মুসলিম বলেই কি পাশে বসেনি কেউ?
যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে নেকাব পরিহিত অবস্থায় বসে আছেন এক মুসলিম নারী।গোটা ট্রেনটি যাত্রীবোঝাই হলেও তার আশপাশে নেই কোন যাত্রী। আশপাশের সব আসন ফাঁকা পড়ে থাকলেও সবাই এড়িয়ে চলছেন মুসলিম নারীটিকে। একরকম একঘরে হয়ে থাকার মত অস্বস্তি বোধ করছিলেন ওই নারী। তবে হঠাৎ করে সব ভয় উড়িয়ে দিয়ে সে নারীর পাশে এসে বসেন দান্তে জেমি কয়েন নামের এক ব্যক্তি। সবার ঘৃণার মুখে যখন একাকীত্ব আর অস্বস্তি বোধ করছিলেন তখন অজানা এক ব্যক্তির সাহচর্যে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছিলেন ওই নারী। আর সেকারণেই হয়তো নামার সময় দান্তে জেমিকে তিনি বললেন-ধন্যবাদ।
গেল সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল অনলাইন। সেদিনের সে ঘটনা নিয়ে পরে ফেসবুকে দান্তে জেমির দেয়া একটি পোস্টের বরাতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকে নারীটির একা বসে থাকার একটি ছবিও প্রকাশ করেছেন দান্তে জেমি। এরইমধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়া ছবিটিতে লাইক পড়েছে ৪৪ হাজারেরও বেশি।
বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মুসলিমদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলোতে বিরাজ করছে ইসলামবিরোধী বিদ্বেষ বা ইসলামোফোবিয়া। আর সে ফোবিয়ার কারণে বিভিন্ন সময়ে হয়রানি কিংবা রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে মুসলিমদের। ‘মুসলিম মানেই সন্ত্রাসী’-এমন একটি ধারণা থেকে অনেকে এড়িয়ে চলতে চান তাদের। সম্প্রতি ঘড়িকে বোমা ভেবে যুক্তরাষ্ট্রের এক স্কুল থেকে এক মুসলিম কিশোরকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা হয় বিশ্বজুড়ে। আর চলতি মাসেই লন্ডনের একটি যাত্রীবাহী বাসে দুই মুসলিম নারীকে উদ্দেশ্য করে অপর এক সহযাত্রী নারীর বর্ণবাদী মন্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে সবশেষ যুক্তরাজ্যে ট্রেনে নেকাব পরিহিত নারীকে অন্যদের এড়িয়ে চলার খবর পাওয়া গেল।
ট্রেনে ঘটে যাওয়া ঘটনাটির উল্লেখ করে ফেসবুকে দান্তে জেমি বলেন, ‘আমাকে যারা চেনেন, তারা আমাকে সমর্থন করবেন আশা করি। আমি সব কিছু নিয়ে মজা করি। কিন্তু আমি কখনো কাউকে জেনেশুনে আঘাত করি না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাউকে অস্বস্তিতে ফেলি না। সকালে আমি একটি ট্রেনে চড়েছিলাম। ট্রেনে উঠে দেখি সবাই একরকম মনস্থির করে নিয়েছেন যে ওই নেকাব পরিহিত নারীর আশপাশের চয়টি আসনে কেউ বসবেন না। কিন্তু আমি জোর গলায় বললাম, আমি এখানে বসব এবং তাই করলাম। আমার আর ওই মুসলিম নারীর মধ্যে পুরো রাস্তায় কোন কথা হয়নি। কিন্তু তিনি যখন ট্রেন থেকে নেমে যাচ্ছিলেন তখন আমার দিকে ঘাড় ঘুরে তাকালেন এবং শান্তভাবে বললেন, ধন্যবাদ।
যেসব মানুষের মধ্যে মুসলিমভীতি রয়েছে তাদের উদ্দেশ্য করে দান্তে জেমি আরও লিখেছেন, ‘দয়া করে আপনারা সবাইকে একই মাপকাঠিতে বিবেচনা করবেন না।’
ডোন্টজাজ বাই দ্য বুকস কাভার নামে একটি হ্যাশট্যাগও চালু করেছেন তিনি। এ হ্যাশ ট্যাগটিও চার হাজারেরও বেশি শেয়ার হয়েছে বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল।
এদিকে দান্তে জেমির ফেসবুক পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ার পর ইসলামোফোবিয়ার শিকার আরও অনেক মুসলিমই শেয়ার করেছেন তাদের অভিজ্ঞতা। অনেকেই দান্তে তার ভূমিকার জন্য প্রশংসা জানিয়েছেন। দান্তে জেমির ফেসবুক পোস্টের নিচে দেয়া কমেন্টে এক নারী লিখেছেন, ‘যখন আমি হিজাব পরা শুরু করলাম তখন আমারও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে।’
একই ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার কথা জানিয়ে অপর এক নারী লিখেছেন, ‘কান্না ছাড়া আমি আর কিছু করতে পারছিলাম না। ওই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়লে অনুভূতি কেমন হয় সেটা আমি ভালো করেই জানি।’সুত্র: প্রিয়
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন