্ষোভে অবসাদে ভেঙে পড়তেন। কিন্তু জেফ অন্য ধাতুতে গড়া। তিনি অত্যন্ত সহজভাবে মেনে নেন স্ত্রী-এর গর্ভবতী হওয়ার খবর। স্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি প্রস্তুত হতে থাকেন পরিবারের আসন্ন সদস্যকে বরণ করে নেওয়ার জন্য।
নিজের এই ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতার কথা সম্প্রতি নিজের ব্লগে জানিয়েছেন জেফ। তিনি লিখেছেন, ‘‘জেনিফার যখন আমাকে প্রথম জানায় যে সে গর্ভবতী, তখন একবারের জন্যও আমার মনে হয়নি এটা কোনও সমস্যা। সন্তান তো ঈশ্বরের উপহার, তাকে অস্বীকার করব কেন! আমাদের ছেলে জন্মানোর পরেও আমি কোনওদিন তাকে অন্য কোনও কারও সন্তান বলে মনে করিনি। সেদিনের সেই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার কথা মনে পড়লে আজও খুব রাগ হয়। কিন্তু সেদিনের কথা মনে করে আমি মনকে ভারাক্রান্ত করতে চাই না। পৃথিবীতে কিছু মানুষ অতীতকে নিয়ে বেঁচে থাকে, আমি বেছে নিয়েছি জীবনকে। এখন আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য আমার ছেলেটিকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলা।’’
জেফ আর জেনিফারের বিবাহিত জীবনের বয়স হল ২১ বছর। কিন্তু জেফ জানিয়েছেন, সেই ১৫ বছর বয়সে জেনিফারকে যখন প্রথম দেখেছিলেন তখন যতটা ভালবাসতেন তাঁকে, এখনও ঠিক ততটাই ভালবাসেন। সেই ভালবাসার জোরেই দাম্পত্যজীবনের যাবতীয় ঝড়ঝাপটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি। লোকলজ্জা, সামাজিক সমালোচনা, প্রতিবেশীদের বক্রদৃষ্টি— সবকিছুকে তুচ্ছ করে তিনি বরণ করে নিয়েছেন জীবনকে। সেই জীবনের পথে তাঁর সহযাত্রী হয়েছেন স্ত্রী জেনিফার, আর দু’বছরের ছোট্ট সেই ছেলেটি, যে আজ জেফ-এর পিতৃপরিচয় নিয়েই বড় হচ্ছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন