মানবতা: শামীম ও তার বন্ধুরা ! (ভিডিও)
মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় অযতœ-অবহেলায় রাস্তা ঘাটে পড়ে থাকা ঠিকানাহীন মানুষকে নিজ উদ্যোগে হাসপাতালে ভর্তির মাধ্যমে, সেবা শুশ্রুতার মাধ্যমে ভালো করে ও ঠিকানা খুজে বেড় করে স্ব স্ব বাড়ীর পৌঁছে দেয়ার অন্যান্য নজির স্থাপনকারী শামীম আহমেদ ও তার বন্ধুরা এবার মানিকগঞ্জের মানসিক ভারসাম্যহীন একটি মেয়ের পাশে দাড়িয়েছেন।
প্রকাশ, ঢাকাস্থ যমুনা ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার শামীম হোসেন গত ০২/০৮/২০১৬ ইং তারিখে পল্টনস্থ অফিস থেকে আদাবর বাসায় ফেরার পথে মানিকগঞ্জের জিকু নামের এক লোকের সাথে বাসে পরিচয় হয় এবং বিভিন্ন আলাপচারীতার মাধ্যমে লোকটির কাছ থেকে জানতে পারেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পুকুরিয়া এলাকার যাত্রী ছাউনীতে দুই বছর ধরে নাম পরিচয়হীন মানসিক ভারসাম্যহীন একটি মেয়ে অসহায় অবস্থায় দিনাদিপাত করছে। সংবাদটি শুনে শামীম আহমেদ তার বন্ধু যমুনা ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার আলী সাব্বিরের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে ঘটনাস্থলে তাদের একজন লোক পাঠিয়ে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। মেয়েটির অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর গত ১৯ আগষ্ট শামীম আহমেদ তার বন্ধু আলী সাব্বির, ডাঃ মোঃ শামীম হোসেনকে নিয়ে মানিকগঞ্জের ঘিওরে পুকুড়িয়ার এলাকার ছাত্রী ছাউনী কাছে এসে মেয়েটিকে দেখার পর তাকে উদ্ধার পূর্বক হাসপাতালে ভর্তির প্রক্রিয়ার বিষয়ে ঘিওর থানা কর্তৃপক্ষের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন করেন।
গত ২৭ আগষ্ট শামীম আহমেদ ও তার বন্ধুরা ঘিওর থানা কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দের উপস্থিতিতে ঢাকাস্থ শেরে বাংলা নগর জাতীয় মানিসক স্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটে ভর্তির উদ্দেশ্যে এম্বুলেন্সে করে মেয়েটিকে নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে এম্বুলেন্সের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগীতার হাত বাড়ান মানিকগঞ্জের পশ্চিম সাহিলী সমাজ কল্যান সংস্থা নামের একটি সংগঠন।
উল্লেখ্য, শামীম আহমেদ ও তার বন্ধুরা সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন ও অসহায় মানুষদের খুঁজে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে পরে ঠিকানা খুজে বেড় করে নিজ বাড়ীতে পৌঁছে দিয়ে মানবিক কাজের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন।
ইতিপূর্বে তারা ঢাকার পল্টন মোড় থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় একটি মেয়েকে উদ্ধার পূর্বক ‘আদুরী’ নামে হাসপাতালে ভর্তি করে তাকে সুস্থ করে তোলে ঠিকানা খুজে বেড় করে তার গ্রামের বাড়ী নোয়াখালী জেলার মাইজদীতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
এর আগে শামীম আহমেদ তার বন্ধুদের সাথে বান্দরবান জেলার থানচিতে ঘুরতে গিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন একটি মেয়েকে দেখতে পেয়ে পরবর্তীতে ঢাকাস্থ শেরে বাংলা নগর জাতীয় মানসিক হাসপাতালে ‘অন্তর’ নাম রেখে ভর্তি করিয়ে তাকে সেবা শুশ্রুতার জন্য বেতন দিয়ে জরিনা বেগম নামে একজন আয়া নিয়োজিত করেন। জরিনা বেগমের মাতৃস্নেহ ও সেবাযতেœ মেয়েটির মুখে একদিন কথা ফোটে। সেই কথার সূত্র ধরে ঠিকানা খুঁজে বের করে তার গ্রামের বাড়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মানবিক ও প্রতিবেদনটি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ তে প্রচার সহ শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিকগুলিতে প্রকাশিত হয়।
শামীম আহমেদ, আলী সাব্বির সহ তার বন্ধুরা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে মানবিক এ কাজটি পরিচালনা করে আসছেন। মানবতার এই মহৎ কাজে সরকারী বা বেসরকারী কোন সংস্থার সহযোগিতা পেলে মানবিক কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি পেয়ে রাস্তা ঘাটে অসহায় মানুষগুলি আরো বেশী সেবা পেয়ে বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হতো।
এক প্রশ্নের জবাবে শামীম আহমেদ বলেন, আমার লক্ষ্য হলো, ভবিষ্যতে মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা। যেখানে নাম পরিচয়হীন অসহায় মানুষেরা বিনামূলে চিকিৎসা পেয়ে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনে ফিরে আসবে।
https://youtu.be/3RAGO_V0o7w
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন