মমতা সম্পর্কে কিছু তথ্য, যা আপনি হয়তো জানেন না
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে রাজনীতিতে কুত্সা, অপপ্রচারকে হাতিয়ার করেন অনেকেই। নানা প্রতিবাদ, প্রতিরোধ থাকেই। লড়াইটাই শেষ কথা। ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের ফল দেখে বলা যায়, এক এবং অনেক জন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা। বিরুদ্ধে সব বিরোধীশক্তির মিলন। এবং যাবতীয় আক্রমণ, ঝড় সামলে বিপুল জনাদেশ। শেষ হাসি মমতার। যাক, অনেক কুত্সা তো হলো। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কিছু না-জানা তথ্য জেনে নেওয়া যাক। তৃণমূল নেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের সেই তথ্যগুলি রইল পাঠকদের জন্য :
১. বিরোধীরা অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিগ্রি নাকি ভুয়া। আসল সত্যটি হলো, তৃণমূল কংগ্রেস প্রধানের একটি এমএ ডিগ্রি রয়েছে। এ ছাড়া তিনি এলএলবি-ও।
২. নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করা আমলা- সবাই ক্লান্ত। হাঁপাচ্ছেন। একজনের কোনো ক্লান্তি নেই। মাইলের পর মাইল হেঁটে চলেছেন। হাসিমুখে। রাস্তার দুই পাশে বিপুল সমর্থকের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন। বয়স্ক নারীকে জড়িয়ে ধরছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ ধরনের দৃশ্যের সঙ্গে পরিচিত রাজ্যসহ জাতীয় রাজনীতি। এই অফুরন্ত জীবনীশক্তির চাবিকাঠি কিন্তু কড়া ডায়েট। হ্যাঁ, ডায়েট সম্পর্কে মমতা যথেষ্ট সচেতন। তেল ও মশলা জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলেন তিনি। মুড়ি, চা ও চকোলেট- রোজকার ডায়েটে মাস্ট। আর প্রচুর পরিমাণে পানি। তবে তেলেভাজা ছোটবেলা থেকেই তাঁর খুব প্রিয়। তাই মাঝেমধ্যে আলুর চপ এড়াতে পারেন না।
৩. স্বাস্থ্য সম্পর্কেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদা সচেতন। এমনিতেই তিনি প্রচুর হাঁটেন। তাছাড়া বাড়িতে প্রতিদিন নিয়ম করে পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার ট্রেডমিলে হাঁটেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তো একদিনে টানা ১০ কিলোমিটারও হেঁটে ফেলেছেন অনায়াসে।
৪. জাতীয় রাজনীতিতে মমতার পোশাকও চর্চার বিষয়। মমতা ছাড়া ভারতের কোনো রাজনীতিবিদের পোশাক ওরকম নয়। সরু পাড়ের সুতির শাড়ি ও পায়ে সাদা হাওয়াই চটি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাড়ি ধনেখালির তাঁত। ওই শাড়ি ছাড়া তিনি অন্য কোনো শাড়ি কোনোদিন পরেন না।
৫. অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপনেই অভ্যস্ত তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। তাই একাধিক বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও কালীঘাটের টালির চালের একতলা বাড়িটি ছেড়ে চলে যাননি। বৃষ্টি হলে টালি নালার ধারে মমতার বাড়িতে এখনও জল ঢুকে যায়। বর্যাকালে প্রবল বৃষ্টিতে হাঁটু সমান পানি টপকে বাড়ি ঢুকতে হয়। যা দেখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী অবাক হয়েছিলেন। মমতার সাধারণ জীবনযাপনের ভূয়সী প্রশংসাও করেছিলেন বাজপেয়ী।
৬. প্রকৃতিকে বড় ভালোবাসেন মমতা। তাই বার বার চলে যান হিমালয়ে কিংবা জঙ্গলমহলে। ব্যস্ততা থেকেও সময় বের করে পাহাড়ে বা জঙ্গলে কাটিয়ে আসেন দিন কয়েক। নিজের ট্যাবে প্রকৃতির ছবিও তোলেন যথেষ্ট।
৭. প্রকৃতি ভালোবাসেন বলেই শহরকে সাজানোর নানাবিধ পরিকল্পনা নেন মুহূর্তে। একবার রাজারহাট বাইপাস হয়ে ফিরছিলেন মমতা। চোখে পড়ে রাজারহাটে একদিকে বিস্তীর্ণ জলাশয়। সঙ্গে সঙ্গে পুর ও নরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে নির্দেশ দেন, এই জলাশয়কে কেন্দ্র করে পার্ক তৈরি হোক। যার নির্যাস, সেন্ট্রাল পার্ক, ক্যাফে একান্তে ও একটি ট্যুরিস্ট রিসোর্ট।
৮. গানও খুব প্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সব ধরনের মিউজিক শোনেন তিনি। তাই ক্ষমতায় এসেই কলকাতার ট্র্যাফিক সিগন্যালগুলিতে চালু করে রবীন্দ্র সংগীত বাজানো। নজরুলের কবিতা ও গানও ভালোবাসেন মমতা। গানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা পেয়েছেন মায়ের কাছ থেকে। ছোটবেলায় মায়ের কাছে নানা বাংলা গান শুনতেন তিনি।
৯. ছেলেবেলার কথা মনে পড়লেই মমতার মনে পড়ে বীরভূমে মামাবাড়ির দিনগুলো। ধানক্ষেতের আল ধরে হেঁটে যাওয়া, ধানের শিষ দিয়ে পুতুল গড়া সেই স্মৃতি তৃণমূল নেত্রীর কাছে বড় মধুর।
১০. রাজনীতিতে আসার আগে একাধিক চাকরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকেই জানেন না, স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কিছুদিন কাজ করেছেন তিনি। অভাবের সংসার চালাতে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রাইভেট টিউটর, এমনকি সরকারি দুগ্ধকেন্দ্রে সেলসগার্ল হিসেবে কাজও করেছেন তিনি।
১১. রাজ্যের বহু প্রবীণ নেতা, যাঁরা একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাইড ছিলেন, তাঁরা এখন অনেকেই মমতার মন্ত্রিসভার সদস্য। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বলা হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় এখন মমতা সরকারের মন্ত্রী।
১২. রাজনীতি ছাড়া সাহিত্যচর্চাও করেন মমতা। অবসর সময়ে বই লেখেন। উপন্যাস, গল্প, কবিতা। এ ছাড়া তিনি ভালো আঁকেনও।
১৩. চটজলদি কবিতা লেখার প্রতিভা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলের স্লোগান, কথা সব তত্ক্ষণাত্ বলেন। আগে থেকে ঠিক করে রাখেন না।
১৪. গ্রাম বাংলার শিল্প ও সাহিত্য মমতার খুবই প্রিয়। কাউকে উপহার দিলে, গ্রাম বাংলার হস্তশিল্পই উপহার দেন। প্রত্যন্ত গ্রামের কোনো হস্তশিল্প পছন্দ হলে তা কিনে ফেলেন।নিজে যে ব্যাগটা ব্যবহার করেন, সেটাও বাংলার হস্তশিল্প।
১৫. প্রযুক্তিতেও পিছিয়ে নেই তিনি। অত্যাধুনিক গেজেট সম্পর্কে খোঁজ নেন নিয়মিত। ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করেন। ফেসবুক পেজে সব সময় আপডেট দেন পশ্চিমবঙ্গের এই বিপুল জনপ্রিয় নেত্রী।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে স্বৈরাচারী শাসক বললেন ট্রাম্প
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি ছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পবিস্তারিত পড়ুন

ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন

মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন