মাশরাফির এমন সিদ্ধান্ত আকরাম খানও জানতেন না
মাইকে যখন জাতীয় সংগীত বাজছিল বাংলাদেশের, ক্যামেরা বারবার ধরছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার মুখ। সাধারণত এটাই হয় যে, ক্যামেরা প্রথমেই ধরবে অধিনায়ককে। কিন্তু কেন বারবার? কারণ, একটু আগে টসের সময় বাংলাদেশের সীমিত ওভারের ক্রিকেটের অধিনায়ক বিদায় বলে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে। শ্রীলঙ্কায় চলমান দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটাই তাঁর শেষ সিরিজ।
মাশরাফি বিষয়টি এতই গোপন রেখেছিলেন, ফেসবুকে নিজের ওয়ালে এই ঘোষণা দেওয়ার পরই সবাই জানতে পারলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট কমিটির প্রধান আকরাম খান পর্যন্ত একটু বিস্মিত, ‘আমি তো ক্রিকইনফোর ধারাভাষ্য থেকে এটি জানলাম। ’ আকরাম হোটেল থেকে গাড়িতে মাঠে আসার পথে ইএসপিএনক্রিকইনফো থেকে এটি জানতে পারেন। এটি মাশরাফির শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ না শেষ সিরিজ, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত ছিলেন না আকরাম। পরে অবশ্য স্পষ্ট হয়েছে সবকিছুই।
টসের সময় ঘোষণা দিলেন, তারপর জিতলেন টস। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গাকে ধারাভাষ্যকার ডিন জোন্সের কাছে সঁপে দিয়েই ছুটলেন ড্রেসিংরুমের দিকে। কিন্তু সীমানা দড়ির কাছে তাঁকে থামতেই হলো। তাঁর অপেক্ষায় ছিলেন কোচিং স্টাফ। বুকে বুক মিলিয়ে বিদায়ী অভ্যর্থনা জানালেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, ব্যাটিং পরামর্শক থিলান সামারাবীরা, ম্যানেজার খালেদ মাহমুদসহ অন্যরা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আর দেখা যাবে না মাশরাফিকে। হয়তো ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে আরও কিছুদিন খেলবেন। তবে এর মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফি নামের এক গল্পের নটে গাছটা মুড়োলো। খেলেছেন বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেই। সেটি ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনায়, ২৮ নভেম্বর ২০০৬। ক্রিকেটের পৃথিবীতে টি-টোয়েন্টিই তখন সদ্য ভূমিষ্ঠ এক শিশু। ওটা ছিল সব মিলিয়ে নবম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।
তা প্রথম ম্যাচে খারাপ করেননি মাশরাফি। ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে ৩৬ রান করার পর বোলিংয়ে ৪ ওভারে ২৯ রান খরচায় নিয়েছিলেন ১ উইকেট। শাহরিয়ার নাফীসের অধিনায়কত্বে ম্যাচটি ৪৩ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
সেই মাশরাফির আজ ৫৩তম টি-টোয়েন্টি। এর আগের ৫১ ইনিংসে তাঁর শিকার ৩৯ উইকেট। আর ৩৭ ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে ১৩.৬২ গড়ে রান করেছেন ৩৬৮। সেরা বোলিং বেলফাস্টে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ রানে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। ৪ উইকেট শিকার ওই একবারই।
কেন টি-টোয়েন্টিকে আচমকা বিদায় বলে দিলেন মাশরাফি? বয়স হয়ে গেছে ৩৩। সবচেয়ে বড় কথা, ৭ বার অস্ত্রোপচারের ধকল সওয়া তাঁর দুই হাঁটু বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচের চাপ নিতে পারছিল না। শেষের একটা শুরু তো থাকেই। সবার আগে বিদায় বলে দিলেন টি-টোয়েন্টিকে। ২০০৯ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বোলিং মার্কে পড়ে গিয়ে সেই যে চোট পান, তারপর থেকেই টেস্ট তাঁর কাছে অতীত অধ্যায়। খেলছিলেন টি-টোয়েন্টি ও একদিনের আন্তর্জাতিক। টি-টোয়েন্টি গেল, রইল শুধু ওয়ানডে। সেটিকেও হয়তো বিদায় বলে দেবেন আচমকাই।
বিদায়ের সঙ্গে কখনো কখনো আগমনী সংগীত শোনা যায়। একজনের শেষ হয়, শুরু হয় আরেকজনের। টি-টোয়েন্টিকে মাশরাফির বিদায় বলার দিনে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হচ্ছে সাইফউদ্দিনের। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলা পেস বোলিং অলরাউন্ডারের মধ্যে একজন ‘থিসারা পেরেরাকে’ খুঁজতে চাইছে বাংলাদেশ। যে ক্রিকেটার পেস বোলিংয়ে উইকেট তুলতে পারবেন, আবার প্রয়োজনে শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে তুলতে পারবেন ঝড়। দেখা যাক সাইফ তাঁর অভিষেককে কতটা রাঙিয়ে রাখতে পারেন।
তবে নিশ্চিত, মাঠে নামার আগে ফেনীর ২০ বছর বয়সী তরুণের সঙ্গী হয়েছে অনুপ্রেরণাদায়ী অধিনায়ক মাশরাফির আশীর্বাদ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন