রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

মাতৃত্ব ভাড়া দেওয়ার সাইড এফেক্ট

বেঁচে থাকার জন্য মানুষ কত কী-ই না করে। বিশেষত আজকের পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষকে এমন জীবিকাও বেছে নিতে হয় যার থেকে মাতৃত্বও বাদ পড়ছে না৷ এখন তো অন্যের সন্তান নিজের গর্ভে ধারণ ও জন্ম দেওয়াও যে একটি পেশা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ৷ স্রেফ জীবিকার্জনের জন্য ‘ভাড়াটে মা’-র সন্ধান মিলেছে। চিরকালই যে কোনও পরিবারেই সন্তানহীনতা একটা সমস্যা ছিল৷ সেই সমস্যা মেটাতে চিকিৎসাবিজ্ঞান কাজ করছে ঠিকই ৷ তবে যে কোনও বিজ্ঞানের ফসলই শেষমেশ তো ব্যবসার নজরে পড়েই যায়৷ ফলে সন্তান ধারণেরর জন্য কোনও এক দম্পতি অন্য কোনও এক নারীর গর্ভ ভাড়া পেয়ে যান৷ তবে এমন ইচ্ছাপূরণে খরচা আছে ৷ যদিও শুধু খরচা নয় এমন ভাবে মাতৃত্ব ভাড়া দেওয়ার রীতি পরিবার তথা সমাজেও অন্য জটিলতার জন্ম দিচ্ছে ৷ যেটা তুলে ধরেছে ইছাপুর আলেয়া প্রযোজিত নাটক ‘অবিচ্ছেদ্য’৷

বিজ্ঞানের দান মানব সমাজের কাজে লাগবে যতই বলি না কেন তা তো সবক্ষেত্রে সত্য নয় ৷ চিকিৎসা বিজ্ঞানের আবিষ্কার অনেক রোগকেই নির্মূল করেছে কিন্তু সবাই তো সেই চিকিৎসা পায় না৷ তাই দারিদ্রের জন্য বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনা আজও ঘটে ৷ তেমনই নিঃসন্তান থাকার দুঃখ অনেক পরিবারে থাকলেও তা নিরাবণের ক্ষমতা শুধুমাত্র অবস্থাপন্ন দম্পতিদেরই থাকে ৷ এখানে নীল-মৌ শহরে বাস করা তেমন অবস্থাপন্ন এক পরিবার৷ অন্যদিকে লক্ষ্মী-কার্তিক গ্রামে বাস করা এক দরিদ্র পরিবার৷ কার্তিকের ঠিক মতো কোনও কাজ নেই ফলে একটিমাত্র সন্তান থাকলেও তাঁকে ঠিক মতো খাওয়াতে পারে না৷এদিকে সন্তান ধারণ করতে গিয়ে বারবারই ব্যর্থ হয়ে মানসিক ভাবে ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে মৌ৷ DRAMA-02এদের কষ্ট

লাঘব করতে এগিয়ে আসে পারিবারিক বন্ধু তথা ডাক্তার আাবির রায়৷ তিনি বোঝালেন সন্তান ধারণের জন্য কোনও এক নারীর গর্ভ ভাড়া নিলেই সমস্যা মিটে যাবে৷ আর সেই মতো খুঁজেও পাওয়া গেল লক্ষ্মীকে ৷ সে ও তার স্বামী বুঝল এমন কাজ করে দিলে যা টাকা মিলবে তাতে তাদের দারিদ্র ঘুচবে সন্তানকে খাইয়ে দাইয়ে স্কুলে পাঠাতে পারবে ৷ তবে একটা শর্ত তো ছিল তা হল এই নতুন সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর তাকে কখনও দেখতেই আসতে পারবে না লক্ষ্মী ৷
এটা ঠিক, অভিজ্ঞতাই যে জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা, তা অনুভব করছেন এই নাটকের শহুরে অবস্থাপন্ন দম্পতিরাও ৷ তাই সেই সন্তানকে তেমন শিক্ষাই দিতে চেয়েছেন যাতে সে সমাজের অপাংক্তেয় অনাথদের প্রতি সহানভূতিশীল হতে পারে ৷

যদিও অপরাধবোধ এবং সন্তান হারানোর আশংকায় ২৫ বছর ধরে ওই সন্তানকে তার জন্মের অতীত কাহিনি জানাতে পারেননি৷ তবে ঘটনা প্রবাহে প্রায় উন্মাদ অসুস্থ লক্ষ্মীর খবর বাড়িতে আসে৷ আর তখন অতীতের-কথা জানাতে গিয়ে তাদের দুজনকেই সন্তানের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়৷

এই নাটকে রচয়িতা সঙ্গীতা চৌধুরী অভিনয় করেছেন লক্ষ্মীর ভূমিকায় আর লক্ষ্মীর স্বামীর ভূমিকায় নির্দেশক শুভেন্দু মজুমদার৷ অন্যদিকে নীল ও মৌয়ের ভূমিকায় যথাক্রমে দীপক মিত্র ও এনা সেনগুপ্তের অভিনয় সাবলীল বলা চলে৷ তবে নাটকে বর্তমান থেকে ২৫ বছর পিছিয়ে ফ্ল্যাশ ব্যাকে যাওয়া হলেও এদের দু’জনের মেকআপে তেমন পরির্তন আনা হল না কেন ?

এদিকে পারিবারিক তেমন দায় নেই অথচ স্বামী স্ত্রী দুজনেই চাকুরী করে এখন এক দল মধ্যবিত্ত দম্পত্তি ক্রমশ উচ্চবিত্তে পরিণত হচ্ছেন৷ এই নাটকে সেই বিষয়ে একটা বার্তা রয়েছে বলে মনে হয়েছে ৷ মধ্যবিত্ত বাঙালি যারা নিজেদের সর্বহারা বলেই খুশি থাকতে চান গত দু-তিন দশকে তাদের আর্থিক অবস্থার একটা বড় পরিবর্তন এসেছে ৷ এটা ঠিকই এখন আর স্কুল কলেজের মাস্টারমশাইদের সে অর্থে সর্বহারা বলা চলে না৷ বরং অবস্থাপন্ন ঘর বোঝাতে অধ্যাপক দম্পতিদের দেখান হয়েছে ৷

এই নাটকে তেমন দম্পতিদের গাড়ি রয়েছে বলেও দেখান হয়েছে৷ অর্থাৎ এই তথাকথিত মধ্যবিত্তের সচেতন হওয়া দরকার তাদের আচরণ ক্রমশ শোষিত থেকে শোষক হওয়ার পথে৷ হওয়ার পথে এই কারণে বললাম এরা মধ্যবিত্ত নীতিবোধ একেবারে জলাঞ্জলি দিয়েছেন এটাও বলা ঠিক নয়৷ কারণ নাটকে আর্থিক বৈষম্য থাকা দুই পরিবারের মধ্যে যে লেনদেন বা চুক্তি হচ্ছে তা নিয়ে নীতিগত একটা প্রশ্ন থেকেই যায়৷ ফলে এমন লেনদেন এক কথায় মেনে নিয়েছিল শহুরে অবস্থাপন্ন অধ্যাপক দম্পতিরা তা নয় ৷ দ্বিধা একটা ছিল ঠিকই ৷ কিন্তু সন্তানের আকাঙ্ক্ষায় সেই দ্বিধা ঝেড়ে ফেলতেও দেরী করেননি এঁরা৷

তাই নিজেদের মধ্যে যুক্তি দেখিয়েছেন- বাবা-মা কাজে ব্যস্ত হলে জন্মের পর বাচ্চা দেখাশোনার জন্য আয়া ভাড়া করতে হয় তেমনই জন্মের আগে গর্ভ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে৷ তাছাড়া ওই দরিদ্র পরিবারে তো একটা শিশু সন্তান রয়েছে অর্থাৎ সন্তান হারানোর তেমন কষ্ট তাদের পেতে হবে না ৷ কিন্তু সব কিছু তো যেমন ভাবা হয় তেমন হয় না৷

এখানেও তেমন ঘটনাই ঘটল৷ শর্ত মেনে সেই সন্তান অন্যদের হাতে তুলে দিলেও মানসিক ভারসাম্য হারাল লক্ষ্মী৷ অর্থাৎ সন্তানের অভাবে মৌয়ের যা পরিণতি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছিল সন্তান হারিয়ে লক্ষ্মীর তেমনই দশা হল৷ লক্ষ্মীর এমন পরিণতি যে তাদের মধ্য অপরাধবোধ জাগিয়ে রেখেছে তা অবশ্যই মধ্যবিত্ত নীতির প্রভাব৷ আর ছেলের কাছে গোপন করলে অসুস্থ লক্ষ্মীর চরম পরিণতির কথা জানতে পেরে সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতালের জেনারেল বেড থেকে তাকে কেবিনে সরিয়ে আনতে দ্বিধা করেননি এই শহুরে মানুষ ৷ তবে অপরাধবোধ ও স্বার্থপরতা দোলাচলে থাকা এই শহুরে দম্পতি পুরো ঘটনার উত্তর খুঁজতে চেয়েছেন – লক্ষ্মীর এমন পরিণতি আসলে মাতৃত্ব ভাড়া দেওয়ারই সাইড এফেক্ট ৷

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন  

চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন

চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস

 শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন

  • স্বাধীনতার জন্য সিরাজুল আলম খান জীবন যৌবন উৎসর্গ করেছিল
  • ৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে সম্মাননা দিল ‘আমরা একাত্তর’
  • হাতিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
  • ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করলেন পুলিশ সদস্য
  • শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
  • চলে গেলেন হায়দার আকবর খান রনো
  • গফরগাঁওয়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক শামছুন নাহার
  • ‘ও আল্লাহ আমার ইকবালরে কই নিয়ে গেলা’
  • ভিক্ষুকে সয়লাভ নোয়াখালীর শহর
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
  • কান্না জড়িত কন্ঠে কুড়িগ্রামে পুলিশের ট্রেইনি কনস্টেবল
  • অজানা গল্পঃ গহীন অরণ্যে এক সংগ্রামী নারী