মুন্সীগঞ্জের সেই নিখোঁজ ছাত্রী হঠাৎ থানায় হাজির
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে একমাস ধরে নিখোঁজ এক কলেজ ছাত্রীর জঙ্গি সংযোগ নিয়ে মঙ্গলবার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে এ নিয়ে জেলায় কর্মরত সংবাদ কর্মী, প্রশাসন ও সাধারণ লোকজনের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। গত কয়েকদিন পূর্বে ওই ছাত্রী তার পরিবারের লোকজনকে ফোনে জানায়, সে পবিত্র স্থানে রয়েছে এবং ভালো আছে। তাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই। এর ভিত্তিতে সংবাদ মাধ্যমগুলো তার জঙ্গি সম্পৃক্ততার সংবাদ পরিবেশন করলে নড়ে চড়ে বসে শ্রীনগর থানা পুলিশ। শুরু হয় দৌড় ঝাপ। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটার দিকে ওই ছাত্রী সেচ্ছায় শ্রীনগর থানায় এসে হাজির হন এবং কেউ যেন হয়রানীর শিকার না হয় এজন্য একটি সাধারণ ডায়েরি করার কথা বলেন। পরিচয় পেয়ে থানা পুলিশ তাকে তাৎক্ষনিক আটক করে।
মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজ শ্রীনগর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নুরুন নাহার ইরার বাবা ইয়াকুব আলী ও মা শামীমা বেগম কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিকদের কাছে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তাদের মেয়ে বিদেশে জঙ্গি মিশনে যেতেই বাড়ি ছেড়েছে। ফোন কলের পর তাদের এ ধারণা আরও পোক্ত হয়। তাছাড়া নিখোঁজের কিছু দিন পূর্বে সে বাড়িতে ধর্মীয় বই আনা শুরু করে এবং হঠাৎ করে বোরখা পরা শুরু করে। গত ১৯ জুন নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। এর ২০ দিন পর গত ১০ জুলাই তার মা শামীমা আক্তার শ্রীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। থানায় জিডি করার পর পুলিশ তাদের বাসা থেকে দুটি ধর্মীয় বই উদ্ধার করে। সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) মো. সামসুজ্জামান বাবু জানান, এগুলো সাধারণ ধর্মীয় বই।
ইরার বাবা জানান, সমষপুর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০১৫ সালে এসএসসি পাস করে তার মেয়ে। এরপর শ্রীনগর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। কোন কারণ ছাড়াই তার মেয়ে হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায়। কলেজে যাওয়ার কথা বলেই ওই দিন বাড়ি থেকে বের হয়েছিল ইরা। এর পর আর ফেরেনি।
মঙ্গলবার ইরার পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া একটি ছবির সূত্র ধরে মাঠে নামে পুলিশ। ছবিতে দাড়ি ওয়ালা এক যুবকের সাথে ইরা ও তার আরও দুই বান্ধবী রয়েছে। ওই যুবকের সন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় তার নাম সিরাজুল ইসলাম নয়ন (৩৫)। সে পাবনার বর্জনাথপুর গ্রামের আ. হামিদের ছেলে। সিরাজুল ইসলাম বর্তমানে সমষপুর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ফজলুল হক হান্নুর মালিকানাধীন ঢাকার গুলশান-২ এর ৭২ নম্বর সড়কের ১৫ নং বাড়িতে অবস্থিত আহামেদ গ্রুপের কর্মকর্তা। তাকে ২০১৫ সালে ওই স্কুলের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। ওই বছর এএসসি পরীক্ষার পূর্বে সে ইরাসহ আরও কয়েকজনের গাইড হিসেবে তিনমাস নিযুক্ত ছিল।
মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে পুলিশ সিরাজুল ইসলামকে শ্রীনগর থানায় হাজির করার জন্য আহমেদ গ্রুপের কর্নধারকে অনুরোধ করলে সিরাজুল ইসলামকে ওই প্রতিষ্ঠানের একটি গাড়িতে করে তার কয়েকজন সহকর্মীসহ গুলশান থেকে শ্রীনগর পাঠানো হয়। এ খবরে ইরা সেচ্ছায় থানায় এসে হাজির হয় এবং তার জন্য অন্য কাউকে হয়রানী না করতে বলে।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাহিদুর রহমান জানান, ওই কলেজ ছাত্রী এই এক মাস কোথায় ছিল এ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
হঠাৎ বাস বন্ধ, বিপাকে যাত্রীরা
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট এলাকার বাসস্ট্যান্ড থেকে আজ সববিস্তারিত পড়ুন
স্বামীকে ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার গার্মেন্টস কর্মী
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় পদ্মার চরে এক গার্মেন্টস কর্মীকেবিস্তারিত পড়ুন
ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ভাই খুন
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের খাসের হাট এলাকার চাচাতো ভাইয়েরবিস্তারিত পড়ুন